চিচিং ফাঁকের মতো, ঢাকা সরিয়ে উপরে ওঠা

কোনওটা ৩ ফুট বাই ৩ ফুট, কোনওটা মেরেকেটে ৪ ফুট। ঘরের কোণে কাঠ বা সিমেন্টের বাঁধানো সিড়ি। বড়জোড় এক ফুট চওড়া। সিঁড়ির ধারে ধরার কিছু নেই। উপরে উঠতেই চোখে পড়ল আর একটি ঘর। তার উপরে আরও একটি।

Advertisement

দীক্ষা ভুঁইয়া ও কৌশিক ঘোষ

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৭ ০২:৪০
Share:

অন্ধকূপ: বড়বাজারের সেই সিঁড়ি। ছবি: নিজস্ব চিত্র

কোনওটা ৩ ফুট বাই ৩ ফুট, কোনওটা মেরেকেটে ৪ ফুট। ঘরের কোণে কাঠ বা সিমেন্টের বাঁধানো সিড়ি। বড়জোড় এক ফুট চওড়া। সিঁড়ির ধারে ধরার কিছু নেই। উপরে উঠতেই চোখে পড়ল আর একটি ঘর। তার উপরে আরও একটি। দু’টি ঘরের মাঝের ফাঁকটুকু কাঠের পাটাতন দিয়ে বন্ধ করা। বাড়ির লোকজন পাটাতন ঠেলে উপরে যাচ্ছেন, নীচে নামছেন।

Advertisement

বড়বাজারের আমড়াতলা আর ক্যানিং স্ট্রিটের সরু গলির ভিতরে এ রকম বাড়ির ছড়াছড়ি। দু’টি বাড়ির মাঝে ফাঁক খুঁজে পাওয়া অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কষ্টকর। ফলে আগুন লাগলে বা দুর্ঘটনা ঘটলে দমকলের গাড়ি ঢোকা যে প্রায় অসম্ভব, তা ফের প্রমাণিত হল সোমবার আমড়াতলার এক বাড়িতে আগুন লাগার ঘটনায়। সামনের দিকের অংশে দমকলের গাড়ি ঢুকতে পারলেও, পিছনে বা আশপাশে রাস্তা না পেয়ে দমকলকে আনতে হয় লম্বা পাইপ। একাধিক পাইপ যুক্ত করে পিছনের বাড়ির সিঁড়ি ধরে উপরে পাইপ তুলে জল দিতে হয়েছে।

কোথাও ছাদে টিনের শেড দিয়ে বা ত্রিপল টাঙিয়ে লোকজন থাকেন। ভিতরে গ্যাস সিলিন্ডার বা স্টোভে চলে রান্না। এক তলা-দোতলার মধ্যে পার্টিশন দেওয়া কাঠের পাটাতনে। আগুনের ফুলকি পড়লেই হল! এ ভাবেই বছরের পর বছর বাস একাধিক পরিবারের। এমন এক পরিবারের থাকার জায়গার ভিতর দিয়ে পাইপ নিয়ে গিয়ে সোমবার ও মঙ্গলবার কাজ করেছেন দমকলকর্মীরা

Advertisement

মহম্মদ জমিরউদ্দিনের পরিবার জানাচ্ছে, বাড়ি কেনা সম্ভব নয়। কম টাকায় ভাড়াও মেলা ভার। বাধ্য হয়েই এ ভাবে থাকা। এখানে রয়েছে একাধিক প্লাস্টিক বা রাসায়নিকের গুদাম ঘর। দমকলের অবশ্য অভিযোগ, সেখানেও অগ্নি-নির্বাপক ব্যবস্থা নেই।

নিয়ম না মেনে এ ধরনের গুদাম, কাঠামো গড়ে উঠতে দেখেও কি দমকল বা পুলিশ-প্রশাসন ব্যবস্থা নেয় না? মেলেনি সদুত্তর। এক আধিকারিক জানান, পুরসভা বা দমকল ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় গুদাম তৈরির অনুমতি দিতে পারে না। পুর-কর্তপক্ষের দাবি, বেআইনি ব্যবসার অভিযোগে ব্যবস্থা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement