অ্যাকাউন্টে বেতন জমা পড়ার এসএমএসে মোবাইল ‘গরম’ হলেও পকেট গরম হচ্ছে না আমজনতার। নোট বাতিলের পরে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় মাসের শুরুতে হয়রানি আরও বেড়েছে। কেউ অফিস শেষে এটিএমের লাইনে দাঁড়ানোটা রোজনামচায় ঢুকিয়ে নিয়েছেন, কেউ আবার লেভেল ক্রসিং অবরোধ করে প্রতিবাদ জানালেন।
শুক্রবারও বাগমারি থেকে ভবানীপুর, সর্বত্রই চোখে পড়ল লম্বা লাইন। শহরের অধিকাংশ এটিএমে এখনও পরিষেবা স্বাভাবিক হয়নি। আর যেগুলি চলছে, বেশির ভাগেই মিলছে দু’হাজার টাকার নোট। তবে দু’হাজারি নোট ‘ভিলেন’ হলেও এই পরিস্থিতিতে তা নিয়েই চলতে হবে, একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ভবানীপুর শাখার সামনে দাঁড়িয়ে এ কথাই বললেন স্থানীয় বাসিন্দা অনির্বাণ মুখোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘পাড়ার মুদি দোকান বলেছে দু’হাজারের নোট দিলে দিন দুয়েক পরে খুচরো করে দেবে। পরে হলেও পাব, এই আশাতেই আছি।’’
এ দিকে, ঘোষণা সত্ত্বেও ২৫০০ টাকা না মেলায় ক্ষোভ বাড়ছে। এরও কারণ অপর্যাপ্ত ৫০০ ও ১০০ টাকার নোট। শ্যামবাজারের একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের এটিএমের লাইনে রাজেন বারুই নামে এলাকার এক বাসিন্দা বললেন, ‘‘২৫০০ টাকা দেবেই না যখন, ঘোষণার কি দরকার ছিল?’’ ক্ষুব্ধ গড়িয়ার সৃজনা চৌধুরীও। বললেন, ‘‘এত দিনেও পরিস্থিতির উন্নতি হল না। রোজ অফিস থেকে ফিরে লাইনে দাঁড়াচ্ছি। এ ভাবে আর কত দিন চলবে?’’
সব চেয়ে বেশি ভুগছেন পেনশন প্রাপকেরা। সেল্ফ চেক নিয়ে গেলেও পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় ফিরে আসতে হচ্ছে। আর বয়স বা শারীরিক কারণে বারবার ব্যাঙ্কে যাওয়াও অনেকের কাছে সমস্যার। যেমন বেলগাছিয়ার সুজাতা চক্রবর্তী বললেন, ‘‘আমি পনেরো হাজার টাকা তুলতে এসেছিলাম। ব্যাঙ্ক বলল অত টাকা নেই। মাত্র পাঁচ হাজার দিল।’’
নোট-যন্ত্রণার প্রতিবাদে এ দিন প্রায় দু’ঘণ্টার জন্য শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখার অশোকনগর ও হাবরার মাঝে দু’টি লেভেল ক্রসিং অবরোধ করেন স্থানীয়েরা। পূর্ব রেল সূত্রে খবর, এর জেরে দু’টি আপ ও একটি ডাউন লোকাল ট্রেন বাতিল করতে হয়। আরও পাঁচটি লোকাল প্রায় ৪০ মিনিট দেরিতে চলেছে