জ্যাংড়া-কাণ্ডে শিক্ষক দম্পতির বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করলেন ধৃতদের পরিজনেরা।
জ্যাংড়ার জর্দাবাগান সংলগ্ন একটি আবাসনের ‘সি’ ব্লকের একটি ফ্ল্যাটের মালিক কৃষ্ণেন্দু রায়কে খুনের চেষ্টার অভিযোগে ওই আবাসনের সেক্রেটারি বিধান চৌধুরী এবং দুই বাসিন্দা রজত দে ও ঋতিকা বিশ্বাসকে রবিবার গ্রেফতার করে বাগুইআটি থানার পুলিশ। ঋতিকা এবং রজত সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। তাঁরা শহরের নামী প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার কাজে যুক্ত।
এই ঘটনা পুরোপুরি মিথ্যা বলে দাবি করেছেন ঋতিকার বাবা মহীতোষ বিশ্বাস। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমার মেয়ে এবং জামাই উচ্চশিক্ষিত। তারা কি এ কাজ করতে পারে? ঘটনার সময়ে মেয়ে-জামাই তো আবাসনেই ছিল না।’’ মিথ্যা অভিযোগের কারণ ব্যাখ্যায় তিনি জানান, কৃষ্ণেন্দুর স্ত্রী সঞ্চিতা সরকার ঋতিকার বান্ধবী। সঞ্চিতা এবং তাঁর ছেলে সোম রায়ের উপরে কৃষ্ণেন্দু মত্ত অবস্থায় অত্যাচার করেন। ঋতিকা তার প্রতিবাদ করেন। সে জন্য প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে মেয়ে-জামাইকে ফাঁসানো হয়েছে। এ দিন কৃষ্ণেন্দুর স্ত্রী এবং ছেলেও ঋতিকা-রজতের পাশে দাঁড়িয়েছেন। শিক্ষক-দম্পতির সমর্থনে মুখ খুলেছেন আবাসনের বাসিন্দাদের একাংশও। ওই আবাসন কমিটির অন্যতম সদস্য বি কে সান্যালের দাবি, ‘‘ঘটনার সময় দু’জনের কেউই ছিলেন না। পুলিশকে বয়ানে সে কথা জানিয়ে ছিলাম। তার পরেও কেন তাঁরা গ্রেফতার হলেন, বুঝতে পারছি না।’’ ঘটনার পিছনে আবাসনের প্রোমোটারের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা উচিত বলে মনে করেন মহীতোষবাবু। কারণ, কথা না রাখায় এক সময়ে ওই প্রোমোটারের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন ঋতিকা ও রজত।
যদিও কৃষ্ণেন্দুর বন্ধু দেবাশিস বলেন, ‘‘গত ৯ জুন অ্যাসোসিয়েশনের অফিসে রক্ষণাবেক্ষণের টাকা জমা দিতে যান কৃষ্ণেন্দু। অন্যেরা চেক দিলেও কৃষ্ণেন্দুর কাছ থেকে চেক নিতে চাননি বিধান। সেই সময়ে ঋতিকা ও রজতও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। কৃষ্ণেন্দু নিজের অবস্থানে অনড় থাকলে বিধান ওঁকে মারধর করেন। ঋতিকা ও রজত তাতে প্ররোচনা দেন।’’ পরে দু’জন আবাসিক ঘটনাস্থলে এসে কৃষ্ণেন্দুকে উদ্ধার করেন। প্রোমোটারের ভূমিকা প্রসঙ্গে দেবাশিস বলেন, ‘‘মামলায় শিক্ষক দম্পতি হেরেই গিয়েছেন।’’ অভিযোগ এবং পাল্টা অভিযোগের চাপান-উতোরে পুলিশের এক আধিকারিক জানান, উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে পদক্ষেপ করা হয়েছে।