নির্মীয়মাণ প্রকল্পগুলি কবে শেষ হবে, তা নিয়ে কোনও আশ্বাসই দিতে পারলেন না খোদ মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজার রাধেশ্যাম। তবে সুড়ঙ্গে ট্রেন আটকে পড়লে যাত্রী-দুর্ভোগ কমাতে নয়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
ইস্ট-ওয়েস্ট ছাড়া মেট্রোর হাতে এখন পাঁচটি বড় প্রকল্প— নোয়াপাড়া-বরাহনগর-দক্ষিণেশ্বর, দক্ষিণেশ্বর-ব্যারাকপুর, নোয়াপাড়া-বারাসত, জোকা-বিবাদী বাগ এবং নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর। পাঁচটিরই লাইন পাতা ও স্টেশন তৈরি শুরু হয়েও জমিজটের জেরে কার্যত থমকে আছে দীর্ঘদিন। বুধবার রাজ্যের একটি বণিকসভা আয়োজিত আলোচনায় সংস্থার সভাপতি অরুণকুমার সরাফের প্রশ্নের উত্তরে রাধেশ্যাম বলেন, ‘‘জমি হাতে না পেলে কাজ হবে কী করে? জমি পাওয়া গেলেও ন্যূনতম আরও তিন বছর চাই।’’ কবে জমি মিলবে, সেই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর রাধেশ্যাম দিতে পারেননি। তবে তিনি জানান, রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা চলছে। বিষয়টি আস্তে আস্তে এগোচ্ছে।
মেট্রো সূত্রের খবর, দমদম-নোয়াপাড়া-বরাহনগর-দক্ষিণেশ্বর-ব্যারাকপুর প্রকল্পে নোয়াপাড়া থেকে বরাহনগর হয়ে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত আগে লাইন পাতা হবে। পরে হবে ব্যারাকপুর। তবে মেট্রো ব্যারাকপুর পর্যন্ত টেনে নিয়ে যেতে প্রধান বাধা বিটি রোডের নীচে পলতা থেকে টালা পর্যন্ত জলের বড় বড় পাইপ। পাশাপাশি বরাহনগর পর্যন্ত লাইন পাতার কাজে আপাতত বাধা ৮৪টি পরিবারের আস্তানা সরানো। নোয়াপাড়া–বারাসত প্রকল্পটিও থমকে গিয়েছে দমদম ক্যান্টনমেন্টের কাছে জমিতে প্রায় ৫০০টি ঘর থাকায়।
জোকা-বিবাদী বাগ প্রকল্পটিও আটকে গিয়েছে জমি সমস্যা ও কেন্দ্রের দু’টি দফতরের (অর্থ ও সামরিক) অনুমতি না মেলায়। আর নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর প্রকল্পটিতে বিমানবন্দরে কোথায় স্টেশন হবে, তা নিয়ে জটিলতা কাটেনি। জেনারেল ম্যানেজার জানান, সম্প্রতি বিমানবন্দর কতৃর্পক্ষ জানিয়ে দিয়েছেন, স্টেশন করতে হবে মাটির নীচে। ফলে রেলওয়ে বিকাশ নিগম লিমিটেড নতুন করে নকশা তৈরির কাজ শুরু করেছে।
তবে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পে দত্তাবাদে জমি সমস্যা প্রায় মিটে গিয়েছে বলে এ দিন জানিয়েছেন রাধেশ্যাম। তিনি বলেন, ‘‘যদি সব কিছু ঠিকঠাক থাকে তবে ২০১৮ সালে জুন মাসে সেক্টর ফাইভ থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত এই মেট্রো চালানো সম্ভব হবে।’’
প্রকল্পগুলির কাজের মতোই বারবার থমকে যাচ্ছে মেট্রোর গতি। জেনারেল ম্যানেজার বলেন, ‘‘এ বার সুড়ঙ্গে মেট্রো আটকে গেলে যাত্রীদের আর সেখানেই আটকে থাকতে হবে না। এর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’ মেট্রো সূত্রে খবর, এখন আট কামরার ট্রেনগুলিতে রয়েছে দু’টি ইউনিট। যদি কখনও মেট্রো সুড়ঙ্গে আটকে পড়ে তখন একসঙ্গে দু’টি ইউনিট বিকল হবে না। নতুন ব্যবস্থায় যে ইউনিটটি খারাপ হবে, সেটিকে রেখে অন্য ইউনিট যাত্রী নিয়ে চলে যাবে সামনের বা পিছনের স্টেশনে।