Barrackpore Court

জামিন নামঞ্জুর, জেল হেফাজত প্রিয়াঙ্কার

১০ বছর আগে গুলি করে খুন করা হয়েছিল জুনিয়রকে। ১১ বার জেরা করার পরে গত ৫ জানুয়ারি সিবিআই এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত প্রিয়াঙ্কাকে গ্রেফতার করে।

Advertisement

সুপ্রকাশ মণ্ডল

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:০৬
Share:

শুক্রবার ব্যারাকপুর আদালত চত্বরে প্রিয়াঙ্কা চৌধুরী। নিজস্ব চিত্র

জামিন হল না বেলঘরিয়ার সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার জুনিয়র মৃধাকে খুনে ধৃত প্রিয়াঙ্কা চৌধুরীর। দু’দফায় গত ১০ দিন সে সিবিআই হেফাজতে ছিল। দ্বিতীয় দফার মেয়াদ শেষে শুক্রবার তাকে ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হয়। প্রিয়াঙ্কার আইনজীবীরা তাঁদের মক্কেলের জামিনের জন্য দীর্ঘ সওয়াল করেন। সিবিআই এ দিন আর প্রিয়াঙ্কাকে হেফাজতে চায়নি। তবে তার জামিনের তীব্র বিরোধিতা করেন তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবীরা।

Advertisement

১০ বছর আগে গুলি করে খুন করা হয়েছিল জুনিয়রকে। ১১ বার জেরা করার পরে গত ৫ জানুয়ারি সিবিআই এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত প্রিয়াঙ্কাকে গ্রেফতার করে। প্রথম দফায় আদালত তাকে সাত দিনের জন্য সিবিআইয়ের হেফাজতে পাঠায়। সেই সময়ে জুনিয়রের মা-বাবার মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হয়েছিল প্রিয়াঙ্কাকে। জেরা করা হয় তার গাড়ির দুই চালককেও। প্রিয়াঙ্কার ঘনিষ্ঠ এক যুবককেও টানা জেরা করেন তদন্তকারীরা। প্রসঙ্গত, জুনিয়র খুন হওয়ার দিন ওই যুবককে ২৪০ বার ফোন করেছিল প্রিয়াঙ্কা।

তিন দিন আগে দ্বিতীয় দফায় আদালতে তোলার পরে তার জামিনের জন্য জোরদার সওয়াল করেন প্রিয়াঙ্কার আইনজীবীরা। দীর্ঘ সওয়ালের পরেও জামিন মঞ্জুর করেননি বিচারক। তিন দিনের জন্য অভিযুক্তকে ফের পাঠানো হয় সিবিআই হেফাজতে। সে দিনই বিচারক বলেছিলেন, যদি প্রিয়াঙ্কাকে জেরা করে সিবিআই উল্লেখযোগ্য কিছু না পায়, সে ক্ষেত্রে আদালত অন্য কিছু ভাববে। ফলে এ দিন আদালতে কী হয়, তা নিয়ে কৌতূহল ছিল।

Advertisement

এ দিন দুপুরে প্রিয়াঙ্কার মামলা ওঠার পরেই তার জামিনের জন্য জোর সওয়াল করেন তার আইনজীবীরা। সিবিআই জানায়, তাদের আর প্রিয়াঙ্কাকে জেরা করার প্রয়োজন নেই। ভবিষ্যতে ফের জেরা করার দরকার হতে পারে। তবে তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবীরা প্রিয়াঙ্কার জামিনের তীব্র বিরোধিতা করেন। তাঁদের যুক্তি ছিল, প্রিয়াঙ্কা প্রভাবশালী। জামিন পেলে তিনি মামলার সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারেন। তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করতে পারেন। আদালত যেন তাকে জামিন না দেয়। তা হলে মামলায় এর প্রভাব পড়বে। কারণ, এই মামলাটি অনেক পুরনো। তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করা যথেষ্ট কঠিন। মামলার অন্যতম অভিযুক্ত জামিন পেলে তদন্তের কাজ ব্যাহত হবে।

প্রিয়াঙ্কার আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী বলেন, “আমরা বিচারককে জানিয়েছিলাম, আমার মক্কেল এর আগে ১১ বার জেরার মুখোমুখি হয়েছেন। তদন্তকারী অফিসার যখন ডেকেছেন, তখনই হাজির হয়েছেন। তদন্তে সব রকম সাহায্য করছেন। গত ১০ বছর ধরে তিনি কখনও তদন্তে অসহযোগিতা করেননি। এর আগে সিআইডি যখন তদন্ত করেছে, তখন তাদেরও সব রকম সহযোগিতা করেছেন তিনি। ফলে যে কোনও শর্তে তাঁর জামিন মঞ্জুর করা হোক।”

দু’পক্ষের দীর্ঘ সওয়ালের পরে সঙ্গে সঙ্গে কোনও নির্দেশ দেননি বিচারক। আগের দিনের মতো জানান, সব মামলার শেষে নির্দেশ দেওয়া হবে। সন্ধ্যায় প্রিয়াঙ্কাকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। আগের দিন নির্দেশ শোনার পরে আদালত থেকে বেরোনোর সময়ে প্রিয়াঙ্কার বিশেষ হেলদোল দেখা যায়নি। তবে এ দিন আদালত থেকে বেরিয়ে প্রিজ়ন ভ্যানে ওঠার সময়ে যথেষ্ট বিধ্বস্ত দেখাচ্ছিল তাকে। প্রিয়াঙ্কার আইনজীবী বলেন, “আদালতের নির্দেশের কপি পাওয়ার পরে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব। উচ্চ আদালতে যাওয়ার সম্ভাবনা তো রয়েছেই।’’ আদালত থেকে বেরোনোর সময়ে প্রিয়াঙ্কাও বলে, ‘‘উচ্চ আদালতে নিশ্চয়ই যাব। কারণ, আমি নির্দোষ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন