—ফাইল চিত্র।
পোস্তায় ভেঙে পড়া বিবেকানন্দ উড়ালপুলের ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হওয়া জট অবশেষে কাটার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। দীর্ঘ অপেক্ষার পরে একটিমাত্র পরামর্শদাতা সংস্থা ওই উড়ালপুলের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে আগ্রহ দেখানোয় সেই আশা করছেন প্রশাসনিক কর্তারা। তাঁরা মনে করছেন, অর্থ দফতরের অনুমোদনের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট সংস্থা কাজ করলে শীঘ্রই উড়ালপুল নিয়ে বড় কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারবে নবান্ন।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, তৃতীয় কোনও বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে দিয়ে উড়ালপুলের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের জন্য গত মার্চে দরপত্র ডেকেছিল রাজ্য। কিন্তু এত দিন সরকারের শর্ত মেনে কোনও সংস্থাই দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশ নিচ্ছিল না। অবশেষে একটি বিশেষজ্ঞ পরামর্শদাতা সংস্থা তাতে সাড়া দিয়েছে। যে হেতু দরপত্রে একটিমাত্র সংস্থাই অংশগ্রহণ করেছে, তাই সরকারি বিধি অনুযায়ী তার জন্য অর্থ দফতরের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। সেই অনুমোদন পাওয়া গেলে সরকারি শর্ত অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উড়ালপুলের ভবিষ্যৎ স্থির করতে হবে।
কী সেই শর্ত?
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, পুরো ভেঙে ফেলা, না কি ক্ষতিগ্রস্ত অংশের মেরামতি— এই প্রশ্নেই উড়ালপুল নিয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে সরকার। ভেঙে ফেলতে হলে তার পদ্ধতি জানতে চায় রাজ্য। কারণ, উড়ালপুলের গা ঘেঁষে অনেক পুরনো বাড়ি রয়েছে, যেগুলির অবস্থা এমনিতেই জরাজীর্ণ। ফলে উড়ালপুল ভাঙা হলে সেই অভিঘাত ওই বাড়িগুলি সহ্য করতে না পারলে বড়সড় বিপর্যয় ঘটতে পারে। তাই এ ব্যাপারে বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে। অন্য দিকে, মেরামতির সিদ্ধান্ত হলে তার উপায়ও জানতে চায় সরকার। সে ক্ষেত্রে কী ভাবে নির্মাণকাজ করা সম্ভব, তার রূপরেখাও জানাতে হবে ওই সংস্থাকে। নির্মাণের সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত হলে তার নকশা, নির্মাণ পর্যবেক্ষণ-সহ যাবতীয় দায়িত্ব ওই সংস্থাকেই নিতে হবে। প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘অর্থ দফতরের অনুমোদন পেলেই সংস্থাটি কাজ শুরু করবে। তবে শুধু ভবিষ্যৎ স্থির করে দিলেই চলবে না। বাকি দায়িত্বও সামলাতে হবে ওই সংস্থাকে।’’
উল্লেখ্য, বিবেকানন্দ উড়ালপুল বিপর্যয়ের পরে তার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে দফায় দফায় সমীক্ষা হয়েছিল। শেষে খড়্গপুর আইআইটি-কে দায়িত্ব দিয়েছিল সরকার। প্রশাসনিক আধিকারিকদের একাংশের দাবি, উড়ালপুলটির স্বাস্থ্য সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিলেও সেটি ভাঙা হবে না রাখা হবে, তা ঠিক করার ভার রাজ্যের উপরেই ছেড়েছিল আইআইটি। কিন্তু অতি জটিল এই বিষয়ে চটজলদি সিদ্ধান্ত নিতে চায়নি সরকার। তখনই তৃতীয় পক্ষ হিসেবে নতুন একটি বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে দিয়ে উড়ালপুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে তার ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চেয়েছিল রাজ্য।