দীপাবলিতে দেদার বিকোচ্ছে আলো-ফানুস

পার্ক সার্কাসের আবু বক্কর, চাঁদনির রহমত আলি বা শ্যামবাজারের কানাই মণ্ডল। প্রত্যেকেই চাঁদনির ফুটপাথের ব্যবসায়ী। কালীপুজোর দু’দিন আগে শুধু চিনা কালীপটকা, এলইডি আলো ও চিনা ফানুস বিক্রি করেই যত আয় হয়েছে, তাতেই ওঁরা ভীষণ খুশি।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৪৭
Share:

পসরা: কালীপুজোর আগে ক্রেতাদের নজর কাড়তে হাজির চিনা কালীপটকা ও ফানুস। সোমবার, চাঁদনি বাজারে। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

আওয়াজের দিক থেকে হুবহু মিল। নামেই যা সামান্য আলাদা। কালীপটকার বিকল্প হিসেবে চিনা কালীপটকাই কালীপুজোর দু’দিন আগে ‘হট কেক’-এর মতো বিকোচ্ছে চাঁদনি বাজারে। সোমবার ওই বাজার ঘুরে দেখা গেল, চিনা কালীপটকা কিনতে দোকানে দোকানে ভিড়। পাশাপাশি, চিনে তৈরি রকমারি এলইডি আলো কিনতেও লম্বা লাইন। বিক্রিতে কম যায়নি চিনা ফানুসও। বাজি নিষিদ্ধ হবে কি না, তা নিয়ে যতই চাপা উদ্বেগ থাকুক, ভাটা পড়েনি আলো-ফানুসের বাজারে।

Advertisement

পার্ক সার্কাসের আবু বক্কর, চাঁদনির রহমত আলি বা শ্যামবাজারের কানাই মণ্ডল। প্রত্যেকেই চাঁদনির ফুটপাথের ব্যবসায়ী। কালীপুজোর দু’দিন আগে শুধু চিনা কালীপটকা, এলইডি আলো ও চিনা ফানুস বিক্রি করেই যত আয় হয়েছে, তাতেই ওঁরা ভীষণ খুশি। আবু বক্করের কথায়, ‘‘গত বছর চিনের কালীপটকা বাজারে এলেও এ বার চাহিদা অনেক বেশি।’’ সোমবার সন্ধ্যার আগেই চাঁদনির এক ব্যবসায়ীর কাছে সব চিনা কালীপটকা শেষ। তাঁর কথায়, ‘‘দশ পিস এনেছিলাম। সব যে এত তাড়াতাড়ি বিক্রি হয়ে যাবে, ভাবিনি।’’ চাঁদনি বাজারে একটি কালীপটকার সেট বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে দে়ড় হাজার টাকায়। সলতে পাকানো কালীপটকায় আগুন জ্বালালে তবেই ফাটে। কিন্তু চিনা কালীপটকায় আগুনের প্রয়োজনই নেই। সঙ্গে থাকা রিমোট টিপলেই কালীপটকা ফাটানোর মতো আওয়াজ, সঙ্গে আলোও জ্বলবে।

সল্টলেকের বাসিন্দা, একরত্তি কনক চট্টোপাধ্যায় সোমবার বাবা-মা’র সঙ্গে রকমারি এলইডি আলো কিনতে চাঁদনি এসেছিল। ফুটপাথে কালীপটকা দেখে মায়ের কাছে গোঁ ধরে বসে, চিনা কালীপটকা কিনে দিতেই হবে। শেষমেশ বাবা কালীপটকা কিনে দিতে তবে শান্তি!

Advertisement

কালীপটকা ও এলইডি আলোর পাশাপাশি চাঁদনি বাজারে ফানুস কেনার ভিড়ও ছিল চোখে পড়ার মতো। দক্ষিণ ২৪ পরগনার চম্পাহাটির বাসিন্দা, সল্টলেকের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্র দেবদীপ্ত সর্দার বলেন, ‘‘বনেদি বাড়ির কালীপুজোয় ফানুস ওড়ানোর গল্প শুনেছি। তাই বাজারে চিনা ফানুস কিনেই দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাচ্ছি।’’ বাবা-মায়ের সঙ্গে আসা এক খুদে আবার পাঁচ প্যাকেট ফানুস পেয়ে উচ্ছ্বসিত। হাওড়ার লিলুয়ার বাসিন্দা, সাত বছরের ওই একরত্তির কথায়, ‘‘গত বছর ছাদে ফানুস উড়িয়ে দারুণ মজা পেয়েছিলাম। মনে হচ্ছিল, যেন গঙ্গার বুকে নৌকা ভেসে বেড়াচ্ছে। এ বারও চুটিয়ে ফানুস ওড়াব।’’

তবে বাজারে যে হারে ফানুস বিকিয়েছে তাতে আজ, মঙ্গলবার থেকে দাম এক লাফে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছেই। সল্টলেকের বাসিন্দা অমরেশ চৌধুরী বলছিলেন, ‘‘গত বছর কালীপুজোর আগের দিন এক-একটা ফানুসের দাম পড়েছিল ৮০ টাকা করে। এ বার তাই আগেভাগেই কিনে নিলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন