বিমানবন্দরে নাইজেরিয় মহিলা।
নাটকীয়তা পিছু ছাড়ছে না নাইজিরীয় তরুণীর।
গত সোমবার সন্ধ্যায় মুম্বই থেকে কলকাতায় নামার পর থেকে তাঁকে নিয়ে নাস্তানাবুদ নার্কোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)-র অফিসারেরা। প্রথমত, সে দিনই ৩০ বছরের সেই তরুণী জানান, তিনি যোনিপথে কোকেন লুকিয়ে এনেছেন। সেই কোকেন বার করতে গিয়ে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। তাঁর ব্যাগ ও শরীর থেকে নিষিদ্ধ মাদক এলএসডি ব্লট এবং কোকেন পাওয়া গিয়েছে। মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে ছাড়ার পরে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বুধবার সকালে ওই তরুণীকে নিয়ে যাওয়া হয় বারাসত আদালতে। সেখানে মহিলাদের লকআপে রাখা হয় তাঁকে। পুলিশ জানায়, আচমকাই নিজের জামাকাপড় খুলে ফেলে বিবস্ত্র অবস্থায় বিজাতীয় ভাষায় চিৎকার জুড়ে দেন তরুণী। সেই লকআপে থাকা অন্য মহিলা, তাঁদের আত্মীয়, সামনে থাকা মহিলা পুলিশ ও আদালতের অন্য কর্মীরা হতভম্ব হয়ে যান। লকআপে একটি তালা ঝুলছিল। পুলিশ গিয়ে আরও একটি তালা ঝুলিয়ে দেয়। এনসিবি-র এক অফিসার গিয়ে নাইটি কিনে আনেন। জোর করে তা পরিয়ে দেওয়া হয় তরুণীকে। পরে বিচারক মহিতোষ দত্ত তাঁকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠান। তাঁকে আলিপুর মহিলা জেলে পাঠানো হয়েছে।
জেরায় পুলিশ জেনেছে, সোমবার কলকাতায় নেমে ধর্মতলার কাছে কোনও হোটেলে ওঠার কথা ছিল তরুণীর। সেখানেই, কলকাতা পুরসভার কাছে নামী রেস্তোরাঁর সামনে এক ব্যক্তির হাতে কোকেন এবং এলএসডি ব্লট তুলে দেওয়ার কথা ছিল। তবে কে সেই ব্যক্তি, তা জানা নেই বলে দাবি তরুণীর। এনসিবি সূত্রের খবর, যিনি তরুণীকে কলকাতায় পাঠিয়েছিলেন, তিনিই একমাত্র জানতেন কাকে তা দিতে হবে। ওই ব্যক্তির সঙ্গে তরুণীর সরাসরি যোগাযোগও ছিল না। মুম্বইয়ের ওই ব্যক্তি মোবাইলে ‘কনফারেন্স কল’-এর মাধ্যমে দু’জনকে কথা বলিয়ে দিতেন। তাতে দু’জন দু’জনের নম্বর জানতে পারতেন না।
সোমবার তরুণী শহরে নামার পরে তাঁর মোবাইলে মুম্বইয়ের একটি নম্বর থেকে অগুনতি ফোন এসেছে। মনে করা হচ্ছে, মাদক পাচারকারীই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছিলেন। মুম্বইয়ের এনসিবি-র কাছে ওই নম্বর পাঠানো হয়েছে। তরুণীর কাছে খুব বেশি নগদ টাকাও মেলেনি। মেলেনি ফেরার টিকিটও।