দু’যুগের মামলার দু’দিনে নিষ্পত্তির নির্দেশ কোর্টের

আদালত সূত্রের জানা গিয়েছে, ১৯৯৫ সালে গার্ডেনরিচ এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ আলম নামে এক ব্যক্তির পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। আদলত সূত্রে জানা গিয়েছে, আলম একটি ঠিকাদার সংস্থায় কাজ করতেন।

Advertisement

শুভাশিস ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৭ ০০:৫৩
Share:

নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালতে দড়ি টানাটানি চলেছে প্রায় দু’যুগ ধরে। অবশেষে নিম্ন আদালতকে দু’দিনে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর মামলার নিষ্পত্তির নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।

Advertisement

আদালত সূত্রের জানা গিয়েছে, ১৯৯৫ সালে গার্ডেনরিচ এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ আলম নামে এক ব্যক্তির পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। আদলত সূত্রে জানা গিয়েছে, আলম একটি ঠিকাদার সংস্থায় কাজ করতেন। ২৯ মার্চ সকালে গার্ডেনরিচ থানার ওসি-র নেতৃত্বে চার জন পুলিশ অফিসার আলমকে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে যান। ছ’দিন পরে চুরির মামলা দায়ের করে আলমকে আদালতে পেশ করা হয়। বিচারক তাঁকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

আদালত সূত্রের খবর, এর পরেই ২৮টি ক্ষত ও আঘাত নিয়ে প্রেসিডেন্সি জেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বছর কুড়ির আলম। এক দিন পরে জেল হাসপাতালেই আলমের মৃত্যু হয়। ময়না-তদন্তকারী চিকিৎসক, সুরতহালের ম্যাজিষ্ট্রেট ও জেল হাসপাতালের চিকিৎসকের মত অনুযায়ী, মারধরের জেরেই আলমের শরীরে গভীর ক্ষত-সহ নানা আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট ছিল। ওই আঘাতের কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছিল।

Advertisement

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, গার্ডেনরিচ থানা এবং লালবাজারের পুলিশকর্তাদের কাছে আর্জি জানিয়েও সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী ছেলের মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের করতে পারেনি মা জাবিদা। এক বছর পরে এক আইনজীবীর সাহায্য আলিপুর আদালতে ছেলের মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের করেন জাবিদা।

আদালত সূত্রে খবর, ওই অভিযোগের ভিত্তিতে জাবিদা-সহ ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। ময়না-তদন্তকারী চিকিৎসক, সুরতহালের ম্যাজিস্ট্রেট ও জেল হাসপাতালের চিকিৎসকের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। গভীর ক্ষত ও আঘাতজনিত কারণেই আলমের মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকেরা সাক্ষ্য দেন। এমনকী, ভারী কোনও বস্তু দিয়ে আঘাত করার ফলেই ওই ক্ষত বলেও ময়না-তদন্তকারী চিকিৎসক বিচারকের কাছে বয়ান দেন। এর পরে আদালত তদন্তের নির্দেশ দেয়।

নিম্ন আদালতের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে আবেদন করেন গার্ডেনরিচ থানার সংশ্লিষ্ট পুলিশকর্মীরা। নিম্ন আদালতের সব নথি উচ্চ আদালতে জমা করার নির্দেশ দেওয়া হয়। দীর্ঘ দিন ধরে উচ্চ আদালতে মামলা চলতে থাকে। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী আলিপুর আদালতকে ওই বিচার পর্ব দু’দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন। ১৪ এবং ১৫ নভেম্বর ওই মামলার শুনানি। সরকারি আইনজীবী নবকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘এই মামলায় আসল অপরাধীর শাস্তি হওয়া উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন