আজ রূপার বিকল্প খুঁজবে বিজেপি

কলকাতা পুরসভা এলাকার ভোটার তালিকায় নাম নেই। তাই রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের বিজেপি প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াতে না পারার বিষয়টি নিয়ে জল আরও ঘোলা হল। রূপা শনিবার অভিযোগ করেন, তিনি তৃণমূলভক্ত নন বলে তাঁর নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। কলকাতার ৯৪ নম্বর ওয়ার্ডে রূপার বাড়ি আছে। ২০১০ সাল পর্যন্ত সেখানে ভোটার তালিকায় তাঁর নামও ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৫ ০০:৪৮
Share:

কলকাতা পুরসভা এলাকার ভোটার তালিকায় নাম নেই। তাই রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের বিজেপি প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াতে না পারার বিষয়টি নিয়ে জল আরও ঘোলা হল। রূপা শনিবার অভিযোগ করেন, তিনি তৃণমূলভক্ত নন বলে তাঁর নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। কলকাতার ৯৪ নম্বর ওয়ার্ডে রূপার বাড়ি আছে। ২০১০ সাল পর্যন্ত সেখানে ভোটার তালিকায় তাঁর নামও ছিল। কিন্তু ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে তিনি রাজপুরে তাঁর বর্তমান ঠিকানা থেকে ভোট দেন। রূপার অভিযোগ, ২০১৪-র আগেও এক বার কলকাতার ভোটার তালিকায় ফের নাম তোলাতে তিনি চেষ্টা করেন। কিন্তু তৃণমূল তা করতে দেয়নি।

Advertisement

প্রশ্ন উঠেছে, ভোটার হিসেবে রূপার নাম কোথায় আছে তা ঠিক ভাবে না জেনে বিজেপি-র মতো অভিজ্ঞ দল কেন তাঁকে এই পুরভোটে প্রার্থী করল? দলীয় সূত্রের খবর, সমস্যাটা তৈরি হয়েছে দলের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ‘অপেশাদারিত্ব’ থেকে।

দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ অবশ্য বলেন, “রূপা তৃণমূল বিরোধী বলেই তারা ২০১১-এ তাঁর নাম ৯৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার তালিকা থেকে চক্রান্ত করে বাদ দিয়েছিল।” দলীয় নেতৃত্ব জানতেন, কলকাতার ৯৪ নম্বর ওয়ার্ডে রূপার বাড়ি রয়েছে। ভোটার কার্ডও রয়েছে। ফলে বিশদ খোঁজ নেওয়ার কথা তাঁদের মাথায় আসেনি। রূপা বলেন, “আমি জানতাম না, কলকাতা পুরসভার প্রার্থী হতে গেলে এখানকারই ভোটার হতে হয়।” তাই তিনিও প্রার্থী হওয়ার আগে দলীয় নেতৃত্বকে বিষয়টা জানাননি। তবে প্রার্থী হতে না পারলেও তিনি যে লড়াইয়েই থাকবেন, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন।

Advertisement

রূপার ‘চক্রান্ত-তত্ত্বের’ দাবি অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “যদি রূপাদেবীর নাম ভোটার তালিকায় না তোলার পিছনে চক্রান্ত থাকে, তা কলকাতা বা রাজপুর, যে কোনও কেন্দ্রেই করা যায়। চক্রান্ত করলে রাজপুরে ভোটার তালিকায় তাঁর নাম উঠল কী করে? আসলে উনি চক্রান্তের তত্ত্ব দিয়ে নিজেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে জাহির করার চেষ্টা করছেন।” ফিরহাদের আরও প্রশ্ন, “রূপাদেবী ২০১৪ সালে রাজপুরে ভোট দিয়েছেন। তা হলে তাঁর নাম কলকাতার তালিকায় থাকবে, এটা তিনি আশা করেন কী করে? এর থেকেই বোঝা যায়, বিজেপি কী ধরনের ভোট-নীতিতে বিশ্বাস করে।”

বিজেপি অবশ্য এ দিন রাত পর্যন্ত হাল ছাড়েনি। রাজপুর-সোনারপুর পুরসভা থেকে রূপাদেবীর নাম কলকাতা পুর-এলাকার ভোটার তালিকায় সরিয়ে আনার আর্জি নিয়ে শুক্রবার ও শনিবার দিনভর বিজেপি-র প্রতিনিধিরা রাজ্য নির্বাচন কমিশনে দরবার করেন। কিন্তু কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, ওই আর্জি মানা সম্ভব নয়। কিন্তু আজ, রবিবার পর্যন্ত তাঁরা কমিশনের ইতিবাচক জবাবের জন্য অপেক্ষা করবেন। তবে একই সঙ্গে আজ বিজেপি কলকাতার ৯৬ নম্বর ওয়ার্ডের জন্য বিকল্প প্রার্থী ঠিক করতে বৈঠকেও বসবে। সেখানে অভিনেত্রী শর্বরী মুখোপাধ্যায়ের নাম নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা আছে।

কমিশন এ দিনই জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ পুর-নির্বাচনী আইনের ১৬-এ ধারায় বলা আছে, নির্বাচনের সময় রাজ্যে বিধানসভা ভোটের যে ভোটার তালিকা কার্যকর রয়েছে, সেটা গ্রহণ করেই পুরভোট করা যায়। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সুশান্ত উপাধ্যায়ের কথায়, “এ বারের পুরভোটে নির্বাচন কমিশনের শেষ চূড়ান্ত ভোটার তালিকাই গ্রহণ করা হয়েছে। তবে সর্বদলীয় বৈঠকের প্রস্তাব মেনে কমিশন জেলাশাসকদের জানিয়েছে, ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের পর ৯ মার্চ পর্যন্ত সেখানে যাঁরা নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন, তাঁদের নামও পুরভোটের তালিকায় স্থান দিতে হবে।” তিনি আরও জানান, পুর নির্বাচনী আইনের ওই ধারা কার্যকর করার পর কমিশন নতুন করে কারও নাম ভোটার তালিকায় তুলতে পারে না। তাই রূপার নামও নতুন করে কলকাতা পুরসভার ভোটার তালিকায় তোলা সম্ভব নয়।

অন্য দিকে রাহুলবাবু এ দিন জানান, ৬২ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি-র ঘোষিত প্রার্থী ফতমা সদাফ আরশাদ প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াতে না চাওয়ায় সেখানে যোগ্য প্রার্থীর সন্ধান চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন