ভরসার বিশ্বকর্মার ছবি আঁকড়ে কান্না ব্যবসায়ীর

বৌবাজারে বিপর্যয়ের ওই ঘটনায় একাধিক গয়না কারখানায় ফাটল ধরেছে। এক মাস পরেই দুর্গাপুজো। তার পরে ধনতেরাস, কালীপুজো, দীপাবলি একের পরে এক উৎসব।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:০৯
Share:

কারখানা থেকে বিশ্বকর্মার ছবি নিয়ে বেরিয়ে আসছেন পরিতোষ কর। রবিবার, দুর্গা পিতুরি লেনে। নিজস্ব চিত্র

এমনিতেই রাজ্যে বড় কারখানার দেখা নেই। তারই মধ্যে বিভিন্ন কারণে মুখ থুবড়ে পড়ছে একাধিক ছোট কারখানা। এ বার সুড়ঙ্গ বিপর্যয়ের জেরে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে পারে গয়না-শিল্পের আঁতুড়ঘর বৌবাজারের সোনাপাড়া। আতঙ্কে গয়না ব্যবসায়ী ও কর্মীরা। রবিবার সেখানে গিয়ে দেখা গেল, বিশ্বকর্মার ছবি বুকে আগলে কাঁদছেন একটি গয়না কারখানার মালিক। যা দেখে কেউ কেউ বললেন, ‘‘এখন বিশ্বকর্মাই আমাদের ভরসা।’’

Advertisement

বৌবাজারে বিপর্যয়ের ওই ঘটনায় একাধিক গয়না কারখানায় ফাটল ধরেছে। এক মাস পরেই দুর্গাপুজো। তার পরে ধনতেরাস, কালীপুজো, দীপাবলি একের পরে এক উৎসব। চরম উৎকণ্ঠায় পরিতোষ ধর, প্রলয় পুরকাইতদের মতো অনেক কারখানার মালিক। যাঁরা এ দিন পুলিশের কুপন নিয়ে ফাটল ধরা বন্ধ কারখানায় প্রবেশের সুযোগ পেয়েছিলেন।

৯৫, দুর্গা পিতুরি লেনে তেতলা বাড়ির একতলায় একশো বর্গফুটের এক চিলতে ঘরে ন’জন কর্মী নিয়ে গয়না তৈরির কাজ করেন পরিতোষবাবু। তিনি জানান, ১ সেপ্টেম্বর সকালে কর্মীরা রান্নাও শেষ করতে পারেননি। তার আগেই কারখানা খালি করে বেরিয়ে যেতে হয়। বন্ধ কারখানায় ঢুকতে গত আট দিন ধরে পুলিশ আর গোয়েন্কা কলেজের কন্ট্রোল রুমে ছুটে বেড়িয়েছেন পরিতোষবাবুরা। এ দিন তাঁকে দেখা গেল, কারখানার ভিতর থেকে প্রথমেই বিশ্বকর্মা ঠাকুরের ছবিটি বার করে আনতে। ছবিটি মোছার সময়ে সেটি বুকে জড়িয়ে কেঁদে ফেলেন পরিতোষবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘বিশ্বকর্মাই আমায় বাঁচিয়ে রেখেছেন। প্রতি বছর এই ছবিটিকে ধূমধাম করে পুজো করা হয়। এ বার কিছুই হবে না! সব

Advertisement

গোলমাল হয়ে গেল। আরও অনেকে কাজ করেন কারখানায়। সব ক’টি পরিবার সমস্যার মুখে পড়ল।’’ বিশ্বকর্মার ছবি কোলে ফ্যাকাসে মুখ নিয়ে ফুটপাতের একটি কোণে বসেছিলেন পরিতোষবাবু।

এলাকার খবর, পরিতোষবাবুর মতো চরম সঙ্কটে দিন কাটছে দুর্গা পিটুরি লেনের প্রায় পঞ্চাশ জন গয়না ব্যবসায়ীরও। যাঁদের কারখানায় কাজ করেন বহু কারিগর। দমদমের বাসিন্দা ব্যবসায়ী প্রলয় পুরকাইতের কথায়, ‘‘ভাড়া বাড়িতেই ব্যবসা। ধনতেরাসের আর দু’মাসও বাকি নেই। কারখানা বন্ধ। ১৮০ টাকা ভাড়া দিতাম। এখন এই অসহায় অবস্থার সুযোগ নিয়ে লোকজন দশ হাজার টাকা ভাড়া চাইছে। জানি না পরিস্থিতি কবে ঠিক হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন