কালীপুজোর আগেই হিমসিম পুলিশ।
ধনতেরস উপলক্ষে শুক্রবার শহরের দোকান-বাজারে যা ভিড় হল, তার জের গিয়ে পড়ল রাস্তায়।এমনিতেই নিয়মের তোয়াক্কা না করে বহু রাস্তা আটকে বড় বড় প্যান্ডেল করে ‘শক্তি’র আরাধনা শুরু হয়ে গিয়েছে। ফলে ছোট হয়ে এসেছে রাস্তার পরিসর। শুক্রবার বেলা যত বেড়েছে, ততই কমে এসেছে শহরের রাস্তায় গাড়ির গতি। পনেরো মিনিটের পথ পেরোতে লেগেছে পৌনে এক ঘণ্টা!
এই দুর্গাপুজোয় চতুর্থী থেকেই ভিড়ের চাপে স্বাভাবিক গতি হারিয়েছিল শহর। মানুষ ও গাড়ির চাপে যানজট সামাল দিতে পথে নামতে হয়েছিল পুলিশকর্তাদের। শুক্রবার রাস্তায় তত পুলিশের দেখা মেলেনি। এ দিকে, দোকানের ভিড় রাস্তায় নেমে আসায় এবং রাস্তা-জুড়ে প্যান্ডেলের ফলে দুর্ভোগে পড়লেন শহরবাসী।
পুলিশ জানিয়েছে, দীপাবলি এবং ধনতেরসের কেনাকাটার জন্য সকাল থেকেই চাপ ছিল বড়বাজার-সহ মহাত্মা গাঁধী রোডের বিস্তীর্ণ এলাকায়। তার উপরে অফিস টাইমে বাড়তি বাস এবং লোকজনের ভিড় বেড়ে যায় কয়েক গুণ। সেই সময়ে শিয়ালদহ থেকে হাওড়া পৌঁছতেই এক ঘণ্টার বেশি লেগে যায়। মহাত্মা গাঁধী রোডের ওই যানজটের রেশ গিয়ে পড়ে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, ব্রেবোর্ন রোডেও। ধনতেরসের জন্য বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের সোনার দোকানগুলিতে স্বাভাবিক দিনের থেকে কয়েক গুণ বেশি ভিড় ছিল। তার জের গিয়ে পড়ে আমহার্স্ট স্ট্রিট, বিধান সরণিতে। কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায় মধ্য ও উত্তর কলকাতার একাংশ।
আমহার্স্ট স্ট্রিট এবং এস এন ব্যানার্জি রোড জুড়ে রয়েছে কালীপুজোর প্যান্ডেল। তাই আশপাশের রাস্তায় চাপ থাকলেও কোনও গাড়িই সে দিকে ঘোরানো যায়নি। ফলে যানজট ছড়িয়ে পড়ে মৌলালি, সিআইটি রোড, শিয়ালদহ, বেলেঘাটা রোডের একাংশে।
বাদ যায়নি ধর্মতলা থেকে দক্ষিণ কলকাতাও। যার প্রধান কেন্দ্রবিন্দু ছিল যদুবাবুর বাজার। ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন ভবানীপুরে কালীপুজোর বাজার চলে আসে একেবারে রাস্তা পর্যন্ত। দক্ষিণমুখী সমস্ত গাড়ি আটকে প়ড়ে। পুলিশ জানিয়েছে, এর প্রভাব পড়ে জওহরলাল নেহরু রোড, এজেসি বোস রোড, ডি এল খান রোডেও তার প্রভাব পড়ে। পার্ক স্ট্রিট উড়ালপুলে।
শুক্রবারের এই প্রবল যানজটে ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠেছে। আগে থেকে জানা থাকলেও কেন এই যানজটকে মোকাবিলা করতে পারল না পুলিশ? ট্রাফিক পুলিশের এক কর্তা অবশ্য সরাসরি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে পুলিশের কিছু করার ছিল না। প্যান্ডেলের জন্য রাস্তা সঙ্কীর্ণ হয়ে যাওয়া এবং ধনতেরসের বাজারের কারণেই যানজট হয়েছে। শনিবার থেকে পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে।’’
কিন্তু শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দক্ষিণ কলকাতা একেবারেই স্তব্ধ ছিল প্রায়। তাই পুলিশের এই আশ্বাসে এখনই ভরসা করতে পারছেন না যানজটের ভোগান্তিতে নাকাল হওয়া অধিকাংশ শহরবাসী।