ফাইল চিত্র
দুষ্কৃতীদের হাতে সাড়ে চার বছর আগে হেনস্থা হয়েছিলেন রাজাবাগান এলাকার তালপুকুর আরা হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক কাজি মাসুম আখতার। তাঁর অভিযোগ ছিল, মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হিসেবে প্রার্থনায় জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া চালু করার জন্যই হেনস্থার শিকার হতে হয় তাঁকে। দুষ্কৃতীরা তাঁকে মারধরও করেছিল বলে অভিযোগ।
এত দিন পরে সেই মামলায় চার্জশিট দিল পুলিশ। সম্প্রতি আলিপুর আদালতে বন্দর এলাকার রাজাবাগান থানার পুলিশ চার্জশিটে দুই ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেছে।পুলিশের কাছে মাসুমের অভিযোগ ছিল, তিনি মাদ্রাসায় ২০১২ সালে যোগ দেওয়ার কয়েক মাস পরেই মিড-ডে মিল দেওয়া নিয়ে তাঁর সঙ্গে প্রথমে বিরোধ বাধে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের। তারও বছর দুয়েক পরে, ২০১৫ সালের মার্চ মাসে কয়েক জন দুষ্কৃতী তাঁকে আক্রমণ করে বলে মাসুম পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। তিনি জানিয়েছেন, সেই সময়ে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। এই ঘটনার পরে তিনি আর কখনওই ওই মাদ্রাসায় ঢুকতে পারেননি। পরে ২০১৬ সালে তাঁকে কাটজুনগরের একটি স্কুলে বদলি করে দেওয়া হয়।মাসুমের কথায়, ‘‘আমি দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। দুষ্কৃতীদের কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে এই মামলায় দু’বার পুলিশ আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছিল। দু’বারই আমি পুনর্তদন্তের আবেদন জানাই। আদালত আমার আবেদন মেনে আবার তদন্তের নির্দেশ দেয়।’’ শেষে রাজাবাগান থানার অতিরিক্ত ওসি পদমর্যাদার এক অফিসার ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তদন্তে নামেন। আদালতে জমা দেওয়া রিপোর্টে সেই পুলিশ অফিসার জানিয়েছেন, সেই সময়ের সাক্ষীদের সঙ্গে কথা বলে, অন্যদের
বয়ান নিয়ে দুই ব্যক্তির নাম ও পরিচয় জানা গিয়েছে। তাঁরাই মাসুমের উপরে আক্রমণে মূল অভিযুক্ত। বাকিদের খোঁজ পাওয়া যায়নি। অভিযুক্ত দু’জনকে অবশ্য এখনও গ্রেফতার করা হয়নি।
মাসুমের দাবি, শুধু জাতীয় সঙ্গীত চালু করা নয়, বাল্যবিবাহ বন্ধ করার চেষ্টা, মাদ্রাসায় স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন পালনের চেষ্টা, সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে পত্রিকায় লেখালেখির কারণে তাঁর উপরে এই আক্রমণ করা হয়েছিল। মাসুমের দাবি, সে সময়ে পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে হাওড়ার আমতা থানা এলাকার বসন্তপুরে নিজের গ্রামে ঢোকাও বন্ধ হয়ে যায় তাঁর।