মেয়ের মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ আদায় করতে বিমা সংস্থার থেকে কী কী শুনতে হয়েছিল, তা প্রায় মনেই নেই বৃদ্ধের। কারণ বিমা সংস্থার সঙ্গে মামলা লড়েই তাঁর জীবনের দু’টি দশক পেরিয়ে গিয়েছে। অবশেষে বৃহস্পতিবার তিনি বিচার পেলেন নিজের পক্ষেই।
১৯৮৮ সালে ভিআইপি রোডে দুর্ঘটনায় মারা যান রাজারহাটের বাসিন্দা নির্মলকুমার বসুর ছোট মেয়ে বাসন্তী। নির্মলবাবু এক বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করার সুবাদে সেখান থেকেই মেয়ের নামে বিমা করা ছিল। নির্মলবাবুর অভিযোগ, মেয়ের মৃত্যুর পরে বিমা সংস্থার কাছে টাকা চাইতেই তারা টালবাহানা শুরু করে। আদালতের দ্বারস্থ হন তাঁরা। ২০১৫ পর্যন্ত সেই লড়াই হয়েছে কখনও বারাসত আদালতে, কখনও উচ্চ আদালতে।
নির্মলবাবুর পক্ষে উচ্চ আদালতের আইনজীবী অজয়কুমার রায় বলেন, ‘‘বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যার ও বিচারপতি ফয়জুল্লাহ মুন্সির ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার বিমা সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছে তিন সপ্তাহের মধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে। পাশাপাশি, বৃদ্ধকে হেনস্থা করার জন্য কুড়ি হাজার টাকা জরিমানা, সঙ্গে ক্ষতিপূরণের অঙ্কের উপরে এত বছরের হিসেবে ৯ শতাংশ সুদও দিতে বলেছে ডিভিশন বেঞ্চ।’’
স্বাধীনতার আগে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর কর্মী ছিলেন নির্মলবাবু। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ছিলেন। ৯৬ বছরের বৃদ্ধ এখন কানে ভাল শুনতে পান না। তাঁর কথায়, ‘‘পুলিশ সাহায্য করেনি। এত পুরনো মামলা। অনেক কাগজ হারিয়ে গিয়েছে। বিমা সংস্থা সেই সুযোগ কাজে লাগাতে চেয়েছিল। শেষ পর্যন্ত রায় আমাদের দিকে এসেছে। এই দিনটার মুখ চেয়ে ছিলাম।’’ তিনি জানান, মামলা লড়তে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থারও দ্বারস্থ হন তাঁরা। সেই সংস্থাও নির্মলবাবুদের হয়ে আইনজীবী ঠিক করে দিয়েছিল।