আট ঘণ্টা নড়ানোই গেল না বাস্কুল সেতু

পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার রাত ২টো নাগাদ জাহাজ ঢোকানোর জন্য সেতুটিকে তোলা হয়েছিল। জাহাজটি ঢুকে যাওয়ার পরে রাত আড়াইটে নাগাদ সেটি নামানোর কথা ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৭ ০২:৪০
Share:

বিপত্তি: এমন ভাবেই রাতভর খোলা ছিল সেতু। — নিজস্ব চিত্র

সাতসকালে বন্দর এলাকার সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোড দিয়ে যেতে দিয়ে তাজ্জব বনে গিয়েছিলেন বছর তিরিশের সুপ্রতিম তালুকদার। দেখলেন, গঙ্গার উপরে থাকা সেতু উপরে উঠে গিয়েছে। ট্র্যাফিক পুলিশ রাস্তা বন্ধ করে গাড়ি ঘুরিয়ে দিচ্ছে অন্য পথে।

Advertisement

কোনও দুর্ঘটনা বা প্রাকৃতিক বিপর্যয় নয়। পুলিশ সূত্রের খবর, যান্ত্রিক ত্রুটির জেরেই এমন বিপত্তি হয়েছিল সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোডের বাস্কুল সেতুতে। তার ফলে বন্দর এলাকার ওই ব্যস্ত রাস্তায় রবিবার সারা রাত তো বটেই, এমনকী সোমবার ভোর থেকে দীর্ঘ ক্ষণ যান চলাচল বন্ধ রাখতে হয়েছিল। সমস্ত গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়ায় বন্দর এলাকার অন্য রাস্তাগুলিতেও গাড়ির চাপ বেড়েছিল। শেষমেশ বন্দর কর্তৃপক্ষ ত্রুটি সারিয়ে সেতুটিকে নামিয়ে আনতে সমর্থ হন। সকাল দশটা নাগাদ গা়ড়ি চলাচল শুরু হয় ওই রাস্তায়।

বন্দর সূত্রের খবর, খিদিরপুর ডকে জাহাজ ঢোকা-বেরোনোর জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি করা হয়েছে ২০২ ফুট লম্বা এবং ৪১ ফুট চওড়া এই অতিকায় সেতুটি। জাহাজ ঢোকার সময়ে সেটিকে তুলে দেওয়া হয়। জাহাজ ঢুকে গেলে নামিয়ে আনা হয়। কন্ট্রোল রুম থেকে পুরো কাজটি করা হয় মেকানিক্যাল গিয়ারের মাধ্যমে। এই ধরনের সেতু দেশে আর দু’টি আছে। একটি মুম্বই বন্দরে, অন্যটি রামেশ্বরমে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার রাত ২টো নাগাদ জাহাজ ঢোকানোর জন্য সেতুটিকে তোলা হয়েছিল। জাহাজটি ঢুকে যাওয়ার পরে রাত আড়াইটে নাগাদ সেটি নামানোর কথা ছিল। তখনই দেখা যায়, কন্ট্রোল সিস্টেম কাজ করছে না। তার ফলে ব্রিজটি এক চুলও নড়ানো যায়নি। এই বিপত্তি তৈরি হতেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোড। বন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, ব্রিজটি তোলার পরেই কোনও ভাবে কন্ট্রোল সিস্টেমে শর্ট সার্কিট হওয়ায় এই বিপত্তি।

বন্দর কর্তৃপক্ষ জানান, ব্রিজটি আদতে দু’টি পাতার মতো। প্রযুক্তির ভাষায় এমন ব্রিজকে ‘স্কার্জার’ বলা হয়। অস্ট্রিয়ার ওয়াগনার বিরো ব্রিজ সিস্টেম নামে একটি সংস্থা বাস্কুল সেতুটির নকশা এবং নির্মাণ করেছিল। ১৯৬৬-র ১৫ নভেম্বর এটি উদ্বোধন হয়। এক সময়ে দিন-রাত ব্রিজটি তুলে-নামিয়ে জাহাজ চলাচল করা হতো। কিন্তু এখন গাড়ির চাপের কথা ভেবে রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টের মধ্যে এই সেতু তোলা-নামানো হয়।

বন্দর সূত্রের খবর, দীর্ঘ ব্যবহারের ফলে বাস্কুল সেতুটির মেরামতির প্রয়োজন হয়েছে। অস্ট্রিয়ার সংস্থাটির সাহায্য নিয়ে সেটি মেরামতির কথা ভাবা হচ্ছে। এই কাজে প্রায় ২৫ কোটি টাকা খরচ হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন