দুর্ঘটনা: এনআরএসে এই শয্যার উপরেই ভেঙে পড়ে সিলিং ফ্যানটি।
সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর মাথায় ভেঙে পড়ল সিলিং ফ্যান! মঙ্গলবার ওই ঘটনা ঘটেছে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অল্পের জন্য বড় অঘটনের হাত থেকে বেঁচে গিয়েছেন সন্তোষ দাস নামে কিডনির অসুখে আক্রান্ত ওই রোগী। হাসপাতাল সূত্রের খবর, পাখার ব্লেডের আঘাতে সন্তোষবাবুর মাথা ফুলে গিয়েছে। কানের পাশে মাথাতেও আঘাত লেগেছে।
মেল মেডিসিন ওয়ার্ডের ছ’নম্বর ইউনিটে ভর্তি রয়েছেন এন্টালি থানার অন্তর্গত বেঙ্গল পটারি এলাকার বাসিন্দা সন্তোষবাবু। কিডনির রোগে আক্রান্ত প্রৌঢ়ের ডায়ালিসিস চলছে। এ দিনও তাঁর ডায়ালিসিস হওয়ার কথা ছিল। ওয়ার্ডের অন্য রোগীর পরিজনেরা জানান, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ ৮৬ নম্বর শয্যায় বসে ছিলেন সন্তোষবাবু। আচমকা বিকট শব্দে তাঁর মাথার উপরে ঘুরতে থাকা সিলিং ফ্যানটি মাটিতে আছড়ে পড়ে। শব্দ শুনে অন্য রোগীরা চমকে ওঠেন। একটু ধাতস্থ হয়ে তাঁরা দেখেন, নিজের বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন সন্তোষবাবু। তেহট্টের বাসিন্দা এক রোগীর পরিজনের কথায়, ‘‘ভাগ্যিস, পাখার চাকতি ওই রোগীর মাথায় লাগেনি। তবে পাখার ব্লেডে যে ভাবে উনি জখম হয়েছেন, তা-ও কম নয়।’’
এই ঘটনার পরে সন্তোষবাবুর আঘাত গুরুতর কি না, তা পরীক্ষা করেন চিকিৎসকেরা। ওই প্রৌঢ়ের পরিজনেরা জানিয়েছেন,
সন্তোষবাবুর সিটি স্ক্যান ও এমআরআই করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ দিন দুপুরে স্বামীর সিটি স্ক্যান করানোর জন্য প্রয়োজনীয় নথির অপেক্ষায় থাকা স্ত্রী উমা দাস বলেন, ‘‘কয়েক দিন ধরেই ওই ফ্যান থেকে বিকট শব্দ হচ্ছিল। ওয়ার্ডের কর্মীদের ডেকে তা দেখিয়েছিলাম। এ দিন ঘটনার সময়ে ওয়ার্ডে আমার ছেলে ছিল। আমি থাকলে বিকট আওয়াজ শুনেই ফ্যানের সুইচ বন্ধ করে দিতাম। যদি ফ্যানের চাকতি আমার স্বামীর মাথার উপরে ভেঙে পড়ত, তা হলে যে কী হত!’’ ছেলে সৃজন দাস জানান, ‘‘রাতে বাবার সিটি স্ক্যান, এমআরআই হবে। রিপোর্ট এলে আঘাত কতখানি গুরুতর, তা বোঝা যাবে।’’
ঘটনার পরে আহত সন্তোষ দাস। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
হাসপাতালের সুপার সৌরভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, জখম ব্যক্তির আঘাত গুরুতর নয়। আগামী দিনে এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে, তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের বলা হয়েছে।’’