দগ্ধ বহুতলে আবার আগুন, এলাকায় আতঙ্ক

শুক্রবার রাতের আগুনে কার্যত কঙ্কাল বেরিয়ে পড়েছে ৮০ বছরের ওই পুরনো বহুতলের। দমকলকর্মীরাও অবাক হয়ে যাচ্ছেন বহুতলটির হাল দেখে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২০ ১২:৫০
Share:

স্থানীয়দের মধ্য়ে আতঙ্ক ছড়ালো বহুতলের কালো ধোঁয়া। নিজস্ব চিত্র।

সারা রাত দমকলের চেষ্টার পর নিয়ন্ত্রণে আসে মধ্য কলকাতার গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউর বহুতলের আগুন। কিন্তু শনিবার সকালে সেই বহুতলের সাততলা থেকে গলগল করে কালো ধোঁয়া বেরতে শুরু করে। যার জেরে আজ ফের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকাবাসীর মধ্যে। শুক্রবার রাতের আগুনে কার্যত কঙ্কাল বেরিয়ে পড়েছে ৮০ বছরের ওই পুরনো বহুতলের। দমকলকর্মীরাও অবাক হয়ে যাচ্ছেন বহুতলটির হাল দেখে।

Advertisement

দমকলকর্মীরা জানিয়েছেন, বহুতলের ভিতরে আসবাবের ফুলকি থেকেই শনিবার সকালে ফের আগুন লেগেছিল সাততলায়। সে জন্যেই নতুন করে বের হয় কালো ধোঁয়া। যদিও তার পর তা নিভিয়েও ফেলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দমকলকর্মীরা।

বহুতলের বাসিন্দাদের দাবি, এক তলার মিটার বক্সে প্রথমে আগুন লাগে। তা লাগার পরই তারের জটলার মাধ্যমেই বহুতলের অন্যান্য তলায় আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল। পাশাপাশি ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছিল গোটা বহুতল। যার জেরে স্বাভাবিকভাবেই ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। হুড়োহুড়ি শুরু হয় সেখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে। সেই আতঙ্কেই বহুতল থেকে ঝাঁপ মেরেছিল ১৪ বছরের ইউনুস। যার জেরে গুরুতর আহত হয় সে। মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়ার পর মৃত্যুও হয় তার। ওই বহুতলের বাসিন্দা ৮০ বছরের শামিনা বেগম আটতলার বাথরুমে আটকে পড়েন। আগুন ও ধোঁয়ার কারণে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। এ ছাড়া তিনজন বাসিন্দা আহত হয়ে মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন।

Advertisement

আটতলার ওই বাড়িতে বসবাসের পাশাপাশি অফিস-দোকানও ছিল। কিন্তু ঢোকা-বেরনোর রাস্তা একটিই। সেখানকার এক চিলতে সিঁড়ি দিয়ে তিনজনের ওঠা নামা করাই দায়। কিন্তু তার উপরই প্রত্যেক তলার কমন প্যাসেজে ডাঁই করে রাখা জিনিসপত্র। সে সব পেরিয়েই যাতায়াত করতেন বাসিন্দারা। এর পাশাপাশি বিদ্যুতের তারের জটলা তো রয়েইছে। বহুতলটিতে মাকড়সার জালের মতো ছড়িয়ে ছিল বিদ্যুতের তার। সব মিলিয়ে জতুগৃহে পরিণত হয়েছিল গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউর ওই বাড়ি।

নীচের তলায় প্রথম আগুন লাগায় সেখানকার বাসিন্দারা উপরের তলে উঠতে শুরু করেন। সে সময় বহুতলের ছাদের দরজা খোলা ছিল। সে জন্যই ব্যাপক প্রাণহানি এড়ানো গিয়েছে বলে মত দমকলের। পুলিশের নির্দেশে বাসিন্দারা ছাদে উঠে যান। ছাদ থেকে হাইড্রলিক ল্যাডারের মাধ্যমে তাঁদের নামিয়ে আনেন দমকলকর্মীরা। এক দমকল আধিকারিক বলেন, ‘‘ছাদের দরজা খোলা ছিল বলে বড় বিপর্যয় এড়ানো গিয়েছে। না হলে যে রকম আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল তাতে স্টিফেন কোর্টের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারত।”

আরও পড়ুন: গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউয়ের বহুতলে বিধ্বংসী আগুন, মৃত বৃদ্ধা

আজ ওই বহুতলে আসবেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। ইতিমধ্যেই পুলিশ ও দমকল গোটা ঘটনার যৌথ তদন্ত শুরু করেছে। দমকল আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ওই বাড়িতে অগ্নি নির্বাপণের ন্যূনতম ব্যবস্থাও ছিল না। একটি বহুতলে আপৎকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় যা থাকার দরকার তার কিছুই ছিল না গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউর বহুতলে। আগুন নেভানোর জলের লাইন সেখানে আদৌ ছিল কি না তাও খতিয়ে দেখছে দমকল। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর বহুতলের অবস্থা ভয় পাওয়াচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীদের।

আরও পড়ুন: দুর্গাপুজোর চার দিনই বৃষ্টির সম্ভাবনা কলকাতা-সহ গোটা পশ্চিমবঙ্গে

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন