ব্যাটারিচালিত বাস। —নিজস্ব চিত্র।
পথে নামতে চলেছে রাজ্য পরিবহণ নিগমের বাতানুকূল ব্যাটারিচালিত বাস। পরিবহণ নিগম সূত্রের খবর, অগস্ট মাসেই রাস্তায় নামতে পারে বাসগুলি। প্রথম ধাপে ৮০টি বাস নামার কথা। পরে বাসের সংখ্যা বাড়তে পারে। টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ওই বাসগুলি সরবরাহের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে টাটা মোটর্সকে।
বাতানুকূল বাসগুলিতে জিপিএস, সিসি ক্যামেরা, পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম-সহ যাবতীয় আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকবে। ৪০টি ৯ মিটার দৈর্ঘ্যের এবং ৪০টি ১২ মিটার দৈর্ঘ্যের বাসের বরাত দেওয়া হয়েছে। ৯ মিটার দৈর্ঘ্যের প্রতিটি বাসের দাম পড়ছে ৭৫ লক্ষ টাকা এবং ১২ মিটার দৈর্ঘ্যের প্রতিটি বাসের দাম পড়ছে ৮৮ লক্ষ টাকা। সেগুলিতে যথাক্রমে গড়ে ৪০ এবং ৫০ জন যাত্রীর বসার ব্যবস্থা থাকবে। তবে দু’রকমের বাসেই যাত্রীদের দাঁড়ানোর জন্য পর্যাপ্ত জায়গা থাকবে।
শহরের বিভিন্ন রুটে ওই বাস পরিষেবা চালুর আগে আগামী মাস দুয়েকের মধ্যে দ্রুত প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরির কাজ শেষ করে ফেলতে চায় পরিবহণ নিগম। রাজ্য পরিবহণ নিগমের কর্তাদের দাবি, সফল ভাবে ইলেকট্রিক বাস পরিষেবা চালানোর অন্যতম প্রধান শর্ত নির্দিষ্ট দূরত্বে পর্যাপ্ত সংখ্যক চার্জিং স্টেশন তৈরি করা। সে কথা মাথায় রেখেই শহর কলকাতার ৮টি ডিপো এবং ৪টি টার্মিনাল মিলিয়ে মোট ১২টি জায়গায় ৮০টি চার্জিং স্টেশন তৈরি করা হচ্ছে।
পরিবহণ নিগম সূত্রের খবর, এক একটি চার্জিং স্টেশন তৈরিতে খরচ পড়বে গড়ে ১৫ লক্ষ টাকা করে। এর মধ্যে ৬০টি সাধারণ চার্জিং স্টেশন এবং ২০টি দ্রুত চার্জিং স্টেশন। সাধারণ চার্জিং স্টেশনগুলিতে একটি বাসের চার্জিং সম্পূর্ণ হতে প্রায় ৬ ঘণ্টা লাগবে। তবে দ্রুত চার্জিং স্টেশনগুলির ক্ষেত্রে লাগবে মাত্র দেড় ঘণ্টা। চার্জিং স্টেশনগুলিতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের জোগান রাখতে সিইএসসি এবং রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করছে রাজ্য পরিবহণ নিগম।
কোনও বাসের চার্জ ফুরিয়ে গেলে দ্রুত চার্জিং স্টেশনগুলিকে বিশেষ প্রয়োজনে ব্যবহার করার জন্য তৈরি রাখা হবে। কিছু বৈদ্যুতিক বাণিজ্যিক গাড়িকেও ওই চার্জিং স্টেশনগুলি ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হবে বলে পরিবহণ নিগম সূত্রের খবর। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত ব্যবহারকারীদের থেকে বিদ্যুতের খরচ বাবদ ন্যূনতম অর্থ আদায় করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
রাজ্য পরিবহণ নিগমের এমডি নারায়ণস্বরূপ নিগম জানান, এক বার চার্জ করলে বাসগুলি ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত পথ যেতে পারবে। শুরুতে শহরের মধ্যে ওই বাস চলবে। পরে পরিকল্পনায় সাফল্য এলে পরিষেবা বাড়ানো হবে।