বছর ঘুরলেও পড়েই রয়েছে অ্যাম্বুল্যান্স

গত জুলাইয়ের গোড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিটে ক্যাম্পাসে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে একটি অ্যাম্বুল্যান্সের উদ্বোধন হয়।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৮ ০৩:১২
Share:

এ ভাবেই রাখা রয়েছে সেই অ্যাম্বুল্যান্স। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে। নিজস্ব চিত্র

বছর ঘুরতে চলল। কিন্তু এখনও চাকা ঘুরল না অ্যাম্বুল্যান্সের। এমনই অভিযোগ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশের। তাঁদের এই অভিযোগের সঙ্গে সহমত তৃণমূল ছাত্র পরিষদ পরিচালিত ছাত্র সংসদও। কারণ ইতিমধ্যেই তারা এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছে। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, এক বার ব্যবহার করা হয়েছিল ওই অ্যাম্বুল্যান্স। কিন্তু এখন আর ‘প্রয়োজন’ পড়ছে না।

Advertisement

গত জুলাইয়ের গোড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিটে ক্যাম্পাসে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে একটি অ্যাম্বুল্যান্সের উদ্বোধন হয়। পড়ুয়াদের অভিযোগ, উদ্বোধনের পর থেকে একই ভাবে পড়ে আছে কয়েক লক্ষ টাকার অ্যাম্বুল্যান্সটি। যদিও অভিযোগ মানতে নারাজ উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ‘‘সম্ভবত এক বার ব্যবহার হয়েছিল। এক জন পড়ুয়া অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। আমায় ফোন করে জানানোর পরেই সেটি ব্যবহার করতে বলে দিয়েছিলাম।’’

পড়ুয়াদের অভিযোগ, প্রয়োজন হলে অ্যাম্বুল্যান্সটি ব্যবহার করতে পড়ুয়ারা কী ভাবে যোগাযোগ করবেন, তা নিয়ে তাঁদের কিছু জানানো হয়নি। সোনালিদেবীর দাবি, ‘‘অ্যাম্বুল্যান্সের চাবি আমাদের ডেপুটি রেজিস্ট্রারের কাছে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ১১ জন চালক আছেন, তাঁদের বলাও আছে। অ্যাম্বুল্যান্সটি রক্ষণাবেক্ষণও করা হয়।’’

Advertisement

এ বিষয়ে ছাত্র সংসদের তরফে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক লগ্নজিতা চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, ‘‘অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য কী ভাবে এবং কার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে, তা জানানোর আবেদন জানিয়ে কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল।’’ সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ সেই চিঠির উত্তর দেননি। মুখ খুলতে নারাজ ছাত্র সংসদের পদাধিকারীরা। উপাচার্যের দাবি, ‘‘ছাত্র সংসদের তরফে কোনও চিঠি পাইনি।’’ তবে প্রয়োজনে ফের কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাতে পারে ছাত্র সংসদ।

কয়েক দিন আগে উত্তর কলকাতার একটি হস্টেলে পেটের ব্যথায় কাতর হয়ে পড়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পড়ুয়া। সূত্রের খবর, বিশ্ববিদ্যালয়ের
অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য কী ভাবে যোগাযোগ করা হবে, তা জানা না থাকায় অন্য গাড়িতে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয় ওই পড়ুয়াকে। এক পড়ুয়ার বক্তব্য, ‘‘আমাদের সুবিধার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আবেদন করা হয়েছিল। তিনি আবেদনে সাড়া দিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সও দেন। অথচ তা ব্যবহার না করে দিনের পর দিন পড়ে রয়েছে।’’

এর মধ্যেই কয়েক দিন আগে সাংসদ কোটায় ফের একটি অ্যাম্বুল্যান্স বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছে। একটি অ্যাম্বুল্যান্সের চাকাই যেখানে ঘুরছে না, সেখানে আরেকটি কী কাজে লাগবে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর চর্চা! যদিও কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রয়োজনে সেটিও ব্যবহার করা হবে।

গত বছরের জুনের গোড়ায় হুগলির তারকেশ্বরে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প়ড়ুয়ারা। তাঁরাই বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস এবং দু’টি অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়ার জন্য দাবি তুলেছিলেন। এর মাস খানেকের মধ্যে বাস পরিষেবা শুরু হয়। গত জুলাইয়ের গোড়ায় একটি অ্যাম্বুল্যান্সও পায় বিশ্ববিদ্যালয়। রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ নাদিমুল হকের সাংসদ তহবিল থেকে এই অ্যাম্বুল্যান্সটি দেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়কে। তৃণমূল সূত্রের খবর, রাজ্যসভার সাংসদদের তহবিলের বিষয়টি দল দেখভাল করে। সাংসদ তহবিলের অর্থে অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়া হলেও এ বিষয়ে সাংসদদের কোনও দায়িত্ব থাকে না। দলের তরফে অর্থ খরচ করতে যে ভাবে সাংসদদের নির্দেশ দেওয়া হয়, সে ভাবেই তাঁরা তহবিলের অর্থ খরচ করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন