চলছে কাজ। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।
পুরনো কলেজ স্ট্রিট বাজারের দোকানগুলিকে নিয়ে নতুন ভাবে গড়ে ওঠা বর্ণপরিচয় মার্কেটে পুনর্বাসন দেওয়ার কাজ শেষ হচ্ছে। পুরসভার বাজার দফতরের মেয়র পারিষদ আমিরুদ্দিন (ববি) বৃহস্পতিবার জানান, বর্ণপরিচয় মার্কেটের এ, বি ও সি ব্লকের সব দোকান তৈরি হয়ে গিয়েছে। প্রথম দু’টি ব্লকের দোকানগুলির চাবি আগেই পুরসভার হাতে এসেছে। বাকি ছিল সি ব্লকের ১২৭টি দোকান। দিন কয়েক আগে সেই কাজ সম্পূর্ণ হলে ওই দোকানগুলির চাবিও পুর-প্রশাসনের হাতে জমা দিয়েছে পিপিপি মডেলে গড়ে ওঠা বর্ণপরিচয় বাজার ডেভেলপার সংস্থা তথা প্রোমোটার বেঙ্গল শেল্টার। এ দিন পুরসভার বাজার দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে সি ব্লক দেখতে যান পুরসভার আর এক মেয়র পারিষদ তারক সিংহ।
২০০৪-এ সুব্রত মুখোপাধ্যায় মেয়র থাকাকালীন জীর্ণ কলেজ স্ট্রিট মার্কেট পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেন। তবে তার আগেই পুরবোর্ড হাতবদল হয়। বাম পুরবোর্ডে মেয়র বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের আমলে ২০০৬-এ কাজ শুরু হয়। বেঙ্গল শেল্টার সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করে পুরসভা। ১৮ মাসের মধ্যে কাজ সম্পূর্ণ করতে বলা হয়। ততদিন সমস্ত দোকানপাট পিছনে মার্কাস স্কোয়ারে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু ১৮ মাস তো দূরস্থান, গত এক দশকেও বর্ণপরিচয় (কলেজ স্ট্রিট মার্কেটের পরিবর্তিত নাম) না গড়ে ওঠায় সমস্যায় পড়েন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা আবার পুরসভার লাইসেন্স হোল্ডার। মাসে মাসে ভাড়া দিয়েই কলেজ স্ট্রিট মার্কেটে ব্যবসা করতেন। নিজেদের জায়গায় ফিরতে না
পেরে তাঁদের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, বেড়েছে ক্ষোভও। এ নিয়ে গত তৃণমূল বোর্ডেও বার বার দরবার করেছেন তাঁরা।
বৃহস্পতিবার তারক সিংহ জানান, ওই কাজ সময়ে না হলেও কয়েক বছর ধরে নির্মাণ সংস্থা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়ে অনেকটাই কাজ হয়েছে। এ ব্লকে ২৭২, বি ব্লকে ৪৮১ জনকে পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে আগেই। এখন সি ব্লকের কাজও সম্পূর্ণ। সেখানে মূলত লৌহ ব্যবসায়ীদের দোকান। শীঘ্রই তাঁদের হাতে চাবি তুলে দেওয়া হবে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। নির্মাণ সংস্থার পক্ষে বেঙ্গল শেল্টারের কর্ণধার সমর নাগ
বলেন, ‘‘পুরবাজারে থাকা দোকানগুলির পুনর্বাসন দেওয়ার কাজ শেষ। এ বার বাজারের অন্য কাজে হাত দেওয়া হবে।’’
তবে বর্ণপরিচয় মার্কেট এখনও নির্মীয়মাণ। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কথায়, বর্ণ পরিচয় নব কলেবরে না গড়ে উঠলে বাজারের শ্রী ফিরবে না। আগের চেয়ে বাজারের বেচাকেনা কমে গিয়েছে। অবস্থা ভাল নয় জল সরবরাহ ও নিকাশির। অভাব শৌচাগারেরও। মেয়র পারিষদ আমিরুদ্দিন (ববি) বলেন, ‘‘ওখানে জলের লাইন পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই দোকানগুলিতে তা সরবরাহের ব্যবস্থা হবে। শৌচাগারের সংখ্যাও বাড়ানো হচ্ছে। তিনি জানান, বর্ণপরিচয় মার্কেটের কাজের জন্য মদনমোহন বর্মণ স্ট্রিট বন্ধ রাখা হয়েছিল। সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ওই রাস্তা ঢালাইয়ের কাজ হবে। তার পরে মাস খানেকের মধ্যে রাস্তাটি খুলে দেওয়া হবে।