জাহাজ থেকে ফেলা বর্জ্যে গঙ্গার পাড় যেন আঁস্তাকুড়

ঘাটের প্রায় ১০০ বর্গফুট এলাকা জুড়ে পড়ে রয়েছে আবর্জনা এবং কয়েক হাজার প্লাস্টিক।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২০ ০২:৪৯
Share:

অপরিষ্কার: এমনই দশা হাওড়ার বটানিক্যাল গার্ডেন গঙ্গার ঘাটের। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

গঙ্গার ঘাট তো নয়, যেন আঁস্তাকুড়!

Advertisement

ঘাটের প্রায় ১০০ বর্গফুট এলাকা জুড়ে পড়ে রয়েছে আবর্জনা এবং কয়েক হাজার প্লাস্টিক। প্লাস্টিকের উপরে আবার জমে রয়েছে জল। আবর্জনায় পড়ে থাকা খাবারের খোঁজে ঘুরে বেড়াচ্ছে শুয়োরের দল। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা আবর্জনা ও প্লাস্টিক গঙ্গায় পড়ে দূষণ ঘটাচ্ছে নিয়মিত।

যে গঙ্গার ঘাটে কয়েক বছর আগে সৌন্দর্যায়ন করা হয়েছিল, গঙ্গার শোভা দেখতে যেখানে কয়েক ঘণ্টা বসা যেত, সেই বটানিক্যাল গার্ডেন গঙ্গার ঘাট বা হনুমান ঘাটের অবস্থা ঠিক এমনই। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, আবর্জনা আর দুর্গন্ধে বসা তো দূরের কথা, ওই জায়গার ধারেকাছে যাওয়া যায় না। গঙ্গার শোভা দেখার জন্য তৈরি করা সিমেন্টের বেঞ্চ তাই ফাঁকাই পড়ে থাকে। ঘাটটির আবর্জনা পরিষ্কার করার কথা হাওড়া পুরসভার। কিন্তু পুরসভাকে বারবার জানিয়েও ফল হয়নি বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।

Advertisement

বটানিক্যাল গার্ডেন গঙ্গার ঘাটে রয়েছে ‘ইনল্যান্ড ওয়াটারওয়েজ অথরিটি অব ইন্ডিয়া’র জেটি। সেখানে এসে ভেড়ে নানা দেশের জাহাজ। জেটির এক পাশে গঙ্গাতীরের সৌন্দর্যায়নের জন্য কয়েক বছর আগে রেলিং দিয়ে বাঁধানো হয় পাড়। তৈরি করা হয় বসার বেঞ্চ। বাসিন্দাদের বক্তব্য, ওই ঘাটটির পরিবেশ পাল্টে গিয়েছে পাশেই থাকা বড় বড় গাছের জন্য। ঘাটের ওই মনোরম পরিবেশের জন্য গরমে তাঁদের কাছে জায়গাটি অত্যন্ত প্রিয় ছিল।

বটানিক্যাল গার্ডেনের দানেশ শেখ লেনের বাসিন্দা ঈপ্সিতা রায় বলেন, ‘‘এমন একটা জায়গা শুধুমাত্র আবর্জনা ফেলে নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। বিকেলে আমরা ওখানে ঘুরতে যেতাম। অনেক মানুষ আসতেন। এখন আবর্জনা ভরা জায়গাটি হয়ে গিয়েছে শুয়োরের বিচরণ ক্ষেত্র।’’

যে জায়গায় ওই গঙ্গার ঘাটটি, তার আশপাশে জনবসতি প্রায় নেই বললেই চলে। তা হলে এত আবর্জনা ফেলছেন কারা?

এলাকার দীর্ঘদিনের বাসিন্দা সুপ্রতিম পাঠক বলেন, ‘‘ইনল্যান্ড ওয়াটারওয়েজ অথরিটি অব ইন্ডিয়া-র জেটিতে বাইরের সব জাহাজ এসে ভেড়ে। জাহাজ থেকে বর্জ্য, পরিত্যক্ত খাবারের প্যাকেট, প্লাস্টিক সবই পাড়ে ফেলা হয়। এলাকার লোকজনও ওই জায়গায় এসে আবর্জনা ফেলে যান। আমরা বারবার বলেও কিছু করতে পারিনি।’’

এই অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করায় ইনল্যান্ড ওয়াটারওয়েজ অথরিটি অব ইন্ডিয়া জেটিতে থাকা কর্মীরাও কোনও মন্তব্য করতে চাননি। জায়গাটি কলকাতা বন্দর কতৃর্পক্ষের হলেও আবর্জনা পরিষ্কারের দায়িত্ব যে হাওড়া পুরসভার, মানছেন পুর কমিশনার বিজিন কৃষ্ণ। তিনি বলেন, ‘‘গঙ্গার পাড় পুরসভাই পরিষ্কার করবে। কিন্তু কেন করা হয়নি, তা জানার চেষ্টা করছি। অবিলম্বে জায়গাটি যাতে পরিষ্কার হয় সে জন্য নির্দেশ দিয়েছি। তবে কারা ওই আবর্জনা ফেলছেন, তা খতিয়ে দেখা হবে। দোষ প্রমাণিত হলে মোটা জরিমানা করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন