অব্যাহত: বাগড়ি মার্কেটের সামনে ডালা নিয়ে চলছে ব্যবসা। ছবি: রণজিৎ নন্দী
বাগড়ি আছে সেই বাগড়িতেই!
অগ্নিকাণ্ডের জেরে বন্ধ হয়ে যাওয়ার সাত মাস পরে বাগড়ি মার্কেট খুলতেই দেখা গেল, স্বস্থানে এবং স্বমহিমায় ফিরে এসেছে ‘ডালাতন্ত্র’। ওই বাজারের গেটের সামনেই রমরমিয়ে চলছে ডালা নিয়ে ব্যবসা। গত সেপ্টেম্বরে বাগড়ি মার্কেটে আগুন লাগার পরে ক্ষুব্ধ দমকলকর্মীরা জানিয়েছিলেন, প্রবেশপথের সামনে ব্যবসায়ীদের ডালা থাকায় ভিতরে ঢুকতে প্রবল অসুবিধায় পড়েছিলেন তাঁরা।
কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘দমকলের অনুমতি সাপেক্ষেই বাগড়ি মার্কেট আবার খোলা হয়েছে। তখনই বলা হয়েছিল, বাজারের ভিতরে অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা রাখার পাশাপাশি দমকলের যাতায়াতের পরিসরও রাখতে হবে। তাই প্রবেশপথ আটকে কোনও ভাবেই ডালা বসানো যাবে না। এবং এই ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাইকেই সচেষ্ট থাকতে হবে, যাতে নিয়ম কেউ না ভাঙেন।’’ মেয়র জানান, ব্যবসায়ীদের কথা ভেবেই আগুন লাগার প্রায় সাত মাস পরে বাজারটি খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
পুরকর্তারা জানিয়েছেন, প্রবেশপথের সামনে শুধু নয়, বাগড়ি মার্কেটের গা ঘেঁষেও কাউকে ডালা রাখার অনুমতি দেওয়া হবে না। শুধু তা-ই নয়, ওই বাজারের পাশে কেউ স্থায়ী কাঠামো নির্মাণ করতে পারবেন না এবং কোনও ভাবেই প্লাস্টিক ব্যবহার করা যাবে না।
কিন্তু বাস্তবে তা কেউ মানছেন কি?
শুক্রবার বাগড়ি মার্কেটে গিয়ে দেখা গেল, সব ক’টি প্রবেশপথের সামনেই ডালার ভিড়। এ দিন দুপুরে ই ব্লকের গেটের মুখেই তিন জন ডালা নিয়ে বসে পড়ায় যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছিল। ওই ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করতে তাঁরা অবশ্য ডালা সরিয়ে নেন। তার পরেই প্রবেশপথের মুখে ডালা ঠেকাতে বসানো হয় গার্ডরেল। ‘বাগড়ি মার্কেট সেন্ট্রাল কলকাতা ট্রেডার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি আশুতোষ সিংহ বলেন, ‘‘আপাতত বাগড়ির সব ক’টি গেটেই গার্ডরেল বসানো হয়েছে, যাতে ডালা নিয়ে কেউ একেবারে সামনে চলে না আসেন। তেমন কাউকে দেখলেই সঙ্গে সঙ্গে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’
স্থানীয় হকার ফৈয়াজ আলম বলেন, ‘‘আগে বাগড়ি মার্কেটের ই ব্লকের গেটের কাছেই বসতাম। অনেক দিন বসতে পারিনি। ফের বাজার খুলতেই এসে বসেছি। তার জন্য অবশ্য দমকল বা অন্য গাড়ির যাতায়াতের পথ আটকায়নি। প্লাস্টিকের আচ্ছাদনের বদলে ব্যবহার করছি ছাতা।’’ স্থানীয় কাউন্সিলর, বিজেপি-র সুনীতা জওহর বলেন, ‘‘এটা ঠিকই যে, ডালা রাখার ক্ষেত্রে সব নিয়ম ঠিকমতো মানা হচ্ছে না। এ ব্যাপারে আরও কিছু কড়া পদক্ষেপ প্রয়োজন। বিষয়টি নিয়ে আমি মেয়রের সঙ্গে আলোচনা করব। বাগড়ির ব্যবসায়ী এবং ডালা নিয়ে যাঁরা বসছেন, তাঁদের উভয়ের স্বার্থেই নিয়ম মানা প্রয়োজন।’’
গত সেপ্টেম্বরে বাগড়িতে আগুন লাগার পরে ডালার জন্য দমকলের গাড়ি ঘটনাস্থলে ঢুকতে পারেনি। তার পর থেকেই বাগড়ির সামনে থেকে ডালা সরানোর জন্য প্রশাসনের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশ যে স্রেফ কথার কথা হয়েই রয়ে গিয়েছে, বাগড়ি মার্কেটের সামনে গেলেই তা মালুম হবে।