শেখ সালাউদ্দিন এবং শেখ আলাউদ্দিন নামে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রাস্তায় পাতা চৌকিতে কে বসবেন, তা নিয়ে দুই যুবকের গন্ডগোল! তার থেকে মঙ্গলবার রাতে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিল তিলজলা রোড। তপসিয়া এবং আশপাশের থানা থেকে বিশাল বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। তিন আহতকে রাতেই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাঁদের এক জনের দাবি, পিস্তলের বাট দিয়ে মেরে তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। বুধবার রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় শেখ সালাউদ্দিন এবং শেখ
আলাউদ্দিন নামে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ৪৩ নম্বর তিলজলা রোডের একটি বাড়ির সামনে মঙ্গলবার রাতে চৌকিতে বসেছিলেন মহম্মদ ইউসুফ নামে এক যুবক। ওই বাড়িরই বাসিন্দা সালাউদ্দিন নীচে নেমে তাঁকে উঠে যেতে বলেন। এ নিয়ে দু’জনের প্রথমে বচসা, পরে হাতাহাতি শুরু হয়। পেশায় প্রোমোটার সালাউদ্দিন ফোন করে কয়েক জনকে ডেকে আনেন। ইউসুফও ফোন করেন রাজা খান নামে এক বন্ধু প্রোমোটারকে। এর পরেই দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের শুরু।
সাবিনা বিবি নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘হঠৎ দেখি, একের পর এক মোটরবাইক এলাকায় ঢুকছে। সকলের হাতে লাঠি, উইকেট, লোহার রড। পুলিশের সামনেও কোনও ভয় নেই! তার মধ্যেই একটি ছেলেকে দেখলাম, পিস্তল হাতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। পুলিশ তাকে ধরতে পারেনি।’’ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে কোনও মতে ইউসুফ এবং তাঁর সঙ্গী নুর হুসেন নামে আর এক জনকে উদ্ধার করে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে পাঠায় পুলিশ। নুর সেখানেই চিকিৎসাধীন। তাঁর মা মারিয়াম বিবি বলেন, ‘‘ছেলেকে খুব মেরেছে। ওর মাথায় অনেকগুলো সেলাই পড়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এখনই কিছু বলা যাবে না।’’
এ দিন ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পরিস্থিতি থমথমে। রাস্তার ধারে দাঁড় করানো সেই চৌকি। তপসিয়া থানা সূত্রের খবর, সালাউদ্দিন এবং রাজা ওই এলাকায় নির্মাণ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। তবে তাঁরা দুই বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর সদস্য। দীর্ঘদিন তাঁদের মধ্যে বিবাদ চলছে। রাজা এ দিন দাবি করেন, ‘‘আমাকে কোনও বাড়ির কাজ করতে দিচ্ছে না সালাউদ্দিন। একটা বাড়িতে কয়েক দিন আগেই কাজ শুরু করেছি। সেখানে গিয়েও দু’লক্ষ টাকা তোলা চেয়েছে ওরা। পুলিশেও বিষয়টি জানিয়েছিলাম। সেই রাগেই মঙ্গলবার ইউসুফকে মারধর করা হয়েছে।’’ সালাউদ্দিনের অবশ্য খোঁজ পাওয়া যায়নি। তাঁর মেয়ে শুধু বলে, ‘‘বাবাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাবাকেই ধরে ওরা মেরেছে।’’
তপসিয়া থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক জানান, এই দুই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আগেও একাধিক বার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আর্থিক তছরুপেরও অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থলের কাছেই একটি বাড়ির গায়ে ক্যামেরা রয়েছে। তার ফুটেজও দেখা হচ্ছে।