তিন সেতু বন্ধে ভোগান্তির শঙ্কা সপ্তাহ জুড়ে

কেএমডিএ জানিয়েছে, বাঘা যতীন রেল সেতুর ১২ এবং ১৩ নম্বর স্তম্ভের একটি স্ল্যাব পাল্টানো হবে। একই সঙ্গে ওই সেতুর চার জায়গায় সমস্যা খুঁজে পেয়েছেন ইঞ্জিনিয়ারেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৯ ০২:৫০
Share:

শিয়ালদহ উড়ালপুল।—ফাইল চিত্র।

স্বাস্থ্য পরীক্ষার কারণে আগামী সাত দিন বিভিন্ন সময়ে শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণের তিন গুরুত্বপূর্ণ সেতুতে বন্ধ থাকবে যান চলাচল। ইতিমধ্যেই সোমবার রাত থেকে মেরামতির জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বাঘা যতীন রেল সেতুর একাংশ। আগামী রবিবার রাত পর্যন্ত ওই সেতুর গড়িয়ামুখী রাস্তা বন্ধ থাকবে। পুলিশ জানিয়েছে, দক্ষিণমুখী অর্থাৎ অজয়নগরের দিক থেকে গড়িয়ার দিকে যাওয়ার অংশটি বন্ধ থাকায় পাশের উত্তরমুখী র‌্যাম্প দিয়ে উভয় দিকে গাড়ি চলাচল করবে। এ ছাড়া, সেতুর নীচের রাস্তা দিয়েও দু’দিকে ছোট গাড়ি চলাচলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্র্যাফিক পুলিশের কর্তারা। এর পাশাপাশি, বৃহস্পতিবার থেকে ৭২ ঘণ্টা শিয়ালদহের বিদ্যাপতি সেতু এবং শুক্রবার থেকে রবিবার জীবনানন্দ সেতু বন্ধ থাকায় ঘুরপথে চলবে ছোট-বড় সমস্ত যানবাহন। ফলে চলতি সপ্তাহ জুড়ে আমজনতার ভোগান্তির আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

Advertisement

কেএমডিএ জানিয়েছে, বাঘা যতীন রেল সেতুর ১২ এবং ১৩ নম্বর স্তম্ভের একটি স্ল্যাব পাল্টানো হবে। একই সঙ্গে ওই সেতুর চার জায়গায় সমস্যা খুঁজে পেয়েছেন ইঞ্জিনিয়ারেরা। সেগুলিও আগামী এক সপ্তাহ ধরে সারাই হওয়ার কথা। শনিবার ওই সেতুর গড়িয়ার দিকে যাতায়াতকারী উড়ালপুলের ১২ ও ১৩ নম্বর স্তম্ভের মধ্যবর্তী অংশে চাঙড় ভেঙে পড়ে। ওই দিন থেকেই সেটি মেরামতির কাজ শুরু হয়। এক আধিকারিক জানান, এর পরেই শনি থেকে সোমবার পর্যন্ত উড়ালপুলের বিভিন্ন অংশ পরিদর্শন এবং পরীক্ষা করেন ইঞ্জিনিয়ারেরা। তখন দেখা যায়, বাঘা যতীন সেতুর একটি স্ল্যাব পাল্টাতে হবে। সেই মতো সোমবার ট্র্যাফিক পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন কেএমডিএ-র আধিকারিকেরা। পরে কেএমডিএ-র আবেদন মতো রাত থেকে উড়ালপুলের একটি অংশ দিয়ে গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

কেএমডিএ সূত্রের খবর, স্ল্যাব পাল্টানো এবং অন্য মেরামতি ছাড়াও গোটা উড়ালপুলের ভার বহন ক্ষমতার পরীক্ষা হবে। যা করলে দ্রুত এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। আপাতত ঠিক হয়েছে, সেতুর চার জায়গায় ২৮ টন ওজনের লরি তুলে ভার বহন ক্ষমতার পরীক্ষা হবে। সেই অনুযায়ী রিপোর্ট তৈরি করে বাঘা যতীন সেতুর সংস্কারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Advertisement

উল্লেখ্য, কেএমডিএ-র তরফে শহরের মোট ১৭টি সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা মেরামতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম দফায় বাঘা যতীন ছাড়া রয়েছে শিয়ালদহের বিদ্যাপতি সেতু, প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড কানেক্টরের জীবনানন্দ সেতু এবং উত্তর কলকাতার অরবিন্দ সেতু। একই ভাবে মেরামতি এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে হাওড়ার বঙ্কিম সেতুরও। তবে কবে ওই কাজ হবে, তা নিয়ে এখনও সিদ্ধান্তে পৌঁছয়নি কেএমডিএ। হাওড়া প্রশাসন সূত্রের খবর, আজ, মঙ্গলবার জেলাশাসকের কার্যালয়ে বৈঠক করবে কেএমডিএ, হাওড়া সিটি পুলিশ, হাওড়া পুরসভা এবং সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য দিল্লি থেকে আসা এক প্রতিনিধিদল। তার পরেই বঙ্কিম সেতু বন্ধ রাখার দিন স্থির করা হবে। তবে প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, ওই সেতুটি পুরোপুরি বন্ধ রাখা হবে না। এক-একটি অংশ বন্ধ রেখে মেরামতির কাজ করা হবে। বাকি অং‌শ দিয়ে যান চলাচল করবে।

পুলিশ জানিয়েছে, বাঘা যতীন উড়ালপুলের মেরামতি চলাকালীন বন্ধ রাখা হবে জীবনানন্দ সেতু দিয়ে যান চলাচলও। আগামী শুক্রবার রাত থেকে তিন দিন ওই সেতু দিয়ে কোনও গাড়ি চলবে না। ওই রাস্তা ব্যবহারকারী বাসগুলি যাতায়াত করবে গড়িয়াহাট-রাসবিহারী কানেক্টর হয়ে। ছোট গাড়ি চলবে যাদবপুর হয়ে।

অন্য দিকে, আগামী বৃহস্পতিবার থেকে ৭২ ঘণ্টার জন্য বন্ধ থাকবে শিয়ালদহের বিদ্যাপতি সেতুর একাংশ। ওই দিন বিকেল থেকে ১৮ অগস্ট পর্যন্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলবে সেই উড়ালপুলের। এক আধিকারিক জানান, বিদ্যাপতি সেতুর দু’টি জায়গায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। সেখানেই ভারী ওজন তুলে বহন ক্ষমতার পরীক্ষা হবে। এর আগে ওই সেতুর ওজন কমানোর জন্য সেটির উপরের রাস্তার পিচের আস্তরণ তুলে দেওয়া হয়েছিল। একই সঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ট্রাম চলাচল। পাশাপাশি, বেয়ারিংয়ের সমস্যা মেরামতির কারণে আগামী ২২ থেকে ২৪ অগস্ট যান চলাচল বন্ধ থাকবে খান্না এবং উল্টোডাঙা সংযোগকারী অরবিন্দ সেতুতে। কেএমডিএ সূত্রের খবর, বেয়ারিং পরিবর্তনের জন্য ওই সেতুর স্তম্ভগুলি পরীক্ষা করা হবে। এ ছাড়াও হবে সেতুর বহন ক্ষমতার পরীক্ষা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন