বিস্ফোরণস্থলে পড়ে রয়েছে চাপ চাপ রক্ত। —নিজস্ব চিত্র
নাগেরবাজারের কাজিপাড়ায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল সকাল ৯টা ১০ মিনিট নাগাদ। বিকেল তিনটের পরে ঘটনাস্থলে থাকা রক্ত সাফ হয়ে গেল। পরিষ্কার করে ফেলা হল বিস্ফোরণের পরে ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা প্রায় সমস্ত নমুনা। সারাদিনে দেখা মিলল না ফরেন্সিক দলের। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা আসার আগেই কেন ঘটনাস্থল সাফ করে ফেলা হল, সেই নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
বিস্ফোরণে পরে রাস্তায় পড়ে ছিল কাচ, ফল, পায়ের চটি, ছাতা, রক্তের দাগ। দুপুরে দমদম থানার পুলিশ এসে জানায়, ওই এলাকার রাস্তা সাফ করার জন্য এই সব কাচের টুকরো সরানো দরকার। না হলে ওই কাচের টুকরো পায়ে লেগে লোকে আহত হতে পারেন। এরপরই দক্ষিণ দমদম পুরসভার জনস্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা দু’টি ভ্যান নিয়ে এসে ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা সমস্ত নমুনা তুলে নিয়ে যান। পরে তা পাঠানো হয় কামারডাঙা ফাঁড়িতে। স্থানীয় লোকেরাই রাস্তায় রক্তের দাগ জল দিয়ে সাফ করে দেন।
ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘটনাস্থল সাফ করার ফলে যা নমুনা তাঁদের সংগ্রহ করার কথা, তার প্রায় কিছুই রইল না। সাধারণত কোনও বড় ঘটনা ঘটে গেলে ঘটনাস্থলে দ্রুত চলে আসেন স্টেট ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির মোবাইল ইউনিটের কর্মীরা। আর মঙ্গলবার যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে তার আশপাশে কোনও সিসিটিভি ক্যামেরাও ছিল না। ফলে এখানে তদন্তের জন্য ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের নমুনা দ্রুত সংগ্রহ করা দরকার ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু এ দিন তাঁদের দেখা মেলেনি।
নাগেরবাজারে ঘটনাস্থলে দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান পাচু রায়।— নিজস্ব চিত্র
কেন দিনভর ঘটনাস্থলে এল না ওই টিম? মোবাইল ফরেনসিক ইউনিটের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমাদের কাছে স্টেট ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি থেকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার জন্য কোনও নির্দেশ আসেনি। আমরা নিজেরা সিদ্ধান্ত নিয়ে যেতে পারি না। আজ গাঁধী জয়ন্তীর ছুটি থাকায় ওই দফতরে কোনও আধিকারিক ছিলেন না।’’ তাঁর মতে, ফরেন্সিক টিম আসার আগে মূল ঘটনাস্থলে কাউকে না ঢুকতে দেওয়াই ভাল। প্রয়োজন হলে ওই জায়গাটি ঘিরে রাখলে ভাল হয়। এবং যত দ্রুত ঘটনাস্থলে যাওয়া যায় এবং যত বেশি গুরুত্বপূর্ণ নমুনা সংগ্রহ করা যায়, তদন্ত তত নিখুঁত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।’’ স্টেট ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি-এর এডিজি হরমনপ্রীত সিংহকে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। রাত পর্যন্ত এসএমএসের উত্তর দেননি।
কিন্তু কেন দমদম থানার পুলিশ ফরেন্সিককে এদিনই ডাকল না? ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রয়োজনীয় সব নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলি যথাস্থানে তদন্তের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হবে।’’