UGC

পরীক্ষার আগে প্র্যাক্টিকাল ক্লাস নিয়ে চিন্তা কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়েও

ইউজিসি-র নির্দেশ অনুযায়ী স্নাতক স্তরে প্রথম, তৃতীয়, পঞ্চম সিমেস্টার এবং স্নাতকোত্তর স্তরে প্রথম ও তৃতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষা হওয়ার কথা আগামী মার্চ মাসে।

Advertisement

মধুমিতা দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২১ ০১:৩৩
Share:

ছবি: সংগৃহীত

অতিমারি আবহের মধ্যেই গত ডিসেম্বর থেকে নতুন শিক্ষাবর্ষের ক্লাস চালু হয়ে গিয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে। সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে এখনও অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমেই চলছে পঠনপাঠন। কিন্তু আগামী মার্চ মাসে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে পরীক্ষার আগে বিভিন্ন বিষয়ে প্র্যাক্টিকাল ক্লাস কী ভাবে নেওয়া সম্ভব, সে নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন পড়ুয়া এবং শিক্ষকেরা।

Advertisement

ইউজিসি-র নির্দেশ অনুযায়ী স্নাতক স্তরে প্রথম, তৃতীয়, পঞ্চম সিমেস্টার এবং স্নাতকোত্তর স্তরে প্রথম ও তৃতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষা হওয়ার কথা আগামী মার্চ মাসে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত অনলাইনে পঠনপাঠন চলার জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্র্যাক্টিকাল ক্লাস করানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে পরীক্ষার আগে কী ভাবে এত অল্প সময়ের মধ্যে প্র্যাক্টিকাল ক্লাস করানো যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। গত এপ্রিলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির করা এক সমীক্ষায় উঠে এসেছিল, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে অনলাইন পঠনপাঠনের সুফল পাচ্ছেন মাত্র ১৫ শতাংশ পড়ুুয়া। এই পরিস্থিতিতে স্নাতকোত্তর স্তরের পড়ুয়াদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে প্র্যাক্টিকাল ক্লাস করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ। তাই পড়ুয়াদের আলাদা আলাদা দলে ভাগ করে ভিন্ন ভিন্ন দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ে এনে প্র্যাক্টিকাল ক্লাস চালু করার পক্ষে রয়েছেন তাঁরা। সূত্রের খবর, কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ করার অনুরোধও করা হয়েছে।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ ক্যানিংয়ের বঙ্কিম সর্দার কলেজের অধ্যক্ষ তিলক চট্টোপাধ্যায় বুধবার জানালেন, বিজ্ঞানের পড়ুয়াদের প্র্যাক্টিকাল পেপারের থিয়োরেটিকাল অংশ আপাতত অনলাইনেই পড়ানো হচ্ছে। কিন্তু আগামী সপ্তাহ থেকে পড়ুয়াদের ভাগাভাগি করে আলাদা আলাদা দিনে কলেজে এনে প্র্যাক্টিকাল ক্লাস করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মৌলানা আজাদ কলেজের অধ্যক্ষ শুভাশিস দত্ত জানাচ্ছেন, তাঁরাও প্র্যাক্টিকাল পেপারের থিয়োরেটিকাল অংশ আপাতত পড়াচ্ছেন অনলাইনেই। তিনি বলেন, ‘‘এর পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় যা জানাবে তেমনই করা হবে।’’ নিউ আলিপুর কলেজে পদার্থবিদ্যা এবং রসায়নের কোনও কোনও প্র্যাক্টিকাল ক্লাসের জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা কলেজে এসে পরীক্ষাগারে হাতেকলমে পরীক্ষা করছেন, যা অনলাইনে পড়ুয়াদের দেখানো হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে ইউটিউবে সেই ভিডিয়ো দেওয়া হচ্ছে বলে বলে জানালেন ওই কলেজের অধ্যক্ষ জয়দীপ ষড়ঙ্গী। তবে তিনি আরও জানাচ্ছেন, পদার্থবিদ্যা অনার্সের পঞ্চম সিমেস্টারের ক্ষেত্রে অবশ্য এসব কিছু সম্ভব হচ্ছে না। কারণ এই সিমেস্টারের প্র্যাক্টিকাল পাঠ্যসূচির বদল হয়েছে অনেকটাই। তাই নতুন যন্ত্রপাতি-সরঞ্জামের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু অতিমারি আবহে সেইসব সরঞ্জাম এখনও কলেজে আনানো যায়নি।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে প্র্যাক্টিকাল ক্লাসের জন্য ভিন্ন পন্থা অনুসরণ করছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, পরীক্ষাগারে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে যে তথ্য মেলে, তা এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে হাতেকলমে বার করতে পারছেন না পড়ুয়ারা। তাই পদার্থবিদ্যা-সহ বিজ্ঞান এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বেশ কিছু বিভাগে পুরনো তথ্য দেওয়া হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের। সেটাই বিশ্লেষণ করছেন তাঁরা। এর সঙ্গে প্র্যাক্টিকাল পেপারের থিয়োরেটিকাল অংশ পড়ানো হচ্ছে অনলাইনে।

অতিমারি আবহে আপাতত প্র্যাক্টিকাল ক্লাস নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানাচ্ছেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সব্যসাচী বসুরায়চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘অনলাইনে ললিতকলা ও দৃশ্যকলার বিষয়গুলিতে প্র্যাক্টিকাল ক্লাস করানো সম্ভব নয়। কবে থেকে ক্যাম্পাসে ফের ক্লাস করানো যাবে, তারই অপেক্ষায় রয়েছি। এ নিয়ে রাজ্য সরকারের নির্দেশের অপেক্ষায় আছি আমরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন