অ্যাপ-ক্যাবে সার্জ প্রাইস নিয়ে কিছুটা সুর নরম হয়েছে রাজ্যের।
অ্যাপ-ক্যাবে সার্জ প্রাইস নিয়ে কিছুটা যেন সুর নরম হল রাজ্য সরকারের।
বুধবার পরিবহণ দফতর এবং অ্যাপ-ক্যাব সংস্থা ওলা-উব্রের সঙ্গে বৈঠকের পরে স্থির হয়েছে, ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত সার্জ প্রাইস নিতে পারবে সংস্থাগুলি। ভাড়ার অতিরিক্ত টাকা (সার্জ প্রাইস) নেওয়া নিয়ে এর আগে আপত্তি তুলেছিল পরিবহণ দফতর। এ নিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছিল অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলিকে। পরিবহণ দফতরকে দেওয়া উত্তরে তারা জানিয়েছিল, সময় বিশেষে তিনগুণ পর্যন্ত অতিরিক্ত ভাড়াও নেওয়া হয়।
পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, বৈঠকে সার্জ প্রাইস নিয়ে দু’পক্ষের দর কষাকষি শুরু হয়। সরকারি কর্তারা ক্যাব সংস্থার প্রতিনিধিদের জানান, বড়জোর ৪০ শতাংশ সার্জ প্রাইস নেওয়া যাবে। কিন্তু তা মানতে চায়নি সংস্থাগুলি। তারা ৫০ শতাংশের নীচে নামতেই রাজি ছিল না। শেষমেশ ৪৫ শতাংশে রফা হয়।
পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, গত ১৫ জুন পাঠানো চিঠিতে মূলত ৪টি বিষয় জানতে চাওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে ছিল— অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলির ভাড়ার কাঠামো কী? কীসের ভিত্তিতে সার্জ প্রাইস ঠিক হয়? উৎসব-অনুষ্ঠান বা ঝড়-বৃষ্টির সময়ে গাড়ির চাহিদা এবং ভাড়ার কাঠামো কী ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়? আদায়কৃত ভাড়ার কতটা চালক বা মালিক পান, তা-ও নির্দিষ্ট ভাবে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তার উত্তরও দিয়েছিল সংস্থাগুলি।
সার্জ প্রাইস কখন কী হবে, তা নিয়ে এ দিনও নির্দিষ্ট রফাসূত্র বেরোয়নি। তবে পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সংস্থাগুলিকে বলা হয়েছে সোম থেকে শুক্রবারের মধ্যে সকাল আটটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত সার্জ প্রাইস যেন না নেওয়া হয়। মোট যাত্রী সংখ্যার ২৫ শতাংশের বেশি যেন সার্জ প্রাইস আওতায় না পড়েন, তাও বলা হয়েছে। কিন্তু সংস্থাগুলি এই প্রস্তাবে এখনও রাজি হয়নি বলেই খবর। সংস্থাগুলিকে যাত্রী ভাড়ার তথ্য নিয়মিত পরিবহণ দফতরে জমা দিতে বলা হয়েছে। তাতে রাজি সংস্থাগুলি।
পরিবহণ দফতরের একাংশ বলছেন, ক্যাবের বাড়তি ভাড়া নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই ক্ষোভ রয়েছে যাত্রীদের। এই প্রথম সরকার তাতে হস্তক্ষেপ করল। সে দিক থেকে এই বৈঠককে ক্যাবের ভা়ড়া নিয়ন্ত্রণে পরিবহণ দফতরের সক্রিয়তা বলেই দাবি করছেন তাঁরা। যদিও সরকারি সূত্রে এই দাবির পাল্টা যুক্তি দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হচ্ছে, সংস্থাগুলির মূল ভাড়ার কাঠামো সরকার নিয়ন্ত্রিত নয়। ফলে সার্জ প্রাইস কমাতে হলে মূল ভাড়ার কাঠামো পরিবর্তিত হতে পারে। হলুদ ট্যাক্সির প্রত্যাখ্যান ও দাপটের জেরে শহরে বহু মানুষই ক্যাবের উপরে নির্ভরশীল। ফলে মূল ভাড়া বৃদ্ধি হলে ঘুরপথে মানুষের উপরেই চাপ পড়বে। পরিবহণ দফতরের এক কর্তা অবশ্য বলছেন, মূল ভাড়ার বিষয়টিও তাঁদের মাথায় রয়েছে। বৈঠকেও আলোচিত হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবারের মধ্যে ক্যাবের মূল ভাড়ার কাঠামো পরিবহণ দফতরে জানাতে বলা হয়েছে সংস্থাগুলিকে।