এ ভাবেই ভাঙা হয়েছে গাড়ির কাচ। সোমবার। — নিজস্ব চিত্র
রাত ২টোর সময়ে এক প্রৌঢ় দম্পতির বাড়ির সামনে যথেচ্ছ শব্দবাজি ফাটিয়ে, গাড়ি ভাঙচুর করে প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে কয়েক জন দুষ্কৃতী তাণ্ডব চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠল। রবিবার লিলুয়ার গদাধর ভট্টনগর রোডের পাশে একটি তিনতলা বাড়ির ঘটনা। মাত্র সপ্তাহ তিনেক আগে ওই ভট্টনগর এলাকাতেই স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা বাসের মধ্যে মদ খেতে না দেওয়ায় তিন-চারটি বাস ভাঙচুর করেছিল দুষ্কৃতীরা। সেটিও ছিল গভীর রাতের ঘটনা। সেই দুষ্কৃতীরা আজও ধরা পড়েনি। এর মধ্যেই এক গৃহস্থ বাড়িতে দুষ্কৃতী-হামলার ঘটনা স্বাভাবিক ভাবেই রাতপাহারায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, দুষ্কৃতীরা আধ ঘণ্টা ধরে একটি বাড়িতে হামলা চালালেও টহলদার পুলিশের দেখা মেলেনি কেন?
কী ঘটেছিল ওই রাতে?
পুলিশ জানায়, বাড়ির মালিক কান্তি সেনগুপ্ত ও তাঁর স্ত্রী সোমা সেনগুপ্ত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়া সেরে ঘুমের ওষুধ খেয়ে রাত ১১টার মধ্যে শুয়ে পড়েছিলেন। গত মার্চে সোমাদেবীর বাইপাস সার্জারি হওয়ায় তিনি প্রায় শয্যাশায়ী। বালি পুরসভার প্রাক্তন কর্মী ৬১ বছরের কান্তিবাবুও অসুস্থ। পুলিশ জানায়, তিনতলা বাড়ির দু’টি তলায় থাকেন ওই প্রৌঢ় দম্পতি এবং এক তলায় থাকেন শেখ আলম নামে তাঁদের এক পরিচারক।
সোমবার ওই দম্পতি জানান, রাত ২টো নাগাদ পরপর দু’টি অচেনা নম্বর থেকে কান্তিবাবুর মোবাইলে ফোন আসে। ফোনের শব্দে সোমাদেবীর ঘুম ভেঙে যায়। তখন বাইরে রাস্তা থেকে প্রচণ্ড শব্দবাজির আওয়াজ শুরু হয়। এর পরেই বাড়ির ঠিক নীচ থেকে কাচ ভাঙার শব্দ হয়। সোমাদেবী বলেন, ‘‘কাচ ভাঙার শব্দের পরেই শুনতে পাই কারা বাড়ির দরজায় লাথি মারছে। এর পরে আওয়াজ শুনে বুঝতে পারি আমাদের গাড়িটাও ভাঙচুর করা হচ্ছে।’’
প্রতি দিনের মতো একতলায় শুয়েছিলেন শেখ আলম। তিনি বলেন, ‘‘জানলার ফাঁক দিয়ে দেখি চার পাঁচ জন ছেলে বাজি ফাটানোর পরে গাড়িটার কাচ ভাঙচুর করে দরজায় লাথি মারছে। ভয়ে আলো জ্বালাইনি।’’
ওই ঘটনার পর থেকেই আতঙ্কে রয়েছেন প্রৌঢ় দম্পতি। কান্তিবাবু বলেন, ‘‘কেন এ রকম আক্রমণ করা হল বুঝতে পারছি না। পাড়ার ক্লাবগুলির সঙ্গে চাঁদা নিয়ে গোলমালও হয়নি। এলাকায় কোনও শত্রুও নেই। তাই কারা আক্রমণ করল বুঝতে পারছি না।’’ সকাল হতেই ওই দম্পতি পুলিশকে খবর দেন। হাওড়ার পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহ বলেন, ‘‘যে ঘটনা ঘটেছে তা অবশ্যই ঠিক হয়নি। রাতে স্থানীয় থানার টহলদারির পরেও এটা কেন ঘটল তা খতিয়ে দেখা হবে।’’