সঙ্কল্প দাস
কোনও ‘নিকুম্ভ স্যার’-কে পায়নি সঙ্কল্প! কিন্তু ডিসলেক্সিয়ায় আক্রান্ত এই পড়ুয়ার পাশে দাঁড়িয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি। তাঁর নির্দেশ অনুসারেই কাল, সোমবার থেকে ফের স্কুলে যেতে পারবে সে।
ডিসলেক্সিয়া আক্রান্ত স্কুলছাত্র সঙ্কল্প দাসের সমস্যা মেটাতে সব পক্ষের কৌঁসুলিদের আলোচনায় বসতে বলেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু তাতে রফাসূত্র বেরোয়নি। অবশেষে শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী নিজেই নির্দেশ দিয়েছেন, কাল, সোমবার থেকে স্কুলে যাবে সঙ্কল্প। সঙ্কল্পের আইনজীবী বাসবী রায়চৌধুরী জানান, পছন্দের বিষয়গুলি নিয়ে কী ভাবে সঙ্কল্প দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় বসতে পারে, সিবিএসই-র আইনজীবীকে তা দেখতে বলেছে আদালত।
সঙ্কল্পের বাবা দেবাশিস দাসের অভিযোগ, বালিগঞ্জ কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময়ে তাঁর ছেলের ডিসলেক্সিয়া ধরা পড়ে। বোর্ড তাকে আর্ট নিয়ে পড়া চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়। দশম শ্রেণিও পাশ করেছে সঙ্কল্প। একাদশ থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে ওঠার সময় থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষ অসহযোগিতা করছেন। সঙ্কল্পের আইনজীবী আদালতে জানান, সঙ্কল্পকে হোম সায়েন্স, পুষ্টিবিজ্ঞান, সঙ্গীত এবং আর্ট বিষয় হিসেবে নিতে দেওয়া হচ্ছে না। সাধারণ বিষয় নিয়ে সঙ্কল্পের পক্ষে পড়া অসম্ভব।
সিবিএসই-র আইনজীবী আদালতে জানিয়েছিলেন, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পড়ুয়াদের এই ধরনের বিষয় পড়ানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। স্কুল চাইলেই তা পড়াতে পারে। স্কুলের তরফে আদালতে বারবারই পরিকাঠামোর অভাবের কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি, দীর্ঘ দিন স্কুলে না যাওয়ায় সঙ্কল্পের নাম কাটা গিয়েছে বলেও দাবি করা হয়।
এমন পরিস্থিতিতে বিচারপতি চক্রবর্তীর পর্যবেক্ষণ ছিল, এই জটিল বিষয়টির সঙ্গে সঙ্কল্পের ভবিষ্যৎ জড়িত। সব পক্ষের আইনজীবী বসে বিষয়টি মিটিয়ে নিন, যাতে সঙ্কল্প ফের পড়াশোনা শুরু করতে পারে। বাসবীদেবী জানান, আদালতের নির্দেশ মতো সব পক্ষের কৌঁসুলি আলোচনায় বসেছিলেন। কিন্তু স্কুলের তরফে নানা বিষয়ে আপত্তি থাকায় সুরাহা হয়নি। শুক্রবার আদালতে তা জানানো হলে বিচারপতি স্কুলকে এই নির্দেশ দিয়েছেন।
সঙ্কল্পের মা খুকু দাস জানান, বিচারপতির এই নির্দেশে স্বস্তি পেয়েছেন তাঁরা। সোমবারই গিয়ে সঙ্কল্পকে আবার স্কুলে ভর্তি করাবেন তাঁরা। মঙ্গলবার থেকে ক্লাসে যাবে ওই পড়ুয়া।