Councillor

সৌন্দর্যায়ন নিয়ে আপত্তি মন্ত্রীর, ক্ষুব্ধ কাউন্সিলর

এলাকায় সৌন্দর্যায়নের কাজে বাধা দিচ্ছেন বিধায়ক তথা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে। পুরসভায় লিখিত ভাবে এমনই অভিযোগ করেছেন কাঁকুড়গাছি এলাকায় পুরসভার স্থানীয় কাউন্সিলর, তৃণমূল কংগ্রেসের সুনন্দা গুহ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৮ ০২:২৭
Share:

সাধন পাণ্ডে।

তাঁর এলাকায় সৌন্দর্যায়নের কাজে বাধা দিচ্ছেন বিধায়ক তথা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে। পুরসভায় লিখিত ভাবে এমনই অভিযোগ করেছেন কাঁকুড়গাছি এলাকায় পুরসভার স্থানীয় কাউন্সিলর, তৃণমূল কংগ্রেসের সুনন্দা গুহ। যা শুনে সাধনবাবুর জবাব, ‘‘কাউন্সিলরেরা নিজেদের ইচ্ছেমতো যেখানে খুশি ‘ওয়াল অব ফেম’ বানিয়ে ফেলবেন, এটা মানা যায় না।’’ বিষয়টি মেয়রের কানেও গিয়েছে। বুধবার পুরসভার ডিজি (সিভিল)-কে কাঠামোটি পরিদর্শনের জন্য পাঠান তিনি। সন্ধ্যায় ডিজি পান্থকুমার দুয়া বলেন, ‘‘এ বিষয়ে রিপোর্ট তৈরি করছি।’’

Advertisement

বিতর্ক কী নিয়ে?

সম্প্রতি কাঁকুড়গাছি মোড়ে ফুটপাতের উপরে যে বি‌শ্রামস্থলের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে, তার পিছনের দেওয়ালের উচ্চতা ঘিরেই মূল সমস্যা। সেই উচ্চতা প্রায় সাড়ে ১০ ফুট। জায়গাটি কলকাতা পুরসভার। যা মানিকতলা বিধানসভা এলাকার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুনন্দাদেবী বেলেঘাটার বিধায়ক পরেশ পালের অনুগামী বলে পরিচিত। তিনি বলেন, ‘‘মানুষের যাতায়াতের জায়গা ছেড়ে ফুটপাতের এক পাশে ওই বিশ্রামস্থল তৈরি করা হচ্ছিল। পিছনের দেওয়ালে ছবি আঁকা থাকবে। সামনে বসার জায়গা। সেই কাজ চলছিল। মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় সৌন্দর্যায়নের কাজ হিসেবেই এটি করা হচ্ছে।’’ তাঁর অভিযোগ, সেই কাজে বাধা দিচ্ছেন দলেরই মন্ত্রী সাধনবাবু। যদিও সাধনবাবুর বক্তব্য, ‘‘ফুটপাতের স্থায়ী দোকানগুলিকে আড়াল করে ওই দেওয়াল তোলা হয়েছে। যে কেউ মনে করলেই তা করতে পারেন না।’’

Advertisement

এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ কাঁকুড়গাছিতে হঠাৎ খবর পৌঁছয়, পুরসভার দল ওই নির্মাণ ভাঙতে আসছে। তা জেনেই পরেশ পালের অনুগামী হাজারখানেক মানুষ সেখানে জড়ো হন। বাড়ে উত্তেজনা। হাজির হয় পুলিশের বাহিনীও। যদিও পুরসভার প্রতিনিধিরা জানিয়ে দেন, কোনও ভাঙাভাঙির জন্য তাঁরা আসেননি। মেয়রের নির্দেশে নির্মাণকাজ পরিদর্শন করতে এসেছেন। ডিজি-র নেতৃত্বে আসা প্রতিনিধিরা চলে যেতেই ভিড় পাতলা হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে কাউন্সিলরের পক্ষ নিয়েছেন পরেশবাবুও। তাঁর কথায়, ‘‘ওই পাঁচিলের উল্টো দিকে বাস ছাউনিও রয়েছে। যার উচ্চতা আট-নয় ফুটের মতো। এবং সেটাও দোকান আড়াল করেই। কলকাতায় এমন উদাহরণ আরও আছে। সে সব নির্মাণ তা হলে হল কী করে?’’ যদিও তিনি জানান, মেয়র তাঁকে বলেছেন, উচ্চতা কিছুটা কমাতে। কাউন্সিলরকেও তা বলা হয়েছে।

শাসক দলেরই এক মন্ত্রীর সঙ্গে এক কাউন্সিলরের এই তরজা নিয়ে জোর চর্চা চলছে পুর মহলে। আর সব চেয়ে বিপাকে পড়েছেন ডিজি (সিভিল)। পুরসভা সূত্রের খবর, ওই সৌন্দর্যায়নের কাজের জন্য গত অক্টোবরে অনুমোদন দেয় পুরসভা। কাজ শুরু হয়েছে তার ভিত্তিতেই। এখন কাঠামো রেখে দিতে কাউন্সিলরের চাপ আর তা ভেঙে ফেলতে মন্ত্রীর চাপের মুখে পড়ার আশঙ্কা করছে পুর প্রশাসন। পুরসভার একাধিক ইঞ্জিনিয়ার জানান, আপাতত বল সিভিল দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কোর্টে। এ দিন অবশ্য মেয়র এ নিয়ে কিছু বলেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন