ছাগল-মোষ চুরি চক্রের সন্ধান

এক পাল ছাগল চুরির তদন্তে নেমে ছাগল-মোষ-গরু চুরির একটি আন্তর্জাতিক চক্রের সন্ধান পেল পুলিশ। পুলিশের দাবি, ওই চক্রটির পাণ্ডা দক্ষিণ ২৪ পরগণার উস্তি এলাকার এক জন মাংস ব্যবসায়ী।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৬ ০০:২৫
Share:

এক পাল ছাগল চুরির তদন্তে নেমে ছাগল-মোষ-গরু চুরির একটি আন্তর্জাতিক চক্রের সন্ধান পেল পুলিশ। পুলিশের দাবি, ওই চক্রটির পাণ্ডা দক্ষিণ ২৪ পরগণার উস্তি এলাকার এক জন মাংস ব্যবসায়ী। এ ছাড়া, ওই চক্রের সঙ্গে জড়িত রয়েছে এলাকার বেশ কয়েক জন যুবকও। তারা এই শহর এবং অন্য এলাকা থেকে রাতের অন্ধকারে ছাগল-মোষ চুরি করে এনে বাংলাদেশ-সহ বিভিন্ন জায়গায় পাচার করত বলে জেনেছেন তদন্তকারীরা। মঙ্গলবার ফলতার দস্তিপুর পুলিশ ক্যাম্প এলাকা থেকে চুরি হওয়া বেশ কয়েকটি ছাগল উদ্ধার হলেও ওই চক্রের মূল পাণ্ডা-সহ সকলেই পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

কী ভাবে মিলল এই চক্রের সন্ধান?

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার ভোরে হেস্টিংস থানা এলাকার খিদিরপুর রোড দিয়ে প্রায় ২৫টি ছাগলের পাল নিয়ে রাজাবাজার থেকে মহেশতলা যাচ্ছিল আরাফত এবং আকবর নামে দুই কিশোর। রেস কোর্সের কিছু আগে তাদের রাস্তা আটকে একটি পিক আপ ভ্যান থেকে নামে চার যুবক। কিশোরেরা কিছু বোঝার আগেই অস্ত্র দেখিয়ে তাদের কাবু করে রাস্তার পাশে গাছের সঙ্গে বেঁধে ফেলে দুষ্কৃতীরা। এর পরে ওই সমস্ত ছাগল গাড়িতে তুলে ট্রাফিক আইন ভেঙে খিদিরপুর রোড থেকে লার্ভাস লেন ধরে আলিপুরের দিকে চলে যায় দুষ্কৃতীরা। পরে হেস্টিংস থানায় লুঠের অভিযোগ দায়ের করে ওই কিশোরেরা। পুলিশ সূত্রের খবর, চলতি মাসেই আলিপুর থানা এলাকার চেতলাহাট থেকে ছাগল চুরির ঘটনা ঘটেছিল। তাতেও কেউ গ্রেফতার হয়নি। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, এই দু’টি ঘটনার পিছনে একই চক্র রয়েছে।

Advertisement

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, সিসিটিভির ফুটেজে গাড়িটিকে দেখা গেলেও সেটির নম্বর প্লেট অস্পষ্ট থাকায় তা কোনও ভাবে চিহ্নিত করা যায়নি। তবে সিসিটিভি থেকে গোয়েন্দারা বুঝতে পারেন দক্ষিণ ২৪ পরগণার দিকে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। সেই মতো তাঁরা খোঁজখবর নিতে শুরু করেন। তখনই জানা যায় উস্তি এলাকার বাসিন্দা ওই ব্যবসায়ীর কথা। তবে সোমবার রাতে তদন্তকারীরা সেখানে হানা দিলেও খোঁজ পাননি ওই ব্যবসায়ীর। পুলিশ খোঁজ পেয়েছে জানতে পেরে ফলতা থানা এলাকার দস্তিপুরে প্রায় ১৪টি ছাগল ফেলে রেখে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। তদন্তকারীরা সেগুলিকে উদ্ধার করে কলকাতায় নিয়ে আসেন।

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, চক্রের পাণ্ডা এলাকায় বড় ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তার একটি মাংসের দোকান রয়েছে। প্রায় শ’খানেক যুবক তার সঙ্গে ওই চক্রে জড়িত বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।

কী ভাবে অপারেশন করে এই চক্রটি?

সম্প্রতি লালবাজারের এক পুলিশকর্তা জানিয়েছেন, ওই ব্যবসায়ীর নিয়ন্ত্রণাধীন চক্রের সদস্যেরা বাঁকুড়া-মেদিনীপুর পর্যন্ত চলে যেত গাড়ি নিয়ে। মূলত রাতের দিকে গাড়ি নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে সুযোগ মতো গরু-মোষ বা ছাগল চুরি করত তারা। এর পরে ভোরের দিকে ফিরে আসত এলাকায়। চুরি করা ছাগল তারা এলাকায় কম দামে বিক্রি করলেও গরু বা মোষ বাংলাদেশে পাচার করা হত বলে দাবি তদন্তকারীদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন