ধর্মতলায় বিজেপিই কাল চাঁদমারি মমতার

ধর্মতলায় কাল, সোমবার ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে বিজেপিই মূল নিশানা হতে চলেছে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতায়। শুধু নেত্রীই নন, দলের অন্য নেতারাও তুলোধোনা করার জন্য প্রথম পছন্দ হিসেবে বেছে নিচ্ছেন কেন্দ্রে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকারে আসা নরেন্দ্র মোদীর দলকেই।

Advertisement

সঞ্জয় সিংহ

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৪ ০১:২২
Share:

২১ জুলাইয়ের স্মৃতিতে অডিও সিডি প্রকাশে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি হিরণ চট্টোপাধ্যায়। রয়েছেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি সৌমিত্র খাঁ-ও (বাঁ দিকে)। শনিবার প্রেস ক্লাবে। ছবি: সুমন বল্লভ

ধর্মতলায় কাল, সোমবার ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে বিজেপিই মূল নিশানা হতে চলেছে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতায়। শুধু নেত্রীই নন, দলের অন্য নেতারাও তুলোধোনা করার জন্য প্রথম পছন্দ হিসেবে বেছে নিচ্ছেন কেন্দ্রে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকারে আসা নরেন্দ্র মোদীর দলকেই।

Advertisement

সোমবার থেকেই কার্যত পুরভোটের প্রচার শুরু করে দিচ্ছে তৃণমূল। দলীয় সূত্রের খবর, আসন্ন পুরভোটে কংগ্রেস বা সিপিএমকে নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের খুব একটা মাথাব্যথা নেই। বিজেপিকেই এখন প্রধান প্রতিপক্ষ বলে মনে করছে তৃণমূল। অধিকাংশ নেতাই মনে করেন, সিপিএম নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস এখন প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। কিন্তু কলকাতা-সহ রাজ্যের শহরাঞ্চলে বিজেপির ভোট উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়ছে। আর সেই কারণে এ বার ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সমালোচনাই মমতার বক্তৃতায় প্রাধান্য পাবে। একই সুর শোনা যাবে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সীর মতো দলের দুই বর্ষীয়ান সাংসদ এবং শুভেন্দু অধিকারী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়দের মতো তরুণ নেতাদের কণ্ঠেও।


সবিস্তার দেখতে ক্লিক করুন...

Advertisement

তৃণমূল সূত্রের খবর, ধর্মতলার সভায় কেন্দ্রের তথাকথিত বঞ্চনা এবং বিমা-প্রতিরক্ষায় বিদেশি বিনিয়োগের বিরোধিতা নিয়ে মমতা যেমন সরব হবেন, তেমনই রেলভাড়া বৃদ্ধি বা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়েও কেন্দ্রকে তুলোধনা করতে ছাড়বেন না। নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও তাঁর সরকার রাজ্যের গ্রাম-শহরে কেমন উন্নয়নের কাজ করেছে, তার ফিরিস্তি দেবেন দলনেত্রী। ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদী-সহ বিজেপি নেতারা কী বলেছিলেন এবং ক্ষমতায় আসার পরে কী কাজ করছেন তা নিয়েও সবিস্তারে বলবেন মমতা।

মুসলিম ভোটাররা গত কয়েকটি নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশেই থেকেছেন। সংখ্যালঘুদের মন পেতে মমতাও চেষ্টার কসুর করেন না। কলকাতা-সহ রাজ্যের প্রায় ১০০ পুরসভার ভোটেও সংখ্যালঘু সমর্থন ধরে রাখার ক্ষেত্রে বিজেপিকে চাঁদমারি করার কৌশল ফলদায়ক হবে বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। আবার, সাধারণ কর্মীরা যে ভাবে সিপিএম ও অন্য বাম দল ছেড়ে বিজেপিতে ভিড় জমাচ্ছেন, সেটাও তৃণমূল ভাল চোখে দেখছে না।

তৃণমূল নেতাদের আশা, আক্রমণ থেকে রেহাই পেলে বামেরা কিছুটা হলেও তাদের ঘর গুছোতে পারবে। এটাও এক দিক থেকে বাড়বাড়ন্তে বাধা হবে বিজেপির।

দলের এই বাৎসরিক সমাবেশ থেকে এর আগেও তৃণমূল নেত্রী বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। এ বার সেই সমাবেশ থেকেই তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের পুরভোটের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেবেন বলে তৃণমূল নেতাদের ধারণা। তিন বছর আগে রাজ্যে ‘পরিবর্তন’-এর পর বিজয় দিবস পালিত হয়েছিল ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে। সে বার সমাবেশ করা হয়েছিল ব্রিগ্রেডে। পরের বার ফেরসমাবেশ ফেরে ধর্মতলাতে। তা পালন করা হয়েছিল ‘মা-মাটি-মানুষ’ দিবস হিসেবে। ২০১৩-এ পঞ্চায়েত ভোট চলায় ২১ জুলাইয়ের কর্মসূচি পিছিয়ে এ বছর ৩০ জানুয়ারি ব্রিগেডে সমাবেশ করেছিল তৃণমূল। সেই সমাবেশ থেকে লোকসভার ভোটের প্রচার শুরু করা হয়। এ বারের সমাবেশ প্রসঙ্গে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় তো সরাসরিই বলেছেন, “সংসদীয় গণতন্ত্রে একটি রাজনৈতিক দলের শক্তিবিচার হয় ভোটেই। আর আমাদের সামনে কলকাতা-সহ রাজ্যের শ’খানেক পুরসভার ভোট রয়েছে। ফলে ভোটের প্রচার নিয়ে এ বারের সমাবেশ থেকে দলনেত্রী বার্তা দেবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন