Calcutta News

ফিরহাদ মেয়র হচ্ছেন, ডেপুটি মেয়র অতীন, কাউন্সিলরদের বৈঠকে জানালেন মমতা

দুপুরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় জানান, ববি ও অতীন যে যথাক্রমে মেয়র ও ডেপুটি মেয়র হতে চলেছেন, তা তিনি সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে জেনেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৮ ১৭:৩০
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

কলকাতার নতুন মেয়র হচ্ছেন ফিরহাদ হাকিম। তাঁর সঙ্গে ডেপুটি মেয়রের দায়িত্ব সামলাবেন অতীন ঘোষ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ‘উত্তীর্ণ’য় পুরসভার কাউন্সিলরদের বৈঠকে ওই দু’জনের নাম পুর-দলের লিডার এবং ডেপুটি লিডার হিসাবে প্রস্তাব করা হয়। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তবে, প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ওই বৈঠকে আসেননি।

Advertisement

এ দিন সন্ধ্যায় দলনেত্রীর উপস্থিতিতে উত্তীর্ণ-য় বৈঠক বসে। শুরুতেই মমতা বলেন, “শোভন ইস্তফা দিতে চেয়েছিল। কারও সঙ্গে ঝগড়ার ব্যাপার নেই। চেষ্টা করেছিলাম ওঁকে আটকাতে। কিন্তু, পরশু দিন ইস্তফাপত্র দেয়। লিখেছে, বাধ্য হয়ে ইস্তফা দিচ্ছে। আমি তিন বার ফোনে কথাও বলি। ববিও (ফিরহাদ) কথা বলে। গৃহীত হয় ওর ইস্তফা। তখন আমাদের মনে হয়, কিছু দিনের জন্য ও কাজ করতে চাইছে না। তাই মেয়র পদ থেকেও ইস্তফা দিতে বলা হয়।’’ তিনি আরও জানান, পুরসভার কাজ তো এ ভাবে ফেলে রাখা যায় না। তাই দলের তরফে সব কাউন্সিলরদের ডেকে পাঠানো হয়। কিন্তু, শোভন কেন এলেন না? জবাবটাও মমতা দিয়েছেন, ‘‘হয়তো এই স্বল্প সময়ের মধ্যে যোগাযোগ করা যায়নি।’’

এর পরেই মমতা পুর-দলের লিডার এবং ডেপুটি লিডার পদের জন্য নাম প্রস্তাব করতে বলেন। লিডার হিসাবে সকলে ফিরহাদ এবং ডেপুটি লিডার পদের জন্য অতীনের নাম প্রস্তাব করেন। মমতা জানান, মেয়রের ইস্তফা গৃহীত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেয়র ইন কাউন্সিলেরও মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। তবে এখনই তা পাল্টানো হবে না। মেয়র নির্বাচন আইনি পদ্ধতি মেনেই হবে। ডেপুটি মেয়র যদিও মনোনয়নের মাধ্যমেই হয়। মমতার কথায়, ‘‘আমরা দলীয় ভাবে লিডার এবং ডেপুটি লিডারের নাম ঘোষণা করলাম। এর পর মেয়র নির্বাচনের মাধ্যমেই হবে। ডেপুটি মেয়র মনোনীত করা হবে। সেটা হতে ৭-১০ দিন সময় লাগবে।’’ তার পরেই মেয়র ইন কাউন্সিল বৈঠক করে ঠিক করবেন নতুন মেয়র এবং ডেপুটি মেয়র।

Advertisement

আরও পড়ুন- ববির ডেপুটি অতীন?​

আরও পড়ুন- বৈশাখীর অপমানই বড় ‘যন্ত্রণা’ শোভনের​

যত দিন না মেয়র হিসাবে নির্বাচিত হচ্ছেন ফিরহাদ, তত দিন যেন কোনও কাজ বন্ধ না হয়, তা নিয়েও বার্তা দিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘সবাইকে মন দিয়ে কাজ করতে হবে। ফাঁকি দেওয়ার কোনও জায়গা নেই। মানুষের দুটো চোখ নয়। মানুষের হাজারটা চোখ। কোথায় কী কাজ হচ্ছে, সবাই দেখে। কোনও অসুবিধা হলে আমাকে জানান।” তিনি আরও বলেন, ‘‘বিগত দিনে যে ভাবে কাজ হয়েছে, সে ভাবে আগামী দিনেও কাজ হবে। আপনারাই সরকারের মুখ। অনেক কাজ করেছেন। আগামী দিনেও করতে হবে। কয়েকটা জায়গায় জলের সমস্যা আছে। আরও যদি কোথাও সমস্যা থাকেল কাজ করতে হবে। আমি চাই না পুরসভার কাজ ব্যহত হোক। এই ক’দিন অফিসারেরা সবটা দেখে নেবেন।’’

পুর-দলের লিডার হিসাবে তাঁর নাম ঘোষণার পর ফিরহাদ হাকিম বলেন, “আমাদের সরকার আসার পরে উদ্যোগ নিয়ে কাজ হয়েছে। তবে এখনও কিছু সমস্যা রয়েছে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা চালিয়ে যাওয়াই আমার কাজ হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেই চ্যালেঞ্জ নিতে সাহস পাই।”

ফিরহাদ হাকিম যে হেতু পুরসভার কাউন্সিলর নন, তাই মেয়র পদে শপথ নেওয়ার ৬ মাসের মধ্যে তাঁকে কলকাতা পুরসভার কোনও একটি ওয়ার্ড থেকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হতে হবে। তার জন্য পুর আইন সংশোধনের লক্ষ্যে এ দিন রাজ্য বিধানসভায় একটি বিল পেশ করা হয়। সেই বিল পাশ হতেও দেরি হয়নি। এর পর সেটি রাজ্যপালের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে সূত্রের খবর। এর আগে এ দিন দুপুরে সাংবাদিক বৈঠকে প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় প্রস্তাব দেন, নতুন মেয়রকে ভোটে জিতিয়ে আনার জন্য তিনি কলকাতা পুরসভায় তাঁর আসন ১৩১ নম্বর ওয়ার্ড ছেড়ে দিতেও রাজি আছেন। তা ছাড়াও, নতুন মেয়র ভোটে দাঁড়াতে পারেন ১১৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। কাউন্সিলর শৈলেন দাশগুপ্তের মৃত্যুতে ওই ওয়ার্ডে উপনির্বাচন হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন