বাড়িতে ঢুকে গুলি করে খুন মুরগি ব্যবসায়ীকে

ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সুনীল চৌধুরী বলেন, ‘‘কোনও ব্যবসার টাকার ভাগ নিয়ে সমস্যার জেরেই এই খুন বলে মনে হচ্ছে। ওই নিহত ব্যক্তি আগে গাঁজা বিক্রির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলেও প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে।’’ 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:৪৩
Share:

সুখেন্দু কাঁড়ার

দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিজের বাড়িতে খুন হলেন এক মুরগির ব্যবসায়ী। মঙ্গলবার রাতে বেলঘরিয়া থানার বিবেকানন্দ নগরের ঘটনা। বাধা দিতে যাওয়ায় নিহত সুখেন্দু কাঁড়ারের (৫২) মা অসীমা কাঁড়ারকে ধারাল অস্ত্রের ঘায়ে জখম করে দুষ্কৃতীরা। মারধর করে নিহতের স্ত্রী দীপ্তি কাঁড়ারকেও। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অন্যতম অভিযুক্ত তারক হেলার খোঁজ চলছে বলে পুলিশ জানায়।

Advertisement

ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সুনীল চৌধুরী বলেন, ‘‘কোনও ব্যবসার টাকার ভাগ নিয়ে সমস্যার জেরেই এই খুন বলে মনে হচ্ছে। ওই নিহত ব্যক্তি আগে গাঁজা বিক্রির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলেও প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে।’’

স্থানীয় সূত্রের খবর, বিবেকানন্দ নগরে সম্প্রতি একটি মুরগির দোকান খোলেন সুখেন্দুবাবু। এলাকার পুরনো দুষ্কৃতী তারক বেশ কিছু দিন ধরেই তাঁর কাছ থেকে তোলা চাইছিল। সোমবার বিকেলে তারক দুই সঙ্গীকে নিয়ে সুখেন্দুবাবুর বাড়িতে চড়াও হয় বলে অভিযোগ পরিবারের। সেই সময় ‘তোলা দিতে পারব না’ বলায় সুখেন্দুকে একপ্রস্ত মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ।

Advertisement

সুখেন্দুর ভাইপো অরিন্দম কাঁড়ার পুলিশকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ তারকের দুই শাগরেদ ফের তাঁদের বাড়িতে এসে তাঁর কাকার খোঁজ করে এবং তারক বেড়াতে যাবে বলে একটি গাড়ি ঠিক করে দিতে বলে। সুখেন্দু সে প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তারা ফিরে যায়।

নিহতের স্ত্রী দীপ্তি কাঁড়ারের অভিযোগ, রাত পৌনে ২টো নাগাদ প্রথমে জোরে জোরে কলিংবেল বাজায় কেউ। তার পরে সদর দরজায় ধাক্কা মারে। তাঁরা দরজা খোলেননি। ইতিমধ্যে দুষ্কৃতীরা বাড়ির পিছনের দরজা ভেঙে তাঁদের শোওয়ার ঘরের সামনে হাজির হয়। শূন্যে দু’বার গুলি চালায়। তার পরে লাথি মেরে বন্ধ দরজার ছিটকিনি খুলে ফেলে।

দীপ্তিদেবীর কথায়, ‘‘ওদের এক জন আমার চুল ধরে টেনে মারধর করে। পরে মাথায় বন্দুক ধরে। অন্য জন আমার স্বামীকে বিছানা থেকে পা ধরে টেনে নামায়।’’ অভিযোগ, খুব কাছ থেকে সুখেন্দুবাবুর বুকে পিস্তল থেকে একটি গুলি করে আততায়ীরা। আওয়াজ শুনে পাশের ঘর থেকে ছুটে আসেন অসীমাদেবী। বৃদ্ধার কথায়, ‘‘বাধা দিতে গেলে আমাকে ঠেলে সরিয়ে দরজা দিয়ে পালায় দু’জন। পরে বুঝি, ওদের হাতে ধারালো কিছু ছিল। তা দিয়ে আমার ডান হাত ফালাফালা করে দিয়েছে।’’

পরিবারটির অভিযোগ, আততায়ীদের মধ্যে এলাকারই বামনাকৃতির এক যুবক ‘ছোটভাই’ ছিল। তবে গুলি চালিয়েছে মুখ চেনা এক জনই।

ঘটনার খবর পেয়েই তল্লাশি শুরু করে বেলঘরিয়া থানা। বুধবার বিকেলে এলাকা থেকেই ধরা হয় তিন জনকে। ব্যারাকপুরের ডিসি ( জোন ২) আনন্দ রায় জানান, ‘ছোটভাই’ ওরফে কিশোর সাউ, বিশ্বনাথ মাইতি এবং সন্টাই ওরফে দেবজ্যোতি ঘোষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের দাবি, ধৃতেরা তারকের শাগরেদ। গাঁজার কারবার, তোলাবাজি, সাট্টার কারবার চালানো—সব ধরনের অভিযোগই রয়েছে তারকের বিরুদ্ধে। এর আগে পুলিশের হাতে ধরাও পড়েছে সে। পুলিশ আধিকারিকরা জানান, তারকের খোঁজে

তল্লাশি চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন