একটি চুরি হওয়া মোবাইল নিয়ে বেশ কয়েক মাস ধরে নজরদারি চালাচ্ছিল পুলিশ। দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পরে চুরি যাওয়া সেই মোবাইল সিমকার্ড পাল্টে চালু হতেই বিশেষ সূত্র হাতে পান তদন্তকারীরা। সেই সূত্রে ধরেই একের পর এক দুষ্কৃতী থেকে চোরাই মাল বিক্রেতাদের সন্ধান মেলে। তদন্তে বিধাননগর পুলিশ উদ্ধার করে বিপুল পরিমাণ গয়না, শ’দেড়েকেরও বেশি মোবাইল, ল্যাপটপ, ট্যাব এমনকী তামা-পিতলের বাসন থেকে মূর্তিও। রবিবার গ্রেফতার করা হয়েছে দুই কুখ্যাত দুষ্কৃতীকেও। ধৃতেরা হল, বেলেঘাটার বাসিন্দা কার্তিক দে ওরফে রাজু ও সল্টলেকের ছয়নাবির বাসিন্দা শুভাশিস। সল্টলেক আদালত সোমবার ধৃতদের তিন দিনের পুলিশি হেফাজত দেয়।
বিধাননগর কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, চলতি বছরের জুনে সল্টলেকের এ ই ব্লকে একটি বাড়িতে চুরি হয়। সেই ঘটনার তদন্তে নেমেই ১২টি ঘটনায় চুরি যাওয়া ১৫৮টি মোবাইল, ১৬টি ল্যাপটপ, ২টি ট্যাব, ১০ ভরি সোনা, দেড় কেজি রুপো ছাড়াও বাসনপত্র ও কয়েকটি মূর্তি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনায় তিন তরুণ-তরুণীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পাশাপাশি সল্টলেকের পুরনো বেশ কয়েকটি চুরির ঘটনা নিয়ে ফের নজরদারি শুরু হয়। সেই সূত্র ধরেই ধনেখালি থেকে প্রথমে ৩৬টি মোবাইল উদ্ধার হয়। পরে ধনেখালির সূত্র ধরে খড়্গপুর থেকে ১২০টি মোবাইল ও ৮টি ল্যাপটপ পায় পুলিশ। খড়্গপুরে গিয়ে পুলিশ কলকাতার ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ দুষ্কৃতীদের অন্যতম কার্তিকের খোঁজ পায়। কার্তিকের সূত্র ধরেই উঠে আসে সল্টলেকের শুভাশিসের নাম। রবিবার রাতেই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানায় পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ওই দুই দুষ্কৃতী সল্টলেক, কলকাতা-সহ একাধিক জেলায় বহু চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে। চুরি যাওয়া সামগ্রী কিছু দিন নিজেদের কাছে রাখার পরে বিভিন্ন জেলার বেশ কয়েক জন বিক্রেতার কাছে বিক্রি করা হত। চোরাই মাল বিক্রেতারা আবার সেগুলি ঝাড়খণ্ড, বিহার এবং ওড়িশায় বিক্রি করত। তদন্তকারীদের অনুমান, ধৃতদের জেরা করে একাধিক চুরি-চক্র সম্পর্কে তথ্য মিলতে পারে।