Kolkata Police

রাতের কলকাতায় পুলিশের বাইক অভিযান ঘিরে তুলকালাম মল্লিকবাজার

আর সেই অভিযোগ ঘিরে সোমবার রাতে তুলকালাম পরিস্থিতি তৈরি হল মল্লিকবাজার মোড়ে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৯ ১৫:২২
Share:

বেপরোয়া বাইক ধরতে পুলিশের অভিযান। ছবি: কলকাতা পুলিশের ফেসবুক পেজ থেকে।

দিনদুপুরে ২১ জুলাইয়ের মিছিলে হেলমেট ছাড়াই বাইক নিয়ে শহরের রাস্তা দাপিয়েছিল কয়েকশো যুবক। তাঁদের ধরতে না পারার অভিযোগে ইতিমধ্যেই বিদ্ধ কলকাতা পুলিশ। তার মধ্যেই ফের এক বার অভিযোগ উঠল রাতের কলকাতায় বাইক ধরার নামে চালকদের প্রাণ বিপন্ন করছে পুলিশ। আর সেই অভিযোগ ঘিরে সোমবার রাতে তুলকালাম পরিস্থিতি তৈরি হল মল্লিকবাজার মোড়ে।

Advertisement

বেপরোয়া বাইক চালকদের পাকড়াও করতে প্রায় দেড়মাস ধরে শহরের রাস্তায় বিশেষ অভিযান চালাচ্ছে কলকাতা পুলিশ। মূলত শহরের কিছু নির্দিষ্ট মোড় নাকা বন্দি করে রাতে এই বাইক চালকদের পাকড়াও করছে পুলিশ।সোমবার রাতেও এরকমই নাকা চেকিং চলছিল মল্লিক বাজার মোড়ে। পুলিশ সূত্রে খবর, রাত ১২টা নাগাদ মৌলালির দিক থেকে একটি বাইক আসছিল। চালকের মাথায় হেলমেট ছিল না। শেক্সপিয়র সরণি থানা এবং ট্রাফিক পুলিশের যৌথ বাহিনী বাইকটিকে গার্ডরেল দেওয়া নাকা তল্লাশির জায়গায় থামতে বলে। পুলিশের অভিযোগ, বাইকের চালক না থেমে গতি বাড়িয়ে প্রথম গার্ডরেলটি টপকে পালিয়ে যান। এরপরেই দ্বিতীয় গার্ডরেলের কাছে চালক বাইকশুদ্ধ পড়ে যান।পুলিশের দাবি, পালানোর সময় গতি বাড়িয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন ওই বাইকচালক। এর পরেই গার্ডরেলে ধাক্কা মেরে পড়ে গিয়ে সামান্য আঘাত পান তিনি। পুলিশ সূত্রে খবর, আহত বাইক চালকের নাম শেখ আদিল। ওয়াটগঞ্জ এলাকায় বাড়ি।

কিন্তু ঘটনার পরেই ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। গুজব রটে যায়, পুলিশের তাড়া খেয়ে বাইক নিয়ে পালাতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন ওই যুবক। গুজবের জেরে ওই মাঝরাতেই কয়েকশোমানুষ জমায়েত হন ঘটনাস্থলে। পুলিশের সঙ্গে রীতিমতো ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। জমায়েতে শামিল হন ওয়াটগঞ্জ এলাকার প্রচুর যুবকও। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে চলে আসে বড় পুলিশ বাহিনী। পুলিশ উত্তেজিত জনতাকে বোঝানোর চেষ্টা করে যে, ওই যুবক মারা যাননি। সামান্য আহত হয়েছেন এবং চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন। উত্তেজিত জনতা জমা হয় হাসপাতালের সামনেও। প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও সোমবার রাতের ঘটনায়পুলিশি অভিযান নিয়ে বিতর্ক তৈরি করেছে।

Advertisement

কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা বলেন,‘‘নাকা চেকিংয়ের সময় বেপরোয়া বাইক ধরতে গিয়ে কড়েয়াতে আহত হন এক পুলিশ কনস্টেবল। অন্যদিকে মৌলালিতে নাকা এড়িয়ে পালাতে গিয়ে আহত হন এক বাইকচালক। পর পর ওই দু’টি ঘটনা দেখে পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা নিজেই নির্দেশ দিয়েছিলেন অহেতুক বেপরোয়া বাইক চালককে তাড়া করে চালক বা পুলিশ কর্মীদের প্রাণের ঝুঁকি নেওয়ার প্রয়োজন নেই।” সেই নির্দেশের পর এই ঘটনা অভিযানের মূল উদ্দেশ্য বানচাল করবে বলে মন্তব্য করেন কয়েক জন পুলিশ আধিকারিক।

খবর দিল ফেসবুক, পিকনিক গার্ডেনে যুবকের আত্মহত্যা রুখল পুলিশ

আহত যুবক যে এলাকার সেখানকার বাসিন্দাদের দাবি, পুলিশ আদিলকে ধরতে না পেরে গার্ডরেলটি ঠেলে দেয় বাইকটিকে লক্ষ্য করে। সেই কারণেই দুর্ঘটনা। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশের বেপরোয়া মনোভাবের জন্য প্রাণ যেতে পারত আদিলের। একইসঙ্গে তাঁরা অভিযোগ তুলেছেন, ২১ জুলাইয়ের রাজপথে কয়েকশো বাইকচালক দাপিয়ে বেড়িয়েছে। দিনদুপুরে সেই দাপানোর ঘটনায় কাোনও ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি পুলিশকে।তবে এ বিষয়ে ডিসি (দক্ষিণ) মীরাজ খালেদ বলেন,‘‘কেউ আমাদের কাছে এ বিষয়ে কোনও অভিযোগ করেননি।” তবে শীর্ষ পুলিশ কর্তাদের মতে, বিতর্ক এড়াতেই পুলিশের এত ঝুঁকি না নেওয়াই ভাল।

আদিলের পরিবার কোনও অভিযোগ না করলেও, কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীকে হেনস্থা করা, কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে একটি মামলা শুরু করেছে বেনিয়াপুকুর থানার পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন