নালা প্লাস্টিকমুক্ত করে পথ দেখাল বিধাননগর

দক্ষিণ দমদম পুরসভা এলাকায় যখন জমা জলে গাড়ি প্রায় ডুবে গিয়েছে, সল্টলেকে কিন্তু তখন সে ভাবে জল জমেনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৭ ০১:২২
Share:

প্রতীকী ছবি।

প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করা যায়নি ঠিকই। কিন্তু গালিপিট ও নিকাশি নালার উপরে বছরভর নজরদারি চালিয়ে বর্ষায় ভাল ফল পেল বিধাননগর পুরসভা। দক্ষিণ দমদম পুরসভা এলাকায় যখন জমা জলে গাড়ি প্রায় ডুবে গিয়েছে, সল্টলেকে কিন্তু তখন সে ভাবে জল জমেনি।

Advertisement

এত দিন জোর বৃষ্টি হলেই সল্টলেক থেকে রাজারহাট— বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ শঙ্কায় থাকতেন। কী ভাবে বাড়ি থেকে বেরোবেন, সেই চিন্তা শুরু হয়ে যেত। এ বার সেই ছবির অনেকটাই বদলে গেল।

ভারী বর্ষণে কলকাতা ও হাওড়া পুরসভার বিস্তীর্ণ এলাকা দীর্ঘ সময় ধরে জলমগ্ন থাকলেও এ বার সেই দুর্ভোগ পোহাতে হয়নি সল্টলেকবাসীকে। কয়েকটি এলাকা ছাড়া অন্যত্র দ্রুতই জল নেমে গিয়েছে।

Advertisement

পুরকর্তাদের দাবি, কিছু জায়গায় রাস্তার কাজ এখনও শেষ হয়নি। ফলে নিকাশির সঙ্গে তার সংযোগ ঘটেনি। কোথাও কোথাও আবার নিকাশি ব্যবস্থাই ছিল না। সেই সব জায়গায় জল জমে থাকলেও পাম্প চালিয়ে দ্রুত তা সরানো হয়েছে। জল নিকাশি নালায় পড়েও দাঁড়িয়ে থাকেনি।

কী ভাবে এটা সম্ভব হল? পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, খাল ও নিকাশি নালাগুলির নিয়মিত সংস্কার এবং নিকাশি নালাগুলিকে প্লাস্টিকমুক্ত করাতেই এ বার জল জমেনি। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘শুধু প্লাস্টিক তুলতেই লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ হচ্ছে। মানুষ প্লাস্টিক ব্যবহার না কমালে বছর বছর এই খাতে খরচ আরও বাড়বে।’’

মেয়র পারিষদ (নিকাশি) দেবাশিস জানা জানান, নিকাশি নালার প্লাস্টিক সরাতে বিশেষ প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হয়েছে। পাম্পিং চেম্বারে একটি বারস্ক্রিন লাগানো হয়েছিল। তাতে প্লাস্টিক এসে আটকে যায়। তার পরে সেই প্লাস্টিক তোলা হয়েছে। ফলে নিকাশির ক্ষেত্রে প্লাস্টিক সমস্যা তৈরি করতে পারেনি। পুরসভা সূত্রের খবর, প্রতি দিন গড়ে ১০০ কিলো প্লাস্টিক তোলা হয়েছে।

মেয়র সব্যসাচী দত্ত বলেন, ‘‘সল্টলেক থেকে রাজারহাটের যে সব জায়গা জলের তলায় থাকত, সেখানে এই ভারী বৃষ্টিতেও জল জমেনি। কিছু জায়গায় সমস্যা রয়েছে। তা সমাধানের চেষ্টা চলছে।’’

কিন্তু প্লাস্টিক বন্ধে কেন উদ্যোগী হচ্ছে না বিধাননগর পুরসভা? পুর কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, সচেতনতার প্রচারে আংশিক সাড়া মিললেও এখনও অনেক পথ পেরোনো বাকি।

বিধাননগর পুরসভা পরিকল্পনা অনুযায়ী বর্ষার জল দ্রুত সরাতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু ঠিক উল্টো ছবি দক্ষিণ দমদম পুর এলাকায়। দমদম রোড, আর এন গুহ রোড, যশোর রোড সংলগ্ন কিছু এলাকা, গোরাবাজার জলের তলায়। জল জমে লেকটাউন, শ্রীভূমি, এমনকী বাঙুরেও।

গোরাবাজারের জলমগ্ন এলাকায় দেখা গেল, কোথাও প্লাস্টিক, কোথাও থার্মোকলের স্তূপ। এক দিকে নিকাশি সংস্কারে ঢিলেমি, অন্য দিকে প্লাস্টিক দূষণ ঠেকানোর ক্ষেত্রে ব্যর্থতা। এই দুইয়ের ধাক্কায় বেসামাল দক্ষিণ দমদম পুরসভা। অথচ, দমদম পার্ক এলাকায় পাম্পিং স্টেশন বসানো হয়েছিল। তারও আগে বাঙুরে দীর্ঘ দিনের জমা জলের সমস্যা দূর করা হয়েছিল। পুরকর্তাদের অবশ্য দাবি, বাগজোলা খাল উপচে পড়েই সমস্যা বাড়িয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন