প্রশ্নে পুর-করের নগদ

কর বাবদ ২৫ হাজার টাকার বেশি নগদে গ্রহণ করা যাবে না। কিন্তু পাঁচশো এবং হাজার টাকার নোট বাতিলের পরে সেই নিয়ম না মানা নিয়ে পুরসভার ভূমিকায় প্রশ্ন তুলেছে কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (ক্যাগ)।

Advertisement

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৭ ০০:৩২
Share:

কর বাবদ ২৫ হাজার টাকার বেশি নগদে গ্রহণ করা যাবে না। কিন্তু পাঁচশো এবং হাজার টাকার নোট বাতিলের পরে সেই নিয়ম না মানা নিয়ে পুরসভার ভূমিকায় প্রশ্ন তুলেছে কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (ক্যাগ)। ক্যাগ-এর চিঠিতে বলা হয়েছে, এক করদাতার কাছ থেকে সম্পত্তিকর বাবদ নগদে ৪০ লক্ষ টাকা নিয়েছে পুরসভা। তবে একটি রসিদে নয়। ভেঙে ভেঙে। ওই টাকা নিতে দেড়শো বারেরও বেশি রসিদ কেটেছে পুরসভা। ওই টাকা জমা হয়েছে পুরসভার সাসপেন্স অ্যাকাউন্টে। এই লেনদেন নিয়ম মেনে হয়নি বলেই মনে করছে ক্যাগ। এমন আরও অনেকের থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা এ ভাবে নগদে নেওয়ার বিষয়ও উল্লেখ করেছে ক্যাগ।

Advertisement

পুরসভা সূত্রের খবর, নোট বাতিল হওয়ার পরে ১০ নভেম্বর থেকে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত ১৫ দিনে পুরসভার সাসপেন্স অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে ২৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০ কোটি টাকা নগদে এবং চার কোটি টাকা ড্রাফটে।

পুরসভা সূত্রের খবর, ২০১১-’১২ সালে তাদের নিয়ম ছিল, কর বাবদ এক জনের থেকে নগদে ১০ হাজার টাকার বেশি নেওয়া যাবে না। ২০১২ সালের ১৮ জানুয়ারি মেয়র পারিষদের বৈঠকে সেই নিয়ম বদলে সিদ্ধান্ত হয়, নগদের পরিমাণ ১০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২৫ হাজার করা হবে। সেই মতো ২০১২ সালের পয়লা ফেব্রুয়ারি নগদে নেওয়ার সর্বোচ্চ অঙ্ক ২৫ হাজার টাকা ধার্য হয়।

Advertisement

গত নভেম্বরে বাতিল নোটে সম্পত্তিকর নেওয়ার পরে পুর কমিশনারের কাছে চিঠি পাঠিয়ে ক্যাগ-এর রেসিডেন্ট অডিট শাখা জানতে চায়, কেন ওই নিয়ম ভাঙা হয়েছে? কিন্তু পুরসভা থেকে জবাব যায়নি। মাসখানেক আগে ফের আর এক দফা চিঠি পাঠিয়েছে ক্যাগ। ৭ ফেব্রুয়ারি ক্যাগ-এর লেখা ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, তাঁদের তোলা প্রশ্নের জবাব এখনও মেলেনি। দ্রুত উত্তর দেওয়ার কথাও তাতে বলা হয়েছে।

পুরসভাকে দেওয়া ক্যাগ-এর চিঠিতে সেই নিয়মের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ২০১২ সালে ১০ থেকে ২৫ হাজার টাকা বাড়ানোর সময়ে মেয়র পরিষদের বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এ বার কি নগদে ২৫ হাজারের বেশি টাকা নেওয়ার জন্য মেয়র পরিষদে কোনও সিদ্ধান্ত হয়েছে? যদি হয়ে থাকে, তা হলে মেয়র পরিষদ বৈঠকের অনুমোদনের কপি তাদের কাছে পাঠানো হোক। কেন ওই নিয়মের বদল ঘটানো হল, তা ক্যাগ-কে জানাতে বলা হয়েছে। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে পাঠানো সেই চিঠির জবাব এখনও দেওয়া হয়নি বলেই পুরসভা সূত্রেরই খবর।

পুরসভার কোনও কর্তা এ বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ২৫ হাজারের বেশি টাকা একবারে তো নগদে নেওয়া হয়নি। পুরসভার সার্ভার তা পারমিট করে না। যা হয়েছে পুরসভার নিয়ম মেনেই করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন