Rajbhaban Visit

খুলল না দরজা, দেখা হল না লাটসাহেবের বাড়ি, রাজভবনের দরজায় হতাশা আর ক্ষোভ

অনেকেই দাবি করলেন, ওয়েবসাইটে স্লট বুক করেই এসেছিলেন। যদিও কলকাতা জাদুঘর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, কবে থেকে জনসাধারণ রাজভবনে প্রবেশের সুযোগ পাবেন, তা পরে জানানো হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৩ ১৭:৩৫
Share:

রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস জানিয়েছিলেন, এখন থেকে রাজভবন ‘জন রাজভবন’। — নিজস্ব চিত্র।

এলেন। ফিরেও গেলেন। কিন্তু দেখা হল না!

Advertisement

কলকাতায় দিনের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি। সেই তাপমাত্রা অগ্রাহ্য করেই পয়লা বৈশাখে রাজভবন দেখতে এসেছিলেন অনু আগরওয়াল, তরুণ সাহারা। কিন্তু রাজভবনের দরজা খুলল না। অগত্যা বাড়ি ফিরে যেতে হল তাঁদের। অনেকেই দাবি করলেন, ওয়েবসাইটে স্লট বুক করেই এসেছিলেন। যদিও কলকাতা জাদুঘর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, কবে থেকে জনসাধারণ রাজভবনে প্রবেশের সুযোগ পাবেন, তা পরে জানানো হবে।

নিউ আলিপুর থেকে এসেছেন অনু। উদ্দেশ্য, লাটসাহেবের বাড়িটা এক বার ঘুরে দেখা। সংবাদমাধ্যম থেকে জানতে পেরে এসেছিলেন শনিবার, পয়লা বৈশাখের দুপুরে। কিন্তু রাজভবনে প্রবেশের সুযোগ আর পেলেন না।

Advertisement

মানিকতলা থেকে এসেছেন তরুণ সাহা। তিনি বলেন, ‘‘খবরের কাগজে পড়েছিলাম। স্ত্রী এবং মেয়েকে রাজভবন দেখাব বলে ওয়েবসাইটে স্লট বুকও করেছিলাম। নিরাপত্তারক্ষীরা ঢুকতে দেননি।’’ তরুণের আক্ষেপ, না দেখেই ফিরতে হল।

এমন আক্ষেপ আরও বহু জনের। যাঁরা শনিবার দুপুরে রাজভবনে এসেছিলেন। একটি বার লাটসাহেবের সেই বাড়ি দেখবেন বলে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর হল না। তাঁদের সকলেরই দাবি, কাগজে পড়েছিলেন, জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে রাজভবনের দরজা। তাই এসেছিলেন। যদিও ভারতীয় জাদুঘরের শিক্ষা আধিকারিক সায়ন ভট্টাচার্য আনন্দবাজার অনলাইনকে কিন্তু শনিবার সকালে অন্য কথাই জানিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, এখনই সাধারণ মানুষ এই সুযোগ পাচ্ছেন না।

রাজভবন ঘুরিয়ে দেখানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জাদুঘর কর্তৃপক্ষকে। রাজভবন সূত্রে খবর, ‘হেরিটেজ ওয়াক’-এ যোগ দিতে ইচ্ছুক মানুষেরা জাদুঘরের ওয়েবসাইট থেকে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। খুব শীঘ্রই জাদুঘরের তরফে সেই ব্যবস্থা করা হবে। তবে প্রতি দিন রাজভবন ঘুরে দেখার সুযোগ পাওয়া যাবে না। শনি বা রবিবারের মধ্যে যে কোনও এক দিন এক ঘণ্টা করে রাজভবন ঘুরে দেখার সুযোগ দেওয়া হবে সাধারণ মানুষকে। একসঙ্গে যোগ দিতে পারবেন ২০-৩০ জন। তবে এখনও পর্যন্ত সেই দিনটি চূড়ান্ত করা হয়নি বলেই জানিয়েছিল রাজভবনের সেই সূত্র। তার পরেও বহু মানুষ অনলাইনে বুকিং করে চলে এসেছেন রাজভবনে।

রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, কেউ চাইলে গাইডের মাধ্যমে পুরো চত্বর ঘুরে দেখতে পারেন। আবার কেউ চাইলে কিউআর কোড স্ক্যান করে কানে হেডফোন লাগিয়ে নিজে নিজেই ঘুরে দেখতে পারেন রাজভবন। সে ক্ষেত্রে হেডফোনের মাধ্যমে যান্ত্রিক নির্দেশ শুনে ঘুরে দেখতে হবে রাজভবনের বিভিন্ন জায়গা।

রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস জানিয়েছিলেন, এখন থেকে রাজভবন ‘জন রাজভবন’। আর সেই উপলক্ষে ঢেলে সাজানো হয়েছে রাজভবন চত্বর। রাজভবনের কালো রেলিঙের গেটে লাল-সাদা কাপড়ে নববর্ষের শুভেচ্ছাবার্তা টাঙানো হয়েছে। এই প্রসঙ্গে বোস বলেছিলেন, ‘‘আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে অনেক আগে। আর সেই স্বাধীনতার জন্যই রাজভবনের দ্বার সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হল। সাম্রাজ্যবাদের শেষ হিসাবেই এই উদ্যোগ। আমি ভারতের প্রতিটি প্রান্তের প্রতিনিধি। তারাও আমার প্রতিনিধিত্ব করে। ভারতের পতাকা সব সময় উঁচু থাকুক।’’ সেই মতো সাধারণের জন্য রাজভবনের দরজা খুলে দেওয়া হলেও তা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন