সন্দেহভাজন কোনও ব্যক্তিকে থানায় ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময়েও রাখতে হবে সিসিটিভির নজরদারি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মেটিয়াবুরুজ থানায় জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন এক অভিযুক্তের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরে সব থানার জন্যই এমন নির্দেশ জারি করেছে লালবাজার। বলা হয়েছে, থানার যে অংশে সিসিটিভি রয়েছে, সেখানেই চালাতে হবে জিজ্ঞাসাবাদ। শুধু তা-ই নয়, কোনও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর ছবি এবং বিশদ তথ্য পুলিশের সার্ভারে আপলো়ড করে দিতে হবে।
পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন, সিসিটিভিতে পুরো বিষয়টি রেকর্ড করা থাকলে পরে এ নিয়ে কোনও অভিযোগ উঠলে, নিজেদের সপক্ষে প্রমাণ থাকবে তদন্তকারীদের কাছে। পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু বা কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতেই এমন দাওয়াইয়ের কথা ভেবেছেন কলকাতা পুলিশের শীর্ষ কর্তারা।
একটি চুরির ঘটনার তদন্তে নেমে নাদিয়াল এলাকার বাসিন্দা আকিবুল মোল্লা নামে এক তরুণের কথা জানতে পেরেছিল মেটিয়াবুরুজ থানা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে আকিবুলকে থানায় এনে দোতলার একটি ঘরে বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল। সে সময় তাঁকে ঘরে বসিয়ে রেখে বাইরে গিয়েছিলেন পুলিশকর্মীরা।পুলিশের দাবি, মিনিট দশেক পরে ফিরে এসে তাঁরা দেখেন, ফ্যানে বেল্টের ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছেন ওই তরুণ। ঘটনায় আকিবুলের বা়ড়ির তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। কিন্তু থানার অন্দরে এ ভাবে এক তরুণের মৃত্যুর পরে ডিসি (বন্দর)-কে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
লালবাজার সূত্রের খবর, বিভাগীয় তদন্তে জানা গিয়েছে আকিবুলের বা়ড়ির লোকেরা তাঁকে মাদকাসক্ত বলে জানিয়েছেন। পুলিশের দাবি, সেই রাতে এক দফা জি়জ্ঞাসাবাদের পরে আকিবুলকে এক কনস্টেবলের হেফাজতে রেখে নীচে গিয়েছিলেন তদন্তকারী অফিসার। আচমকাই ওই কনস্টেবল খেয়াল করেন, আকিবুল উত্তেজিত হয়ে উঠছেন (উইথড্রয়াল সিন্ড্রোম বা মাদকের নেশা চাপলে অস্থির হয়ে ওঠা)। তিনি সেই সময় নীচে ডিউটি অফিসারকে ডাকতে যান। মিনিট দশেক পরে ফিরে এসে দেখেন, দেওয়ালে লাগানো ফ্যান থেকে কাপড়ের বেল্টের ফাঁস দিয়ে ঝুলছেন আকিবুল। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের পরনে চামড়ার বেল্ট থাকলে তা খুলে নেওয়া হয়। কিন্তু কাপড়ের বেল্ট দেখে তা খোলা হয়নি।
লালবাজারের এক কর্তা জানিয়েছেন, এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট পুলিশকর্মীদের গাফিলতি এখনও প্রমাণ হয়নি। বিষয়টি নিয়ে বিভাগীয় তদন্ত চলছে।