ধোঁয়াশা রয়েছেই, অপেক্ষা চূড়ান্ত রিপোর্টের

নাগেরবাজারের রফি আহমেদ কিদওয়াই রোডে বৃদ্ধার রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় বেশ কিছু বিভ্রান্তি যে রয়েছে তা অস্বীকার করেননি ব্যারাকপুর সিটি পুলিশের তদন্তকারীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:২৯
Share:

রহস্য: এ ভাবেই উদ্ধার হয় অমিতাদেবীর দেহ (উপরে)। ফাইল চিত্র।

আশি বছরের বৃদ্ধা অমিতা দত্তের দেহ তিনতলার ফ্ল্যাটের কার্নিসের শেড ছুঁলেও কোনও শব্দ শুনতে পাননি ওই ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা।

Advertisement

নাগেরবাজারের রফি আহমেদ কিদওয়াই রোডে বৃদ্ধার রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় বেশ কিছু বিভ্রান্তি যে রয়েছে তা অস্বীকার করেননি ব্যারাকপুর সিটি পুলিশের তদন্তকারীরা। তবে ময়না-তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও মন্তব্যে নারাজ ব্যারাকপুর সিটি পুলিশ।

প্রাথমিক ভাবে অমিতাদেবীর দেহে আত্মহত্যার বেশ কিছু লক্ষ্মণ মিলেছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। যেমন, মুখের ভিতর জিভের অর্ধেক কামড়ে ধরেছিলেন ওই বৃদ্ধা। দেহের পোশাকে মূত্রত্যাগের চিহ্ন রয়েছে। গলায় কালশিটের দাগও বেশ গভীর। তা সত্ত্বেও সব দিক দেখে নিতে চান তদন্তকারীরা।

Advertisement

শনিবার সকালে বৃদ্ধার দেহটি তিনতলার কার্নিসে হেলান দেওয়া অবস্থায় প্রথম দেখেন এক প্রাতর্ভ্রমণকারী। মাথাটা বাঁদিকে হেলানো ছিল। শাড়ির ফাঁস চারতলার বারান্দার জানলার সঙ্গে বাঁধা
ছিল। স্থানীয়দের বক্তব্য ছিল, আশি বছরের এক বৃদ্ধার পক্ষে বারান্দার রেলিং টপকে ঝাঁপ দেওয়া সম্ভব? যদি সম্ভবও হয়, প্রশ্ন উঠেছিল, ঝাঁপ দিলে তিনতলার বাসিন্দারা কোনও শব্দ পেয়েছিলেন কি না? ওই ফ্ল্যাটের বাসিন্দা চার্টার্ড ফিনান্সিয়াল অ্যানালিস্ট গৌরব জৈন জানান, পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য শনিবার তিনি ভোর সাড়ে চারটে পর্যন্ত জেগেছিলেন। গৌরবের কথায়, ‘‘কানে হেডফোন লাগিয়ে পড়ছিলাম। কোনও শব্দ পাইনি। সকালে মা-বাবাকেও বলেছি সে কথা।’’ কানে হেডফোন থাকলে আওয়াজ শুনবেনই বা কী ভাবে? গৌরবের দাবি, ‘‘হেডফোন লাগানো থাকলেও রাস্তায় কেউ কথা বললে বা গাড়ি গেলে আওয়াজ পাই। শেডে কেউ ঝাঁপ দিলে আওয়াজ পাব না!’’ গৌরবের মা জানান, রাতে আস্তে আওয়াজও স্পষ্ট শোনা যায়। এমনকী জল পড়লেও শোনা যায়। আরও একটা প্রশ্ন বাসিন্দাদের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে, কার্নিসের শেডে মৃতার পায়ের ছাপ এত স্পষ্ট কেন?

তদন্তকারীদের মতে, বাসিন্দাদের সন্দিগ্ধ হওয়ার মধ্যে অন্যায় নেই। অস্বাভাবিক মৃত্যুতে এমন অনেক কিছুই ঘটে, যা দিনের শেষে অস্বাভাবিক। আপাতত ওই ফ্ল্যাটে থাকছেন না বৃদ্ধার ছেলে। শনিবার রাতে পুলিশের উপস্থিতিতে জামাকাপড় নিয়ে সপরিবারে অন্যত্র চলে যান তাঁরা। আত্মহত্যা হলে মৃত্যুর যে পদ্ধতি বেছে নিয়েছিলেন বৃদ্ধা, তা দেখে স্তম্ভিত তদন্তকারীরা। এ প্রসঙ্গে মনোবিদ নীলাঞ্জনা সান্যাল বলেন, ‘‘হয়তো অবসাদের কারণে তীব্র একাকিত্বে ভুগছিলেন। এ সব ক্ষেত্রে তাঁদের মনে হয়, বাঁচার কোনও অর্থ নেই। মৃত্যু নিশ্চিত করতেই সম্ভবত ওই পদ্ধতি
বেছে নিয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন