Traffic Congestion

বৃষ্টি ও মিছিলে নাকাল শহরবাসী, কাজের দিনে ভোগান্তি বহু রাস্তায়

ভুক্তভোগীদের দাবি, এ দিন বেলা ১২টা থেকে যানজট শুরু হয় শহরের রাস্তায়। সব চেয়ে বেশি সমস্যা চোখে পড়ে মধ্য কলকাতায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৫ ০৯:৫১
Share:

থমকে: মুখ্যমন্ত্রীর মহামিছিলের জেরে যানজটে অবরুদ্ধ ধর্মতলা চত্বর। বুধবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

বৃষ্টি হলেই গতিহারা হয়ে পড়ে শহর। গত কয়েক সপ্তাহের দফায় দফায় বৃষ্টিতেও এই অবস্থাই দেখা গিয়েছে কলকাতায়। বুধবার সেই বৃষ্টির সঙ্গেই যুক্ত হল রাজনৈতিক কর্মসূচি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দলের কর্মী-সমর্থকেরা মিছিল করলেন কলেজ স্ট্রিট থেকে ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত। যার জেরে দিনের বেশির ভাগ সময়েই গাড়ির চাকা গড়ায় শ্লথ গতিতে। পথে নেমে ভুগতে হয় সাধারণ মানুষকেই। কোথাও যানজটে আটকে বাসেই দীর্ঘক্ষণ বসে থাকতে হল, কোথাও গলিপথে ঢুকে অবরুদ্ধ হয়ে থাকতে হল ঘণ্টার পর ঘণ্টা। অনেকেই গন্তব্যে পৌঁছলেন নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে।

যা নিয়ে ভুক্তভোগীদের অনেকেরই দাবি, এ দিনই যদি এমন হয়, তা হলে আগামী সোমবার, সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনেপরিস্থিতি আরও জটিল হবে না তো? সে দিনই রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের ডাকে ২১ জুলাইয়ের সভা রয়েছে ধর্মতলায়। কলকাতা পুলিশ যদিও দাবিকরেছে, এ দিন প্রয়োজন মতো যান নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। আগামী সোমবারও পর্যাপ্ত বন্দোবস্ত রাখা হচ্ছে।

ভুক্তভোগীদের দাবি, এ দিন বেলা ১২টা থেকে যানজট শুরু হয় শহরের রাস্তায়। সব চেয়ে বেশি সমস্যা চোখে পড়ে মধ্য কলকাতায়। বড় রাস্তার পাশাপাশি গলিপথেও গাড়ি, মোটরবাইকের লম্বা লাইন দেখা যায়। যার প্রভাব গিয়ে পড়ে উত্তরের ভূপেন বসু অ্যাভিনিউ বা হাজরা মোড়ের মতো দক্ষিণের রাস্তাতেও। হাওড়া থেকেস্ট্র্যান্ড রোড বা মহাত্মা গান্ধী রোড ধরে মধ্য কলকাতার দিকে আসা গাড়ির চাপও ছিল চোখে পড়ার মতো। এ দিন কলেজ স্ট্রিট থেকে মিছিল শুরু হয় দুপুর ২টো নাগাদ।

নির্মল চন্দ্র স্ট্রিট, ওয়েলিংটন মোড় হয়ে এসএন ব্যানার্জি রোড ধরে ধর্মতলায় পৌঁছনোর কথা ছিল মিছিলের। কিন্তু বৃষ্টির কারণে হঠাৎই মিছিলের পথ পরিবর্তন হয়।এসএন ব্যানার্জি রোড ধরে যাওয়ার পরিবর্তে আগের লেনিন সরণি ধরে মিছিল। তাতেই তাৎক্ষণিক ভাবে পরিস্থিতি আরও জটিল হয় বলে ট্র্যাফিক পুলিশের একটি সূত্রের দাবি। ওই অংশে রাস্তা সামলানো এক ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী বললেন, ‘‘একে বৃষ্টিতে গাড়ি ধীরে চলছিল। প্রয়োজন মতো রাস্তা আটকেসামলানো হচ্ছিল। তার উপরে মিছিলের পথ পরিবর্তনে জটিলতা তৈরি হয়। যে সব রাস্তা দিয়ে গাড়ি বার করা হচ্ছিল, হঠাৎ করেই সেগুলি বদলাতে হয়। এতেই এক সময়ে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের দু’দিকই বন্ধ করে দিতে হয়। একই অবস্থা হয় মহাত্মা গান্ধী রোড, সূর্য সেন স্ট্রিট এবং বিধান সরণির মতো রাস্তাগুলিতেও।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, মিছিল শুরুর অনেক আগে থেকেই এ দিন বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট থেকে কলেজ স্ট্রিটের উত্তরমুখী রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কলেজ স্ট্রিটের সভাস্থলে ভিআইপি-রাপৌঁছবেন বলে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ থেকে ইডেন হসপিটাল রোডও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। বন্ধ ছিল চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ থেকে কলুটোলা স্ট্রিটও। এই সময়ে মহাত্মা গান্ধী রোড দিয়ে শিয়ালদহ হয়ে এ জে সি বসু রোডের দিকে গাড়িবার করিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। তেমনই দক্ষিণ কলকাতামুখী গাড়ি এবং মোটরবাইক রানিরাসমণি রোড, মেয়ো রোড হয়ে বার করা হয়েছে। ধর্মতলা সভাস্থলের কাছেও একমুখী রাস্তা এক সময়ে বন্ধ করে দিতে হয়।

এই সময়েই দীর্ঘক্ষণ বাসে আটকে থাকা এক মহিলা বলেন, ‘‘বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে বাসে উঠেছিলাম। অসুস্থ হয়ে পড়ার মতো অবস্থা।’’ দেবাশিস ঘোষ নামে এক ব্যক্তি আবার এ দিনের কর্মসূচির জেরে তাঁর মেয়ের স্কুলে পৌঁছতে না পারার ক্ষোভ সমাজমাধ্যমে জানিয়েছেন। প্রশ্ন তুলেছেন, স্কুল-কলেজ ভর্তি পাড়ায় সপ্তাহের মাঝের একটি দিনে এমন কর্মসূচি করার অনুমতি পুলিশ দিল কী করে?

লালবাজারের যুগ্ম নগরপাল পদমর্যাদার এক পুলিশ অফিসারের দাবি, ‘‘বৃষ্টিতে রাস্তায় জল জমার কারণে এমনিতেই এই সময়ে কিছু সমস্যা হয়। তবে তেমন কিছু হয়নি। যেটুকু যা হয়েছে, দ্রুত সামলে নেওয়া গিয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন