হাসপাতালের গেট বন্ধ কেন? বিতর্ক বৈঠকে

ঘটনাচক্রে, এন আর এসের রোগী-কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান মন্ত্রী নির্মল মাজি। আর ন্যাশনাল মেডিক্যালের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৯ ০১:৩৯
Share:

অপরিসর: শিকল দিয়ে বাঁধা গেটের ফাঁক গলে চলছে যাতায়াত। মঙ্গলবার, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ছবি: রণজিৎ নন্দী

এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক-নিগ্রহের ঘটনার পরে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের মূল প্রবেশপথ আংশিক বন্ধ রেখে যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করা হয়। পুরো বন্ধ দু’নম্বর গেট। যা নিয়ে তৈরি হয়েছিল বিতর্ক। গেট-বিতর্কের সেই আঁচ মঙ্গলবার এসে পড়ল ওই হাসপাতালের রোগী-কল্যাণ সমিতির বৈঠকে। হাসপাতালের গেটে নিরাপত্তার বাড়াবাড়ি নিয়ে ‘অসন্তোষের’ কথা জানালেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহা।

Advertisement

ঘটনাচক্রে, এন আর এসের রোগী-কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান মন্ত্রী নির্মল মাজি। আর ন্যাশনাল মেডিক্যালের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে দু’জনের ‘মধুর’ সম্পর্ক সুবিদিত। যার নিরিখে গেট-বিতর্ককে দেখতে চাইছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একাংশ। অনেকেই মনে করছেন, বিধায়কের এ দিনের মন্তব্যের পিছনে নির্মলের প্রভাব রয়েছে। যদিও স্বর্ণকমলের বক্তব্য, রোগী ও তাঁদের পরিজনেদের অসুবিধা তিনি নিজে দেখেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘এলাকার লোকেরা প্রতিদিন অভিযোগ করবেন, আর নানাবিধ যুক্তি সাজিয়ে সেগুলি খণ্ডন করা হবে, তা চলবে না।’’

উল্লেখ্য, এন আর এসের ওই ঘটনার পরপরই ন্যাশনাল মেডিক্যালের এক নম্বর গেট অংশত খোলা রাখা হয়েছে। গেটের দু’টি পাল্লা শিকল দিয়ে বাঁধা। তার ফাঁক গলেই রক্ষীদের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে প্রবেশ করছেন রোগীর পরিজনেরা। বৈঠক শেষে এ দিন স্বর্ণকমল বলেন, ‘‘এন আর এস ও ন্যাশনাল মেডিক্যাল— দু’টি হাসপাতালই আমার বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। এন আর এসে এত বড় ঘটনা ঘটলেও চেন দিয়ে গেট বাঁধার দরকার হয়নি। তা হলে ন্যাশনালে করতে হল কেন? দু’নম্বর গেট তো পুরো বন্ধ।’’

Advertisement

বিতর্ক প্রসঙ্গে নির্মল বলেন, ‘‘এন আর এস এবং কলকাতা মেডিক্যালের রোগী-কল্যাণ সমিতিতে আছি। ওই দুই জায়গায় গেট খোলা রেখেছি। ন্যাশনাল মেডিক্যালের বিষয়টি ওখানকার দায়িত্বপ্রাপ্তেরাই ভাল বলতে পারবেন।’’

হাসপাতালগুলির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা নোডাল অফিসার, কলকাতা পুলিশের ডিসি (কমব্যাট) নভেন্দ্র সিংহ এ দিনের বৈঠকে ছিলেন। যা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মত স্বাস্থ্য আধিকারিকদের। ন্যাশনাল মেডিক্যালের খবর, এ দিন পুলিশের তরফে বিধায়ককে বলা হয়, নতুন ব্যবস্থায় গোলমালের প্রবণতা কমেছে। যা শুনে স্বর্ণকমলের মন্তব্য, ‘‘তা হলে গেট পুরো বন্ধ রাখলেই হয়।’’

এই পরিস্থিতিতে বিধায়ক, অধ্যক্ষ ও সুপারের সঙ্গে কথা বলে হাসপাতালে যাতায়াত নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা হবে বলে ঠিক হয়েছে।

বিতর্কের জল্পনা উড়িয়ে শান্তনু বলেন, ‘‘আগে হাসপাতালের ভিতরে স্থানীয় লোকজন গল্প করতেন। দেখা গিয়েছে, যে কোনও ঘটনায় তাঁরাই মূলত গোলমাল পাকান। মুখ্যমন্ত্রী হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা দেখভালে নোডাল অফিসার নিয়োগ করেছেন। তিনি সকলের সঙ্গে কথা বলে সুরক্ষার স্বার্থে যা পরামর্শ দেবেন, মেনে চলব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন