বিধাননগরে পরপর ডেঙ্গি, বাড়ছে আতঙ্ক 

স্থানীয় সূত্রে খবর, বৈশাখী আবাসনের বাসিন্দা, কলকাতা পুলিশে কর্মরত অনিমেষ ভট্টাচার্য দু’-তিন দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। জ্বর বাড়তে থাকায় এ দিন তাঁকে এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা ৫ নম্বর বরোর চেয়াপার্সন অনিতা মণ্ডলের কাছে তাঁর পরিবার দাবি করেছে, রক্ত পরীক্ষায় অনিমেষবাবুর ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করছে পুর প্রশাসন।  

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৩২
Share:

সল্টলেকের সিকে ব্লকের একটি জমিতে ঝোপজঙ্গল। নিজস্ব চিত্র

ফের মশাবাহিত রোগের হানা বিধাননগর পুর এলাকায়। চলতি মাস পর্যন্ত ৮৪ জনের রক্ত পরীক্ষায় এনএস ১ পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে। এঁদের মধ্যে ছ’জনের আইজিএম পরীক্ষায় ডেঙ্গির উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে। বুধবারও জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে সল্টলেকের বৈশাখী আবাসনের এক বাসিন্দাকে। পুরসভা সূত্রে খবর, তাঁর রক্ত পরীক্ষাতেও এনএস ১ পজিটিভ মিলেছে।

Advertisement

কিছু দিন আগেই খোদ পুরসভার একাংশ আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছিল, লাগাতার কাজ করে গেলেও পুর এলাকার একাংশে দখলদারির সমস্যা, কেন্দ্রীয় প্রকল্প এলাকায় নিয়মিত মশা তাড়ানোর কাজ না হওয়া-সহ বেশ কয়েকটি কারণে বিধাননগরে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়তে পারে। এ বছরেও পরপর কয়েক জনের ডেঙ্গির খবর পেয়ে বাসিন্দাদের আশঙ্কা, অবিলম্বে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু না করলে ফের গত বছরের মতোই অবস্থা তৈরি হবে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, বৈশাখী আবাসনের বাসিন্দা, কলকাতা পুলিশে কর্মরত অনিমেষ ভট্টাচার্য দু’-তিন দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। জ্বর বাড়তে থাকায় এ দিন তাঁকে এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা ৫ নম্বর বরোর চেয়াপার্সন অনিতা মণ্ডলের কাছে তাঁর পরিবার দাবি করেছে, রক্ত পরীক্ষায় অনিমেষবাবুর ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করছে পুর প্রশাসন।

Advertisement

এর আগে দত্তবাদের ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে এক শিশু ও এক কিশোরের ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। ওই এলাকার বাসিন্দা জগন্নাথ পাঁজা জানান, তাঁর ছেলে রজত ফুলবাগানে একটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। ৯ অগস্ট জ্বরে আক্রান্ত হয় সে। তার পরে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে রক্তপরীক্ষায় দেখা যায় এনএস ১ পজিটিভ। প্লেটলেট নেমে গিয়েছিল। এখন বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা চালানো হচ্ছে রজতের। ওই এলাকার আর এক শিশু, প্রথম শ্রেণির ছাত্র জিৎ দাসের জ্বর হয় ১০ অগস্ট। তার মা অপর্ণা দাস জানান, তিন দিন পরে রক্তপরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পড়ে। সারা গায়ে র‌্যাশ বেরিয়েছিল শিশুটির। অনিতাদেবী জানান, সম্প্রতি তাঁর বরো এলাকায় একটি বেসরকারি কেন্দ্র থেকে রক্ত পরীক্ষা করিয়েছিলেন কেষ্টপুর খ্রিস্টান পাড়ার বাসিন্দা রাজকুমার দণ্ডপাট। রিপোর্ট বলছে, তাঁর রক্তেও এনএস ১ পজিটিভ মিলেছে।

পুরসভার দাবি, মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে নিয়মিত কাজ চলছে। তবু কেন নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না মশাবাহিত রোগের প্রকোপ? মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায়ের দাবি, গত বছরের তুলনায় এ বার পরিস্থিতি অনেকটাই ভাল। গত বছর এই সময়ে ওই এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৩৯। সেই জায়গায় এ বার ছ’জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। বাকি ৭৮ জন এনএস ১ পজিটিভ। তাঁর বক্তব্য, এখনই আশঙ্কার কিছু নেই। প্রণয়বাবু বলেন, ‘‘লাগাতার সচেতনতার প্রচার চলছে। যতটা সাড়া মিলছে, তা পর্যাপ্ত নয়। বহু বাড়ির ভিতরে লার্ভা মিলছে। কোথাও আবর্জনা আবার কোথাও ঝোপজঙ্গলও রয়েছে। প্রচারে আরও জোর দেওয়া হচ্ছে।’’

পুরসভা উদ্বেগের কথা স্বীকার না করলেও কপালে চিন্তার ভাঁজ অবশ্য স্পষ্ট। পুরসভার সূত্রই বলছে, গত বছর আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হলেও কয়েকটি এলাকায় সীমাবদ্ধ ছিল। এ বার বিভিন্ন জায়গা থেকে জ্বরের খবর আসছে। পুরসভা সূত্রে খবর, আজ, বৃহস্পতিবার কাউন্সিলরদের সঙ্গে মশাবাহিত রোগ নিয়ে কথা বলবেন পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন