‘মেড ইন চায়না’ দ্যুতিতে উজ্জ্বল বাজার

চিনা আতসবাজি নিষিদ্ধ। তাতে কী! দীপাবলির বাজারে এ বারও ‘মেড ইন চায়না’রই জয়জয়কার। সস্তার চিনা বাজির কাছে মার খাচ্ছিল দেশি আতসবাজি। চিনা বাজিতে পুলিশি নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে তার পরেই।

Advertisement

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৬ ০২:০৩
Share:

ধনতেরসের কেনাকাটা। রবিবার, বউবাজারে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

চিনা আতসবাজি নিষিদ্ধ। তাতে কী! দীপাবলির বাজারে এ বারও ‘মেড ইন চায়না’রই জয়জয়কার।

Advertisement

সস্তার চিনা বাজির কাছে মার খাচ্ছিল দেশি আতসবাজি। চিনা বাজিতে পুলিশি নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে তার পরেই। কালীপুজোর আগে শেষ রবিবারের বাজার অবশ্য উজ্জ্বল চোখ-ধাঁধানো চিনা আলোতেই। সাদামাটা মাটির প্রদীপ বা মোমঠাসা লাল-সোনালি প্রদীপের সঙ্গেই টক্কর জমেছে ‘ঝিকপিক’, ‘ডিস্কো’, ‘জবা ফুল’, ‘দো রঙা’দের।

এ বছর বাজারে নবাগত ‘ঝিকপিক’। টুনি লাইটের মতোই ছোট্ট বাল্বগুলো থেকে একসঙ্গে সাত-আট রকম রঙের আলো জ্বলছে-নিভছে। নতুন, তাই তাকে ঘিরে আগ্রহও সবচেয়ে বেশি। তবে ‘ঝিকপিক’-এর সঙ্গে সমানতালে বাজার মাতাচ্ছে পুরনো চিনা আলো ডিস্কো বা জবা ফুল।

Advertisement

চাঁদনি মার্কেটে রবিবার আলো কিনতে এসেছিলেন শোভাবাজারের অরূপ চট্টোপাধ্যায়। মাটির প্রদীপ কিনেছেন, নিয়েছেন ডিস্কো লাইটও। তাঁর কথায়, ‘‘কালীপুজোর আগের দিন, ভূত-চতুর্দশীর রাতে বাড়িতে চোদ্দো প্রদীপ না জ্বালালে মা খুব রাগারাগি করেন। সে তো সাবেক মাটির প্রদীপ। মেয়ের আবার বায়না রংবাহারি লাইটের। দু’জনের সাধ মেটাতে দু’রকমই কিনলাম।’’

চিনা আলোর এই রমরমা কেন?

ক্রেতাদের একাংশ বলছেন, এক দিকে কম দাম, অন্য দিকে উজ্জ্বলতা, দুই-ই চিনা আলোর প্রতি মানুষের ঝোঁক বাড়িয়েছে। এ বছরও মাটির সাদামাটা প্রদীপের দাম তিন-চার টাকা পিস। কিন্তু সেই প্রদীপ লাল-নীল-সোনালি রঙে সেজে উঠলেই দাম বেড়ে হচ্ছে পিস প্রতি পনেরো-আঠেরো টাকা। প্রতিটি মোম দেওয়া প্রদীপের দাম ২৫ টাকা। সেখানে চিনা আলোর দাম প্যাকেট পিছু ৭০ থেকে দেড়শো টাকা। এক প্যাকেটেই সেজে উঠছে গোটা বারান্দা।

সাধ-সাধ্যের মেলবন্ধন বেনেপাড়াতেও। উত্তর ভারতীয় ধনতেরাসের পার্বণ ইদানীং বাঙালির নিজস্ব উৎসব হয়ে গিয়েছে। সোনার গয়নার দোকানগুলিতে গত এক সপ্তাহ ধরেই বিশেষ ছাড়। পসরায় হাল্কা, ছিমছাম গয়না। লক্ষ্মীলাভের টানে তাই বৌবাজারের সোনার দোকানগুলোতে ঘুরপাক খাচ্ছে ভিড়।

মায়ের জন্য হিরের আংটি কিনতে দোকানে পৌঁছে গিয়েছিলেন বছর তেইশের পল্লবী সেন। সদ্য চাক়রিতে যোগ দিয়েছেন। ডিসকাউন্টের টানেই ছুটির দিনে হাজির। ‘‘প্রথম মাসের মাইনে দিয়ে মা কে গিফ্ট দেব। এই সময়ে গয়নার দোকানগুলোয় এত ছাড় থাকে বলে খুব সুবিধে হল!’’

কালীপুজোর পরপরই ভাইফোঁটা। তার দিকে তাকিয়ে শহরের মিষ্টির দোকানগুলো কোমর বেঁধে তৈরি। সাবেক রসগোল্লা, সন্দেশ, রাবড়ির পাশাপাশি থাকছে ফিউশন মিষ্টিও। ভাইদের রসনাতৃপ্তিতে তাই চকোলেট চিপ্‌স-ক্ষীরের মিশ্রণে নতুন ধাচের চমচমের সঙ্গে লড়াই জমতেই পারে স্ট্রবেরির সুস্বাদে আইসক্রিম সন্দেশ!

প্রস্তুতি তুঙ্গে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন