University of Calcutta

সংক্রামক রোগ হলে আইডি থেকে পরীক্ষা, বিতর্কে বিশ্ববিদ্যালয়

বেশ কিছু কলেজের অধ্যক্ষের মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ভাবনা বাস্তবসম্মত নয়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রয়েছে হাওড়া, হুগলির একাংশ এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের বহু কলেজ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৪ ০৮:২৮
Share:

সম্প্রতি প্রকাশিত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা সংক্রান্ত নির্দেশিকায় বেশ কিছু নির্দেশের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক উল্লেখ করেছেন, কোনও পরীক্ষার্থী সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হলে তাঁকে পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে দেওয়া উচিত নয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পরামর্শ, সে ক্ষেত্রে ওই পরীক্ষার্থীকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নির্দেশ ঘিরে এ বার দেখা দিয়েছে বিতর্ক।

Advertisement

বেশ কিছু কলেজের অধ্যক্ষের মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ভাবনা বাস্তবসম্মত নয়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রয়েছে হাওড়া, হুগলির একাংশ এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের বহু কলেজ। অধ্যক্ষদের মতে, দূরবর্তী কোনও কলেজের পরীক্ষার্থীকে আইডি হাসপাতালে নিয়ে আসা সম্পূর্ণ অবাস্তব সিদ্ধান্ত হবে। যদিও অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘এটি অনেক দিন আগের নিয়ম।’’ সূত্রের খবর, আগে অ্যাডমিট কার্ডের পিছনে নিয়মগুলি লেখা থাকত। এখন অ্যাডমিট কার্ডের প্রিন্ট আউট নিতে হয়। ফলে, সেটির পিছনে নিয়মাবলী লেখা থাকে না।

নিখিল বঙ্গ অধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি এবং আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কলেজের অধ্যক্ষ পূর্ণচন্দ্র মাইতি জানান, এত দিন সংক্রামক কোনও রোগে কোনও পরীক্ষার্থী আক্রান্ত হলে তাঁকে কলেজেরই একটি আলাদা ঘরে বসিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হত। পরে তাঁর খাতা জীবাণুমুক্ত করে পাঠানো হত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। পূর্ণচন্দ্রের বক্তব্য, ‘‘যদি সাগর বা নামখানা অঞ্চলের কোনও কলেজের পরীক্ষার্থী এ রকম অসুস্থ হয়ে পড়েন, তাঁকে আইডি হাসপাতালে নিয়ে আসা কতটা বাস্তবসম্মত?

Advertisement

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএফআই নেতা মাল্যবান গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘এই নিয়ম যদি আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্যাটিউটে থেকে থাকে, তা অমানবিক। যদি এখন আবার চালু করার চেষ্টা করা হয়, তা-ও অমানবিক।’’ ‘ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস ইউনিটি’র আহ্বায়ক অনীক দে এই ‘অবাস্তবোচিত’ সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, শুধু আইডি নয়, বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্য সরকারি হাসপাতালেও সংক্রামক রোগে আক্রান্ত পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

সম্প্রতি আশুতো‌ষ কলেজের মনস্তত্ত্ব বিভাগের এক ছাত্রী চিকেন পক্সে আক্রান্ত হয়েছিলেন। লেডি ব্রেবোর্ন কলেজ থেকে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন তিনি। তাঁর আইডিতে ভর্তি হয়ে পরীক্ষা দেওয়া এবং লেডি ব্রেবোর্ন থেকে উত্তরপত্র সংগ্রহ করা নিয়ে জটিলতা হয়। তখন অন্তর্বর্তী উপাচার্য জানিয়েছিলেন, বিষয়টি আরও স্পষ্ট করা হবে। সম্প্রতি প্রকাশিত নির্দেশিকায় এরই সঙ্গে পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন-সহ অন্য কোনও ‘‌কমিউনিকেশন ডিভাইস’‌ নিয়ে ঢোকা বারণ এবং আরও বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন