Kolkata Metro

ফের সেই মেট্রো, এ বার দুই মহিলার চুলোচুলি গড়াল থানা পর্যন্ত

ট্রেন তত ক্ষণে ময়দান স্টেশনের কাছাকাছি। সেই অবসরে বচসা হাতাহাতি ছাড়িয়ে চুলোচুলিতে ঠেকেছে। চলন্ত ট্রেনের মধ্যেই একে অন্যের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছেন দুই মহিলা যাত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৮ ১৯:৩৪
Share:

চলন্ত মেট্রোতে এই দুই মহিলা যাত্রীই মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন — নিজস্ব চিত্র

ভিড়ে ঠাসা মেট্রো। দমদম থেকে দৌড়চ্ছে কবি সুভাষের দিকে। যাত্রীদের অধিকাংশই অফিস ফেরত। ট্রেন সবে পার্ক স্ট্রিট ছাড়ছে। তার মধ্যেই হঠাৎ মাঝামাঝি একটি কামরার মহিলাদের বসার জায়গা থেকে তুমুল চিৎকার-চেঁচামেচি! মুখ বাড়িয়ে কী হচ্ছে তা বোঝার চেষ্টা করছেন উৎসুক যাত্রীদের কয়েক জন।

Advertisement

যাঁরা ভিড় ঠেলে পৌঁছতে পারলেন না, তাঁরাও শুনতে পেলেন দু’টি মহিলা কণ্ঠের চিলচিৎকার। একে অন্যের উদ্দেশে উগরে দিচ্ছেন বাছাই করা শব্দ। ট্রেন তত ক্ষণে ময়দান স্টেশনের কাছাকাছি। সেই অবসরে বচসা হাতাহাতি ছাড়িয়ে চুলোচুলিতে ঠেকেছে। চলন্ত ট্রেনের মধ্যেই একে অন্যের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছেন দুই মহিলা যাত্রী। এক জন মধ্যবয়সী। অন্য জনের বয়স তিরিশের কোঠায়। ট্রেন ময়দান পৌঁছতেই দ্বিতীয়জন নামার চেষ্টা করলে তাঁর পথ আগলে ব্যাগ টেনে ধরলেন প্রথম জন।

শেষ পর্যন্ত দু’জনেই নামলেন যতীন দাস পার্কে। সেখানে বাকি যাত্রীরা খবর দিলেন মেট্রোর কর্মীদের। ফোন করা হল ভবানীপুর থানায়। দু’জনেই পৌঁছলেন থানায় অভিযোগ জানাতে। এঁদের এক জন সন্দীপা মিত্র। বাড়ি চেতলা এলাকায়। দমদম পুরসভার কর্মী। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার দমদম মেট্রো স্টেশন থেকে ৪টে ১১ মিনিটের ট্রেন ধরেন তিনি। তাঁর সামনেই দাড়িয়ে ছিলেন অন্য এক মহিলা যাত্রী। সন্দীপার অভিযোগ, “সামনের মহিলা যে ভাবে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাতে আমার অসুবিধা হচ্ছিল। তাই আমি ওনাকে সরে দাঁড়াতে বলি। সেটা বলতেই তিনি আমাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। প্রতিবাদ করতেই আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে মারধর শুরু করেন।” সন্দীপার অভিযোগ, ওই মহিলা যাত্রীর মারে গলায়, ঘাড়ে চোট পেয়েছেন তিনি। তাঁর জিনিসপত্রও নাকি খোয়া গিয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন
এক সপ্তাহ ধরে দেরিতে চলবে মেট্রো

পাল্টা অভিযোগ করেছেন অন্য যাত্রী নবনীতাও। হরিদেবপুরের বাসিন্দা এই যাত্রীও মধ্য কলকাতায় একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। বাড়ি ফিরছিলেন তিনিও। পুলিশকে নবনীতা জানিয়েছেন, ভিড় ট্রেনে তাঁর দাঁড়াতে অসুবিধা হচ্ছিল। তার মধ্যেই সন্দীপা সরে দাঁড়াতে বলছিলেন বার বার। ভিড়ের কথা বলায় সন্দীপা অকারণে গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ। আর তার প্রতিবাদ করাতেই নাকি মারধর করা হয়।

দুই যুযুধান মহিলার এই লড়াই থানাতে গিয়ে থেমে থাকেনি। দু’জনেই তুলকালাম শুরু করেন থানার মধ্যেই। শেষ পর্যন্ত পরিস্থতি সামাল দিতে দুই পক্ষকেই অভিযোগ দায়ের করতে বলে পুলিশ। এফআইআর, পাল্টা এফআইআর নথিভুক্ত করে কোনওমতে রেহাই পেয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন দুঁদে পুলিশ অফিসাররাও। তাঁদেরই এক জনের উক্তি: “খুব ছোট ছোট ঘটনাতেও মানুষ অসহিষ্ণু হয়ে উঠছেন। আর সহযাত্রীরা যদি একটু সক্রিয় হতেন, তা হলে ঘটনা এত দূর গড়াতেই পারত না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন