শিশুমনের রক্ষায় কমিটি এ বার প্রতি শ্রেণিতে

কোনও ক্ষেত্রে দুষ্টুমির মাত্রা এতটাই বেশি হয় যে তা অভিভাবকদের স্তরেও পৌঁছয়। আবার অনেক দুষ্টুমি কচি মনে গভীর ক্ষত তৈরি করে।

Advertisement

সুপ্রিয় তরফদার

শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৮ ০২:৪৪
Share:

স্কুলে পড়ুয়াদের একে অন্যকে উত্ত্যক্ত (বুলিয়িং) করার প্রবণতা রুখতে আগেই কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল সেন্ট্রাল বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশন (সিবিএসই)। সেই নির্দেশ মতো বেশ কয়েকটি স্কুল এই কমিটি তৈরিও হয়েছে। এ বার এক ধাপ এগিয়ে প্রতি ক্লাসে স্বতন্ত্র ‘অ্যান্টি বুলিয়িং কমিটি’ গঠন করেছেন এপিজে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এপ্রিলে শুরু হওয়া এই ব্যবস্থায় হাতেনাতে সুফল মিলছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।

Advertisement

শিক্ষকদের মতে, পড়ুয়ারা স্কুলে খেলাধুলোর পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে দুষ্টুমিও করে। এটা স্বাভাবিক। কোনও ক্ষেত্রে দুষ্টুমির মাত্রা এতটাই বেশি হয় যে তা অভিভাবকদের স্তরেও পৌঁছয়। আবার অনেক দুষ্টুমি কচি মনে গভীর ক্ষত তৈরি করে। সে সব রুখতেই বিভিন্ন ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ‘অ্যান্টি বুলিয়িং’ কমিটি গঠন হয়েছে। সাধারণত স্কুলগুলি বিভিন্ন শ্রেণির পড়ুয়াদের নিয়ে একটিই কমিটি গঠন করে। পড়ুয়াদের উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ খতিয়ে দেখে সেই কমিটি শিক্ষকদের সঙ্গে পরামর্শ করে।

এই জায়গাটাই আরও একটু বিশদ ভাবে ভাবছে পার্ক স্ট্রিটের ওই স্কুল। স্কুলের প্রিন্সিপাল রীতা চট্টোপাধ্যায় জানান, তৃতীয় শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রতি ক্লাসে একটি করে ‘অ্যান্টি বুলিয়িং কমিটি’ তৈরি হয়েছে। আট জন পড়ুয়াকে নিয়ে এক-একটি কমিটি। তারাই ক্লাসের দেখাশোনার দায়িত্বে থাকছে। কোনও পড়ুয়া উত্ত্যক্ত করলে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়া সেই অভিযোগ ওই কমিটিকে জানায়। অভিযু্ক্ত ও অভিযোগকারীর সঙ্গে আলোচনা করে খাতায় সই করায় কমিটি। সেই রিপোর্ট যায় শিক্ষকের কাছে। আলোচনার ভিত্তিতে মিটে গেলেও শিক্ষকদের তা জানায় কমিটি। তার ভিত্তিতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের দাবি, কমিটি তৈরির পর থেকে পড়ুয়াদের মধ্যে দায়িত্ববোধ বাড়ছে। ‘‘অনুভূতিপ্রবণ শিশুমনের কথা ভেবেই শ্রেণিভিত্তিক কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।’’— বলেন রীতাদেবী।

Advertisement

হেরিটেজ স্কুলের প্রিন্সিপাল সীমা সাপ্রু জানাচ্ছেন, বিভিন্ন ক্লাসের পড়ুয়াদের নিয়ে পাঁচ বছর আগেই তাঁরা এই কমিটি গঠন করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রয়োজনে ওই কমিটি কোনও পড়ুয়াকে বহিষ্কারের সুপারিশও করতে পারে।’’ প্রতি ক্লাসে কমিটি গঠনকে সমর্থন করছেন তিনি। মহাদেবী বিড়লা ওয়ার্ল্ড অ্যাকাডেমির প্রিন্সিপাল অঞ্জনা সাহা বলছেন, ‘‘আমাদেরও এই কমিটি রয়েছে। তবে এ ধরনের অভিযোগ বেশি আসে না। তাই পৃথক কমিটির প্রয়োজন নেই।’’

সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পাপিয়া সিংহমহাপাত্র বলেন, ‘‘এ ধরনের অভিযোগ না আসায় এমন কমিটি আমাদের নেই।’’ স্কুলশিক্ষা দফতর জানাচ্ছে, গত অক্টোবরেই প্রতি স্কুলে যে কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে, তারাই এ ধরনের অভিযোগ দেখবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন