কেন এত জল, জোর তরজা দক্ষিণ দমদমে

বহুতল তৈরির সময়ে বিল্ডিং প্ল্যান জমা পড়ে পুরসভায়। কিন্তু পুরসভার নিকাশি দফতরের কাছে সেই বহুতলের নিকাশিনালার নকশা সম্পর্কে সব তথ্য থাকে না। ফলে ওই বহুতলের নিকাশির জল সরাতে এলাকায় যে ধরনের পরিকাঠামোর প্রয়োজন, তা তৈরি হচ্ছে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৭ ০৭:০০
Share:

ছবি: সংগৃহীত

বহুতলের পর বহুতল। সেই সব বহুতলের নিকাশি পরিকাঠামো উন্নত। কিন্তু বহুতল এলাকার বাইরে রয়েছে পুরনো দিনের নিকাশিনালা। বহুতলের জল সেই নালা ধরে বেরোতে সময় লেগে যাচ্ছে। কোথাও আবার জল নালা ছাপিয়ে রাস্তায় জমে যাচ্ছে। এর সঙ্গে অল্প বৃষ্টি হলেই এলাকায় গোড়ালি সমান জল জমে যাচ্ছে। সেই জল সরতে দীর্ঘ সময় লেগে যাচ্ছে। দক্ষিণ দমদমের বেশ কিছু এলাকায় জল জমার কারণ খুঁজতে গিয়ে পুর প্রশাসনের নিকাশি দফতরের চোখে এমন প্রতিবন্ধকতাই ধরা পড়েছে বলে পুরসভা সূত্রের দাবি।

Advertisement

বহুতল তৈরির সময়ে বিল্ডিং প্ল্যান জমা পড়ে পুরসভায়। কিন্তু পুরসভার নিকাশি দফতরের কাছে সেই বহুতলের নিকাশিনালার নকশা সম্পর্কে সব তথ্য থাকে না।
ফলে ওই বহুতলের নিকাশির জল সরাতে এলাকায় যে ধরনের পরিকাঠামোর প্রয়োজন, তা তৈরি হচ্ছে না। এমন অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ দমদম পুরসভার অন্দরেই। নিকাশি দফতরের চেয়ারম্যান পারিষদ দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় এই অভিযোগকে কার্যত সমর্থন করে জানান, বহুতলের নিকাশি পরিকাঠামো সম্পর্কে নিকাশি দফতর পুরোপুরি অবহিত নয়। পুরসভা সূত্রের খবর, এই কারণে দমদম রোড, মল রোড, প্রাইভেট রোড-সহ বিভিন্ন রাস্তার ধারে বহুতল এলাকায় জমা জল সরতে সময় লেগেছে।

দক্ষিণ দমদম পুর এলাকার বিভিন্ন জায়গায় কোথাও সরু, কোথাও চওড়া নিকাশি নালা রয়েছে। সেই নালাগুলি মূল একটি নালার সঙ্গে যুক্ত। মূল নালাটির মাধ্যমে জল গিয়ে পড়ে বাগজোলা, সোনাই, উদয়পুর এবং ক্যান্টনমেন্ট খালে। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, যে সব জায়গায় বহুতল গড়ে উঠছে, সেখানে অল্প জায়গাতেই অনেক মানুষ বসবাস করেন। ফলে সেই অনুসারে নিকাশি পরিকাঠামো সংস্কারের প্রয়োজন।

Advertisement

পুরসভার চেয়ারম্যান অবশ্য এই অভিযোগ নাকচ করেছেন। তিনি জানান, তথ্য না জানার কিছু নেই। বহুতল এবং সংলগ্ন এলাকার নিকাশি পরিকাঠামোর পার্থক্যের কারণেই শুধু জল জমছে, এই অভিযোগ ঠিক নয়। তিনি জানান, কিছু ক্ষেত্রে নকশা না মেনেও কাজ হয়েছে অনেক বহুতলে। সেখানে জরিমানা আদায় করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও করেছে পুরসভা।

এত দিন বাগজোলা-সহ অন্য খাল সংস্কারের অভাবে জল জমে যেত বলে দাবি করতেন পুর কর্তৃপক্ষ। এ বারে খালগুলি সংস্কার করার ফলে জলপ্রবাহ বেড়েছে। খাল আগের থেকে বেশি জল টানতে সক্ষম হয়েছে বলে দাবি করেছে পুরসভাই।

তা সত্ত্বেও জল জমছে কেন?

পুরসভার দাবি, এলাকায় জল জমার আরও কিছু কারণ রয়েছে। অনেকাংশেই সেই সমস্যাগুলির ইতিমধ্যে সমাধান করা হয়েছে। পুরসভার আরও দাবি, এ বছর আগের থেকে কম জল জমেছে। কোথাও কোথাও জল জমলেও তা দ্রুত সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

দেবাশিসবাবু অবশ্য নিজের অবস্থানেই অনড় রয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, এক একটি বহুতলে দৈনন্দিন ব্যবহৃত জলের পরিমাণ বেশি। কিন্তু সেই অনুসারে এলাকার নিকাশি নালার সংস্কার হয়নি। তাই এ বারে বহু জায়গায় জল জমে ছিল।

মশাবাহিত রোগ ঠেকাতে বাসিন্দাদের বাড়িতে জমে থাকা জল সরাতে বারবার করে আবেদন করছে পুরসভা। রবিবার সকালে এলাকার বিধায়ক তথা তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী ব্রাত্য বসুও বাসিন্দাদের সচেতন হতে আবেদন করেছেন। কিন্তু এলাকার জল জমার সমস্যা মিটবে কি করে, তার জবাব মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন