সিসিটিভি-সূত্রে ধৃত বাইক চুরি চক্রের ৩

মোটরবাইক চুরির সময়ে কখনও লোকজন এসে পড়লেও কিছু বোঝার উপায় ছিল না। চুরির কায়দা ছিল এমনই। কিন্তু সিসিটিভি ক্যামেরার নজরদারিকে ফাঁকি দিতে পারেনি চোরেরা।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৬ ০০:৪৮
Share:

মোটরবাইক চুরির সময়ে কখনও লোকজন এসে পড়লেও কিছু বোঝার উপায় ছিল না। চুরির কায়দা ছিল এমনই। কিন্তু সিসিটিভি ক্যামেরার নজরদারিকে ফাঁকি দিতে পারেনি চোরেরা। ওই ফুটেজের সূত্র ধরেই চুরি চক্রটির খোঁজ পেল ওয়াটগঞ্জ থানার পুলিশ। শুক্রবার রাতে ধরা পড়ল চক্রের পাণ্ডা-সহ তিন জন। উদ্ধার হল চুরি যাওয়া ৮টি মোটরবাইক।

Advertisement

কলকাতা পুলিশের আধুনিকীকরণ প্রকল্পে শহর জুড়ে সব রাস্তায়, অন্তত সব বড় রাস্তায় সিসিটিভি বসানো একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। পুলিশের বক্তব্য, যত বেশি সিসিটিভি বসবে, ততই সুবিধে হবে নিরাপত্তা ও যান শাসনের ক্ষেত্রে, অপরাধের কিনারাও সহজ হবে। মোটরসাইকেল চুরির এই চক্রটির হদিস পেতেও সিসিটিভি-র গুরুত্ব ফের প্রমাণিত বলেই মত তদন্তকারীদের।

তবে চুরির কিনারায় সাহায্য করেছে যে সিসিটিভি, সেটি সরকারি বা পুলিশের নয়। তা দোকানদার দোকানের সামনে লাগিয়েছিলেন। আর এই চক্রের ভুলটা ছিল, চুরির সময়ে হেলমেট খুলে রাখা। কাজেই, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় তাদের মুখ। তার মধ্যে এক জনের ছবি খিদিরপুরের মনসাতলা লেন ও আশপাশের কয়েক জন ‘সোর্স’কে দেখালে তার পরিচয় জানতে পারেন তদন্তকারীরা। তা ছাড়া, সিসিটিভি ফুটেজ থেকেই পাওয়া যায় সেই মোটরবাইকের নম্বর, যাতে চেপে চোরেরা এসেছিল। তার পরেই চক্রটির হদিস মেলে। ওই মনসাতলা লেনে একটি মোটরবাইক চুরি হওয়ার অভিযোগ জুলাইয়ে দায়ের করা হয় ওয়াটগঞ্জ থানায়।

Advertisement

শুক্রবার রাতে তিলজলা থেকে পাকড়াও করা হয় শেখ ফরিদুদ্দিন নামে ওই চক্রের পান্ডাকে। তার আগেই ফরিদুদ্দিনের দুই শাগরেদ, রাজা সিংহ ও বিশু দাসকে গ্রেফতার করা হয়। তবে পুলিশের দাবি, ওই চক্রে দুই নাবালক আছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।

পুলিশ জানায়, আঠেরো বছরের কম বয়সী ওই দু’জনই রাস্তায় ঘুরে ঘুরে ‘টার্গেট’ বেছে নিত। তার পর সুযোগ বুঝে নিজেরা মোটরবাইকে চড়ে হাজির হত এক সময়ে। দু’জনের এক জন তার পর নেমে ওই মোটরবাইকে বসত। ‘মাস্টার কি’ দিয়ে লক খুলে চোরাই মোটরবাইকে চেপেই চম্পট দিত। এমন ভাবে দুষ্কৃতীরা কাজ করত যে, আশপাশে লোক এসে গেলেও মনে হত, তারা নিজেদের মোটরবাইকে
স্টার্ট দিচ্ছে।

তদন্তকারীরা জেনেছেন, চোরাই বাইকগুলি নিয়ে যাওয়া হত কসবা, তিলজলা,তপসিয়া এলাকার বিভিন্ন গ্যারাজে। প্রথম ছ’মাস সেগুলো বিক্রি করা হত না। কারণ, সদ্য চুরির পর প্রথম ছ’মাস জোরদার পুলিশি তল্লাশি চলে। তার পর চোরাই বাইকগুলো নতুন রং করে নতুন নম্বর প্লেট লাগানো হত। এর পরে সেগুলিকে পাচার করা হত
রাজ্যের অন্যত্র। এমনকী, বনগাঁ-বসিরহাট সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশেও পাচার করা হত বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন